JAINAGAR DALUAKHAKI RELIEF

দলুয়াখাকিতে ত্রাণ বণ্টনেও বাধা, আশঙ্কায় দিন কাটছে গ্রামবাসীদের

রাজ্য

রবিবার মহিলা আন্দোলনের কর্মীরা দলুয়াখাকি ত্রাণ দিতে গেলে জয়নগরের গুদামের হাট মোড়ে পুলিশের বাধা।

 জয়নগরে তৃণমূল বাহিনীর  সন্ত্রাস ও আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত, ভস্মীভূত জয়নগরের সেই দলুয়াখাকি গ্রামে ‘শান্তিরক্ষা’র নামে কার্যত বিরোধীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির পুলিশ। এমনকী ত্রাণসামগ্রী নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাইলেও পুলিশ বাধা দিচ্ছে। গ্রামে ঢুকতে দিচ্ছে না। জয়নগর থানার পুলিশের ন্যক্কারজনক ভূমিকা নিয়ে ঘটনার দিন থেকেই প্রশ্ন উঠছে। সিপিআই(এম) সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যেমন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, তেমনই দলুয়াখাকি গ্রামের বাসিন্দারাও একই প্রশ্ন তুলেছেন। 
ক্ষতিগ্রস্ত দলুয়াখাকি গ্রামে ত্রাণ নিয়ে যেতে রবিাবার ফের বাধা দেয় পুলিশ। এদিন সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটির এক প্রতিনিধিদল ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে গ্রামে ঢুকতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। দলুয়াখাকি গ্রাম থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে গুদামের হাট মোড়ে মহিলা আন্দোলনের কর্মীদের পথ আটকায় পুলিশ। গ্রামে ঢুকতে বাধা দেওয়ায় পুলিশের সঙ্গে তাঁদের বচসা, ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। জেলা মহিলা আন্দোলনের ওই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সায়ন ব্যানার্জি ছাড়াও বামপন্থী কর্মীরা। মহিলা সমিতির জেলা সভানেত্রী মিলি চক্রবর্তী, সম্পাদিকা মোনালিসা সিনহা, সুস্মিতা মণ্ডল, মৈত্রেয়ী রায়ের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল ত্রাণসামগ্রী নিয়ে জয়নগরে আসে। গুদামের হাট মোড়ে পুলিশ তাঁদের বাধা দেওয়ায় তাঁরা ত্রাণসামগ্রী নিয়ে দক্ষিণ বারাসতে ফিরে যান। পরে দলুয়াখাকি গ্রামের  ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মহিলারা দক্ষিণ বারাসতে গেলে সেখানে তাঁদের হাতে ত্রাণসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। 
সিপিআই(এম) জয়নগর-১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক আবদুল ওদুদ মোল্লা পুলিশের বাধা দেওয়ার ঘটনা সম্পর্কে রবিবার সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার দিন থেকে গ্রামে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ। সিপিআই(এম) নেতা সুজন চক্রবর্তী, শমীক লাহিড়ী, রাহুল ঘোষ, কান্তি গাঙ্গুলি সহ পার্টির নেতৃবৃন্দ ত্রাণসামগ্রী সহ ঘরছাড়া মহিলা, শিশুদের নিয়ে গ্রামে ঢুকতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। মহিলা সমিতির প্রতিনিধিদলকেও এদিন বাধা দিয়েছে পুলিশ। তিনি এদিন আরও বলেন, জয়নগরে তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পিটিয়ে হত্যা, বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট, আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার তদন্ত ও অপরাধীদের গ্রেপ্তারের প্রশ্নে পুলিশ এখনও নিশ্চুপ। ঘটনার পর ৬ দিন পেরলেও এই দুই অপরাধের ঘটনায় এক জনকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি। শাসক দলের নেতাদের নির্দেশ মতো পুলিশ কাজ করছে। 
এদিকে ঘটনার পর ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও কেন এখন পর্যন্ত পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ও দলুয়াখাকি গ্রামে বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হলো না, তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন জয়নগর থানার পুলিশ আধিকারিকরা। এদিন গুদামের হাট মোড়ে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে গ্রামে ঢুকতে পুলিশ বাধা দেওয়ায় কেন বাধা দেওয়া হচ্ছে জিজ্ঞাসা করা হলে উপস্থিত পুলিশ আধিকারিকরা বলেছেন, গ্রামে শান্তি বজায় রাখতেই বহিরাগতদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। গ্রামের লোক ছাড়া বহিরাগত কেউ ঢুকবেন না। আইনজীবী সায়ন ব্যানার্জি পুলিশের এই ভূমিকায় পালটা প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেছেন, ১৪৪ নম্বর ধারা জারি নেই। তাহলে কেন পথ আটকাচ্ছেন? পুলিশ দলদাসে পরিণত হয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment