২০২২ ফুটবল শেষের মুখে। বাকি কেবল একটি মাত্র ম্যাচ। তার আগে একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক ফুটবল বিশ্বকাপের কিছু তথ্য এবং পরিসংখ্যানের দিকে।
১৯৬৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজিত হয়েছিল ইংল্যান্ডে এবং তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিকে ৪-২ গোলে হারিয়ে প্রথম ও শেষ বার বিশ্বকাপ জেতে ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপ ফাইনালে সেবার হ্যাটট্রিক করেন ইংল্যান্ডের জিওফ হার্স্ট এবং এখনো পর্যন্ত তিনিই একমাত্র ফুটবলার যিনি ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেছে।
১৯৩০ সালে প্রথম ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজিত হয় উরুগুয়েতে। সেবারে মোট ১৩ টি দল বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছিল। ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলে হারিয়ে সেই বিশ্বকাপ জিতে নেয় উরুগুয়ে। ১৯৩৮ সালের পরে ফের ১৯৫০ সালে বিশ্বকাপ আয়োজিত হয়। মাঝের ১২ বছর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য বিশ্বকাপের আয়োজন করা যায়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাঁধানোর অপরাধে ১৯৫০'র বিশ্বকাপ থেকে জার্মানিকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ১৯৫০ এর বিশ্বকাপও উরুগুয়ে জিতেছিল ব্রাজিলকে পরাজিত করে।
সবথেকে বেশিবার ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার নজির রয়েছে জার্মানির। ট্রফি জেতার নিরিখে শীর্ষে থাকা ব্রাজিলের ঠিক পরেই রয়েছে জার্মানি। ব্রাজিল ৫ বার এবং জার্মানি ৪ বার বিশ্বকাপ ট্রফি জিতেছে। এছাড়াও বিশ্বকাপে সবথেকে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডও রয়েছে জার্মানির। ফুটবল বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলদাতা মিরোস্লাভ ক্লোজে(১৬) জার্মানির জার্সি পরেই খেলেছেন।
১৯৩০ থেকে এখনো পর্যন্ত সবথেকে বেশি গোল করার রেকর্ডটিও জার্মানদের। এখনও অবধি ২২১টি গোল করেছেন ম্যানুয়েল ন্যয়াররা।
ফুটবল বিশ্বকাপের সব থেকে সফল দল গুলোর মধ্যে একটি হলো ব্রাজিল। ১৯৫৮ থেকে ২০০২ এর মধ্যে ব্রাজিল মোট পাঁচবার বিশ্বকাপ জিতেছে। তারমধ্যে পেলের অধিনায়কত্বে ব্রাজিল জিতেছে ৫টি বিশ্বকাপ। এই নজির এখনও অবধি অন্য কোনও দেশ কিংবা খেলোয়াড় ছুঁতে পারেনি।
১৯৫৮ সালে যখন ব্রাজিল প্রথম বার বিশ্বকাপ জেতে, সেই বছরই ফ্রান্সের জাস্ট ফন্টেইন মোট ১৩ টি গোল করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিলেন। এই রেকর্ডটিও এখনও কেউ ভাঙতে পারেনি। স্বাভাবিক ভাবেই সেইবার গোল্ডেন বুট জিতেছিলেন ফন্টেইন।
সাফল্যের নিরিখে ব্রাজিল এবং জার্মানির সঙ্গে এক ব্র্যাকেটেই থাকার কথা ইতালির। জার্মানির মতো ইতালিও মোট ৪টি বিশ্বকাপ জিতেছে। ১৯৩৪ সালে
দ্বিতীয় ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজিত হয় ইতালিতে, এবং ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জেতে ইতালি। সেই শুরু। বিশ্ব ফুটবলে ইতালির পরিচয় রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলার জন্য। সেই পরিচয় অক্ষুণ্ণ রেখে সব থেকে বেশি, ২১টি ম্যাচ ড্র করার রেকর্ড রয়েছে ইতালির।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে সাড়া জাগানো দলগুলির মধ্যে একটি হলো আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনা মোট দুবার বিশ্বকাপ জিতেছে, ১৯৭৮ এবং ১৯৮৬ সালে। ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনা প্রথম বিশ্বকাপ জেতে নেদারল্যান্ডকে ৩-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে। ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারায়। ২টি গোলই করেন মারাদোনা। ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে এই দুটি গোলের মতো চর্চিত গোল আর আছে কিনা সন্দেহ।
প্রথম গোলটি মারাদোনার কুখ্যাত 'হ্যান্ড অফ গড'। কিন্তু সেই হাত-গোলের গ্লানি পরের গোলটি করেই মুছে দিয়েছিলেন ফুটবলের রাজপুত্র। প্রায় গোটা ইংরেজ দলকে পায়ের জাদুতে কাটিয়ে একা গোল করে যান মারাদোনা। বিংশ শতকের শ্রেষ্ঠ গোল!
ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনার হয়ে মোট ২১ টি ম্যাচ খেলেছিলেন। সেই রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে তাঁর উত্তরসূরী মেসির হাত ধরে। এবং এখনো পর্যন্ত আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ ২৫ টি ম্যাচ খেলার রেকর্ডটি রয়েছে লিওনেল মেসির। সবমিলিয়ে বিশ্বকাপে ১১টি গোল করে ফেলেছেন মেসি। গোল সংখ্যার নিরিখে ছাপিয়ে গিয়েছেন মারাদোনাকেও। রবিবার বিশ্বকাপ ফাইনাল জিতলে কাপ জেতার নিরিখেও গুরুকে ছুঁয়ে ফেলবেন শিষ্য।
Comments :0