সোমবার রিপন স্ট্রিটের ক্রান্তি প্রেসে ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভায় এই মন্তব্য করেছেন সাংবাদিক পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা। তিনি মনে করিয়েছেন যে গুজরাট গণহত্যায় নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকাও কোনও নতুন খবর নয়। দেশের সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন সময়েই তা প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর মত, নিষেধাজ্ঞা জারি করায় বিবিসি’র তথ্যচিত্র ঘিরে আগ্রহ তৈরি হয়েছে বেশি।
কেন্দ্রীয় সরকারের মদতে আদানির চমকপ্রদ উত্থানের নানা তথ্য দিয়েছেন তিনি। এখন ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার পর এই বেসরকারি গোষ্ঠীই শস্য গুদাম পরিকাঠামোর সবচেয়ে বড় মালিক। আবার মুম্বাইয়ে ধারাভি বস্তি পুনর্গঠন প্রকল্পের বরাতও গিয়েছে এই গোষ্ঠীর হাতে। ডিজিটাল তথ্য ভাণ্ডার পরিকাঠামো ব্যবসাতেও এই আদানি।
গুহঠাকুরতা বলেছেন যে তিনি একা নন, এ দেশের একাধিক সাংবাদিক আদানির বিভিন্ন বেনিয়মের তথ্য প্রকাশ করেছে। উল্লেখ্য, রাজনৈতিক প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে ধান্দার ধনতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলায় আদানি গোষ্ঠীর রোষের মুখে পড়েছেন সাংবাদিকরা। কারও কারও বিরুদ্ধে একশো কোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের করে বসে আছে এই গোষ্ঠী।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে উই দ্য পিপল অফ ইন্ডিয়া, অল ইন্ডিয়া ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন ফর জাস্টিস, পিপলস্ ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিস এবং পশ্চিমবঙ্গ গণসংস্কৃতি পরিষদ। বিনায়ক সেনও বক্তব্য রেখেছেন এই আলোচনা সভায়। বিবিসি’র তথ্যচিত্রের দু’টি অংশও দেখানো হয়েছে। ছিলেন আরএসপি’র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্যও।
গুজরাট গণহত্যার সময় কেন্দ্রে বিজেপি’র জোটসঙ্গী ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। গণহত্যা পর্বের পরও জোট ছাড়েননি দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি। এ রাজ্যে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই তথ্যচিত্র দেখানোর সময় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে এসএফআই। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেও বাধা তৈরি করেছে পুলিশ।
হিন্ডেনবার্গ তদন্ত প্রসঙ্গে গুহঠাকুরতা বলেন, এই নিয়ে হইচই শুরু হওয়ায় সেবি, আরবিআই তদন্ত করছে। কিন্তু তাঁরা তদন্তে কী খুঁজে বের করবে, কবে বের করবে- এর উত্তর আমার কাছে নেই।
হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট এবং আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দাম কমা নিয়ে তিনি বলেন, যাঁকে নিয়ে কথা হচ্ছে তিনি একমাস আগেও এশিয়ার ধনীতম ব্যক্তি ছিলেন, কিন্তু আজকে নেই। সেজন্য এটা স্বাভাবিক যে তাঁর শেয়ারের দাম বাড়া কিংবা কমার বিষয়ে সাধারণ মানুষ জানতে চাইবে। তিনি কুড়ি হাজার কোটির একটি পাবলিক অফার শেয়ার বাজারে ছেড়েও পিছিয়ে এসেছেন।
গুহঠাকুরতা বলেন, হিন্ডেনবার্গ সাইপ্রাস, মরিশাস, বৃটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড সহ অন্যান্য ‘ট্যাক্স হেভেন’র সুনির্দিষ্ট তথ্য তাঁরা জোগাড় করেছে। এই দ্বীপগুলিতে গিয়ে বিশ্বের ৭টি বৃহৎ বহুজাতিক সংস্থার ট্যাক্স ফাঁকির পূর্ণাঙ্গ ছবি তারা দিয়েছে। এর মধ্যে আদানিরও বিশদ তথ্য রয়েছে।
Comments :0