শীতের দাপট উত্তরবঙ্গে, ঘন কুয়াশায় ঢেকেছে পাহাড় থেকে সমতল, বরফ পড়ার প্রবল সম্ভাবনা দার্জিলিং, কালিম্পং-সহ উঁচু পার্বত্য এলাকাগুলিতে। বুধবার কুয়াশায় ভরা ছিল শহর। দেখা মেলেনি সূর্যের। কলকাতা-সহ আশেপাশের জেলাগুলি কুয়াশার আস্তরণে মোড়া ছিল। ছিল শীতের উপস্থিতি। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, ধাপে ধাপে পারদ পতনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বরের পরেই জাঁকিয়ে শীতের সম্ভবনা রয়েছে। লাগাতার পারদ পতন ঘটবে। শীতের আমেজ উপভোগ করতে শুরু করবে রাজ্যের মানুষ। এই বছর মনোরম হবে শীতের মরশুম। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বৃহস্পতিবার থেকে রাতের তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। শীতের দাপট থাকবে উত্তরবঙ্গেও। তুষারপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে পাহাড়ে। কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে। ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পারদ নামতে পারে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছে শীত। ঘন কুয়াশার দাপটে কমেছে দৃশ্যমানতা। শহর থেকে গ্রাম, সর্বত্র একই পরিস্থিতি।
পাহাড়ে আবহাওয়ার যেভাবে দ্রুতগতিতে পরিবর্তন ঘটছে তাতে বরফ পড়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে শীতের দাপট ক্রমশই বাড়ছে। পাহাড়ের বহু জায়গা ঘন কুয়াশায় ঢেকেছে। শৈলশহর বরফের চাদরে মুড়তে পারে সেইরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘন্টায় এই শীতের দাপট আরো বাড়বে বলেই আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে। এতোদিন সেভাবে শীত অনুভূত না হলেও ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই তাপমাত্রার পারদ ক্রমশ নামতেই ভোরের দিকের কুয়াশাও জমাট বাঁধতে শুরু করে। আর আচমকাই উত্তরে ফিরে আসে শীত।
আর এই সময়ে শীতে কাঁপছে শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি। বুধবারও কিছুক্ষন সময়ের জন্য রোদ উঠলেও তা স্থায়ী হয়নি। সমগ্র দার্জিলিঙ পার্বত্য অঞ্চল, পাহাড় লাগোয়া সমতলের দার্জিলিঙ জেলার শিলিগুড়ির শহরাঞ্চল ও গ্রামাঞ্চলের মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া ও খড়িবাড়িতে এদিন ঠান্ডার পাশাপাশি কুয়াশার দাপট অব্যাহত ছিলো। শহরের ঘন জনবসতিপূর্ন এলাকা তো বটেই, আশপাশ অপেক্ষাকৃত কম জনবসতিপূর্ন এলাকাগুলিতে কুয়াশার পরিমান ছিলো যেন আরো বেশী। এছাড়াও কালিম্পঙ সহ উত্তরের অন্য জেলাগুলিতেও শীতের আমেজ ছিলো। সর্বত্রই হিমেল উত্তরের বাতাস বইছিলো। ঘন কুয়াশা আর শীতের দাপটে সমগ্র দার্জিলিঙ ও কালিম্পঙ জেলার উঁচু পার্বত্য এলাকাগুলিতে তুষারপাতের ব্যাপক সম্ভবনা রয়েছে। ইতোমধ্যেই উত্তর সিকিমের লাচেন, লাচুঙ সহ বিভিন্ন উঁচু পাহাড়ী এলাকায় তুষারপাত ঘটেছে। সিকিমের রাস্তাঘাট সাদা পুরু বরফের চাদরে মুড়ে গেছে।
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আর কয়েকদিনের অপেক্ষা। চলতি সপ্তাহেই তাপমাত্রার পারদ আরো চার থেকে পাঁচ ডিগ্রি নীচে নামার আশঙ্কা থাকলেও বৃষ্টির কোন সম্ভাবনা নেই। ফলে শৈত প্রবাহ বাড়তেই শৈলশহরে একদিকে যেমন তুষারপাতের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, পাশাপাশি হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় কাঁপবে উত্তরের জেলাগুলিও। সামনেই বড়দিনের উৎসব। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও ২৫ডিসেম্বর দার্জিলিঙ পাহাড়ের পর্যটনস্থলগুলিতে অসংখ্য পর্যটকদের ঢল নামবে বলে আশাবাদী পর্যটন ব্যবসায়ীরা। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের সিকিমের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক গোপীনাথ রাহা জানান, এখনই নয়, কুয়াশার দাপট আরো দুই একদিন অব্যাহত থাকবে। বুধবার বিকেলের পর থেকে ঝঞ্ঝার প্রকোপ কমে আসবে। তবে বৃহস্পতিবার থেকে রাতের দিকের তাপমাত্রা আরো কিছুটা কমে আসবে। তাপমাত্রার পতন হতেই আরো জাঁকিয়ে পড়বে ঠান্ডা।
তাই বড়দিনের আগে সবার চোখ দার্জিলিঙের দিকে। কবে তুষারে ঢাকা পড়বে শৈলশহর। সেই দৃশ্য উপভোগ করতে দেশ বিদেশের পাশাপাশি সমতলের শিলিগুড়িবাসীরাও পা বাড়িয়ে রয়েছেন।
North Bengal Weather
শীতের দাপট উত্তরবঙ্গে, তুষারে ঢাকা পড়ার সম্ভবনা শৈলশহরে
×
Comments :0