বিশ্বনাথ সিংহ: রায়গঞ্জ
গত কয়েকদিনের তীব্র গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত অবস্থা উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের। তবে বুধবার স্বস্তির বৃষ্টি হল শিলিগুড়িতে। ক্ষণেকের বৃষ্টিতে স্বস্তি শিলিগুড়িতে। শিলিগুড়িতে বৃষ্টি নামলেও তীব্র দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত দুই উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে। তাপপ্রবাহে অতিষ্ট সাধারণ মানুষ। প্রায় সব স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা কমে গেছে। অসুস্থ হয়ে পড়ছে বহু খুদে। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিদ্যালয়গুলিও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গরমের দাপটে শ্রেণিকক্ষে একের পর এক ছাত্রছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ায় শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। বেশিরভাগ শিক্ষকদের দাবি এই মুহূর্তে বন্ধ রাখা হোক স্কুল, কলেজ। আবহাওয়া দপ্তরের ঝোড়ো হওয়ার পূর্বাভাস থাকলেও তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ মানুষ। এ বছরের সব থেকে ভয়াবহ মরসুমের দিন ছিল মঙ্গলবার। সবচেয়ে বেশি গরম দিন ছিল। রবিবার রাত থেকে মঙ্গলবার সারাদিন গুমোট গরম অনুভূত হয় দুই দিনাজপুর জেলা জুড়েই।
মঙ্গলবার দিনাজপুর জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিপর্যস্ত জনজীবন। দুই দিনাজপুর জেলার হাঁসফাঁস অবস্থা। উত্তর দিনাজপুর জেলার তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দক্ষিণ দিনাজপুরে পারদ ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেও গরম প্রায় ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস অনুভূত হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরেও প্রচণ্ড গরম ছিল। বুধবারেও অসহ্য গরমে স্কুলের মধ্যেই এক শিক্ষিকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্কুলের টিনের চালায় অসহ্য গরমে অসুস্থ বোধ করেন। এর মধ্যেই বারে বারে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ভুগছেন সাধারণ মানুষ।
রাস্তায় দিনমজুর ছাড়া খুব একটা সাধারণ মানুষকে পথে দেখা যায়নি। রাস্তাঘাট ছিল বেশ ফাঁকা। জরুরি কাজ ছাড়া বাইরে বেরুচ্ছেন না তেমন কেন। প্রতিদিনকার কাজ সেরে চাকরিজীবীরাও দ্রুত বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। হাঁসফাঁস গরমে দেদার বিকোচ্ছে আখের রস, বিক্রি বেড়েছে তালশাঁসের। প্রচণ্ড গরমে কখন বৃষ্টি হয় সেই আশায় আকাশের দিকে সকলের চোখ।
এদিকে তীব্র দাবদাহের ফলে স্কুলে ছাত্র ছাত্রীদের উপস্থিতি ছিল হাতে গোনা। সুভাষগঞ্জ, শীতগ্রাম, মোহনবাটি স্কুলে প্রায় ৪০ শতাংশের কম পড়ূয়াদের উপস্থিতি। এর মধ্যে ৪/৫ জন খুদে দাবদাহে অসুস্থ হয়েছে বলে জানা গেছে। মোহনবাটি হাই স্কুলের এক শিক্ষক জানান, এইভাবে যদি আরও দু-তিন আবহাওয়া চলতে থাকে তবে শিশুদের ওপর প্রভাব পড়বে। স্কুলের ভেতর ছাত্রছাত্রীদের ঘন ঘন জল তৃষ্ণায় ধুঁকছে পড়ুয়ারা। যখন গ্রীষ্মকালীন স্কুল ছুটি দেওয়া হলো সেই সময় বৃষ্টি হয়েছে। এখন এই সময়ের গরমে ছুটির প্রয়োজন বলে মনে করছেন অভিভাবকরাও। না হলে মর্নিং স্কুল হোক।
প্রশাসনের কর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন সকলেই। স্কুলে অবকাশ ছুটি সংক্রান্ত বিষয় বিকাশভবন নয়, জেলার শিক্ষা দপ্তর থেকে নিয়ন্ত্রণ হওয়া উচিত। অবিভাবকের আবেদন পরিস্থিতির কথা বিচার করে গরমের ছুটি দেওয়া হোক।
Comments :0