প্রতীম দে ও অরিজিৎ মণ্ডল
‘‘আমরা যারা লড়ছি। আর প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। বিনীত গোয়ালের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন হয়েছে। নতুন কমিশনার এসে কলকাতা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছেন। কেন কলকাতায় কী হয়েছে যে এই ধারা চালু করতে হলো, কী ঘটনা ঘটেছে? তা’হলে কি পুলিশ এই আন্দোলনকে ভয় পাচ্ছে? এই আন্দোলন চললে কি পুলিশ মন্ত্রীর চেয়ার ভেঙে যাবে?’’
বিচারের দাবিতে আন্দোলন জারি রাখার আহ্বানে ধর্মতলায় একথা বলেছেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি। এদিন এসএফআই, ডিওয়াইএফআই, সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির ডাকে বিচারের দাবিতে জনস্রোত নেমেছে ধর্মতলায়।
যুব নেতাদের গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে মীনাক্ষী বলেন, ‘‘কলতানকে জেলে পুরেছিল, আজ ও ঝান্ডা নিয়ে মিছিল করেছে। চিরঞ্জিৎকেও ছাড়তে হবে। আটকে রাখা যাবে না।’’ তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলছেন উৎসবে ফিরতে, কেন ওনার জমিদারিতে থাকি আমরা? সেটিং হয়েছে বলে গরু চোর জামিন পেয়েছেন। কেউ বলছে বাঘ বেরিয়েছে। আমাদের বাঘ স্যার আশুতোষ। বলছে রাতে মহিলারা বেরোবে না,কেন? বিচারের দাবিতে লড়াই চলছে, শেষ দেখে ছাড়তে হবে।’’
মীনাক্ষী বলেন, ‘‘ কিছু পুলিশ আছে যারা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি গিয়ে খিচুড়ি পরিবেশ করেন। কিন্তু অনেক পুলিশ আছেন যাঁরা আইন মেনে কাজ করতে চান। আমরা কথা দিচ্ছি, মাথা উঁচু করে কাজ করুন থানার ভিতর।
টালা থানার ওসি’র মাথায় কে ছিল? উনি কী নিজের ইচ্ছেয় কাজ করেছেন? সবাইকে বলতে চাই ওই সব অর্ডারে কাজ করবেন না। মানুষ মেনে নেবে না।’’
মীনাক্ষী বলেন, ‘‘বাংলার মায়েরা কষ্টে আছে, আতঙ্কে আছে। বাংলার মেয়েরা ভালো নেই। পায়ের নিচের মাটি শক্ত করতে এই লড়াই করতে হবে। বেকার যুবরা কাজ পাচ্ছেন না। তাঁদের বাইরে যেতে হচ্ছে কাজের জন্য। বাইরে যেতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছেন। সেই লাশ আনতে যেতে হয়েছে বাবা মায়েদের। ’’ আর জি কর হাসপাতাল প্রসঙ্গ বলেন, ‘‘লাশ নিয়েও নোংরামো হয়েছে, বেআইনি কাজ হচ্ছে। ওষুধেও জালিয়াতি হচ্ছে। স্বাস্থ্য পরিষেবার ওপর আস্থা সরকার নষ্ট করে দিয়েছে।’’
আর জি কর কাণ্ডে দায়ী চিকিৎসকদের বদলি করেছিল সরকার। কিন্তু চিকিৎসকরাই ঢুকতে বাধা দিয়েছেন তাদের। এই প্রসঙ্গে মীনাক্ষী বলেন,
‘‘কাকদ্বীপ হাসপাতাল, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কেলেজের চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মীদেরর লাল সেলাম জানাই। দুর্নীতিগ্রস্তদের ঢুকতে না দেওয়ার জন্য।’’ তিনি বলেন, ‘‘নির্যাতিতার মা বাবা-কে সেই আলমারিতে ডেথ সার্টিফিকেট রাখতে হয়েছে খেখানে ওই চিকিৎসক ছাত্রীর ডাক্তারির সার্টিফিকেটগুলো আছে। এর থেকে বড় যন্ত্রণা র কী হতে পারে।’’
মীনাক্ষী বলেন, ‘‘ সমাজে অন্যায়ের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন বিদ্যাসাগর, রামমোহন। আমাদের দরদ দিয়ে লড়তে হবে। পানিহাটির মায়ের দিকে তাকিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। উৎসব শুরু হতে চলেছে। আমাদের আন্দোলনও চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের অনুরোধ, টাকা জমিয়ে নিজেদের উদ্যোগে প্রতিবাদী একটি ফ্লেক্স লাগান রাস্তায়। মায়েরা যখন নেমেছেন আমাদের ভয় নেই।’’
এসএফআই’র সর্বভারতীয় নেত্রী দীপ্সিতা ধর বলেন, ‘‘মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছে তারা মুখ্যমন্ত্রীর মত উৎসবে ফিরতে চান না। এই রাজ্যের ইতিহাস বিদ্যাসাগরের ইতিহাস। তারা শিখিয়ে ছেন সত্যি বলতে রাস্তায় থাকতে হয়। সংখ্যা শেষ কথা নয়।
যেই পুলিশ প্রমাণ লোপাট করলো, যারা দোষীদের আড়াল করে তাদের থেকে কেন অনুমতি নেব। এই রাস্তা মানুষের টাকায় তৈরি। যদি মানুষ মনে করে যে পুলিশ নিরাপত্তা দিতে পারবে না তাহলে তারা রাস্তার দখল নেবে।
যেই ডাক্তাররা রাস্তায় ছিলেন তারা মন্ত্রী হওয়ার জন্য নয়। মানুষের নিরাপত্তার জন্য তারা অবস্থান করেছেন। আগামীদিনে রূপসা, কলতানদের সামনে রেখে আমরা লড়াইয়ে থাকব।
বাংলার মেয়েরা মমতাকে আর চায় না।’’
MINAKSHI MUKHERJEE DHARMATALA
সেই মায়ের দিকে তাকিয়ে চলবে লড়াই, বললেন মীনাক্ষী
×
Comments :0