শুক্রবার দিল্লির ইন্দরলোক এলাকার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা গিয়েছে, রাস্তায় বসে নামাজ পড়ছেন এমন বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে লাথি মারছে দিল্লি পুলিশের এক অফিসার।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে সিপিআই(এম)। সিপিআই(এম) দিল্লি রাজ্য কমিটির তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে,‘‘অবিলম্বে দোষী পুলিশ অফিসারের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এই অবৈধ, অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে কোনও বিলম্ব করা চলবে না।’’
সিপিআই(এম)’র অভিযোগ, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের আগে ইচ্ছাকৃত ভাবে এই কান্ড ঘটানো হয়েছে, যাতে নির্বাচনে মেরুকরণ করতে সুবিধা হয়। পার্টির তরফে দিল্লির সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করা হচ্ছে, প্ররোচনায় পা না দিতে।’’
কংগ্রেসের তরফেও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলা হয়েছে, ‘‘দিল্লি পুলিশের স্লোগান হল শান্তি, সেবা এবং ন্যায়। আজ এই তিনটি গুণ একসঙ্গে প্রদর্শন করে দেখিয়েছে দিল্লি পুলিশ।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, দিল্লির ইন্দরলোকের একটি মসজিদে নামাজ পড়তে এসেছিলেন স্থানীয় মানুষ। মসজিদে জায়গা না কুলোনোয় উপস্থিত জনতার একটা অংশ রাস্তায় কার্পেট পেতে নামাজ পড়ার তোড়জোড় শুরু করেন। ভিডিও অনুযায়ী, দুই পুলিশকর্মী প্রথম থেকে তাঁদের আপত্তিকর কথা এবং নামাজ পড়তে বাধা দিতে শুরু করেন। সেই প্ররোচনায় পা না দিয়ে একটা অংশ নামাজ পড়তে শুরু করলে তাঁদের পিছন থেকে লাথি মারতে শুরু করেন দিল্লি পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর মনোজ কুমার তোমর।
এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছে দিল্লি পুলিশ। দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার এমকে মীনা জানিয়েছেন, মনোজ তোমরকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বিরোধীদের দাবি, গত ১০ বছর ধরে প্রশাসনের সমস্ত স্তরে হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শের চাষ করেছে বিজেপি। সরাসরি না বললেও, ঘুরপথে সাংবিধানিক চেতনাকে নষ্ট করা হচ্ছে। প্রশাসনকে ব্যবহার করা হচ্ছে হিন্দুত্ববাদী মানসিকতাকে সমাজে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য। তার ফসল হিসেবেই দিল্লি, মুম্বই সহ বিভিন্ন বিজেপি শাসিত কিংবা বিজেপি নিয়ন্ত্রিত জায়গার পুলিশকে বিভিন্ন হিন্দু উৎসবে উর্দি পরে সামিল হতে দেখা গিয়েছে। রাস্তা বন্ধ করে ধর্মীয় শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছে। এবং সেই একই পুলিশ বাহিনী অতি সক্রিয়তার সঙ্গে মুসলমান মানুষের উৎসবে কিংবা শোভাযাত্রায় বাধা দিয়েছে নিয়মের দোহাই দিয়ে।
শুক্রবারের ঘটনা সেই মানসিকতারই প্রতিফলন।
Comments :0