তপন বিশ্বাস-ইসলামপুর
অবশেষে ট্যাবকাণ্ডের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড তথা তৃণমূল শিক্ষা সেলের চোপড়া ব্লক সভাপতি মমতাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করল ইসলামপুর জেলা পুলিশ। ট্যাবকান্ডের অন্যতম প্রধান ষড়যন্ত্রী হিসেবে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা পুলিশের নজরে ছিলেন ওই তৃণমূল নেতা তথা চোপড়ার মাঝিয়ালী হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মমতাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে। পুলিশ প্রায় তিন মাস থেকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়ায় তৃণমূলের এই নেতাকে। এতদিন পুলিশ তার টিকি পর্যন্ত খুঁজে পায় নি। ইসলামপুর জেলা পুলিশ সুপার জবি থমাস বলেন, মমতাজুল ইসলামকে আমরা দীর্ঘদিন থেকে খুজছিলাম। বুধবার চোপড়া থানার পুলিশ ও ইসলামপুর সাইবার ক্রাইম সেল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। তাকে ট্যাব দুর্নীতি কাণ্ডে বিভিন্ন জেলার পুলিশ ও সাইবার ক্রাইম সেলের ওয়ান্টেড ছিল। আমরা তাকে ট্যাব দুর্নীতি কাণ্ডে অন্যতম মাস্টারমাইন্ড বলে সন্দেহ করছি। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে তোলা হবে।
অভিযোগ, শাসক দল ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মাঝিয়ালী হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মমতাজুল ইসলাম ওরফে জুয়েল গত নভেম্বর মাস থেকে পুলিশের খাতায় ফেরার।পুলিশ তাঁর খোঁজে নভেম্বর মাসেই এলাকায় হানা দিয়েছিল। ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে মমতাজুলের কাঁচাকালীর ভাড়াবাড়িতে আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় অভিযান চালায় কলকাতার গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা। তারপরেও মমতাজুলের কোনও খোঁজ তাঁরা পাননি। এছাড়া ওই গোয়েন্দা বাহিনী চোপড়ার মাঝিয়ালী হাই স্কুলের অভিযান চালান এবং মমতাজুলের ওই সময়ের অবস্থান জানতে ব্যর্থ হয়। মমতাজুল ১৮ নভেম্বর থেকে ১৫ দিনের মেডিকেল লিভ নেন।১৫ দিনের ছুটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও মমতাজুল কাজে যোগ দেননি ।তিনি ফের ১৫ দিনের মেডিকেল লিভ বাড়িয়ে ডিসেম্বর মাস অবধি ছুটির আবেদন করেন।
জানা গিয়েছে, ট্যাব দুর্নীতিতে চোপড়ার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক তথা তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধানের ছেলে দিবাকর দাস গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই মমতাজুল স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেন। ট্যাব কাণ্ডে চোপড়া ও ইসলামপুর থেকে প্রায় ৩০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের অধিকাংশই অনলাইন পরিষেবা দেওয়ার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। ওই ব্যবসার আড়ালেই স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট 'জোগাড়' করা হত বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
তবে, এখনও পুলিশের কাছে 'অধরা' এই কেলেঙ্কারির আরও এক পান্ডা তথা চোপড়ার লক্ষ্মীপুর হাই স্কুলের করণিক বাবুল হুসেন ওরফে বাবর।
এ বিষয়ে সিপিআইএম উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক আনোয়ারুল হক বলেন, চোপড়া হল দুর্নীতির হটস্পট। শুধু ট্যাব কান্ড নয় মাইনোরিটি স্কলারশিপ থেকে শুরু করে লক্ষ্মীর ভান্ডার সহ সব ধরনের সরকারি স্কিমে দুর্নীতি হচ্ছে চোপড়ায়। মমতাজুল ট্যাব কাণ্ডের মাথা বলে পরিচিত। তার সাথে শাসকদলের অনেক কেষ্টবিষ্টুর সাথে ওঠাবসা রয়েছে । তাদের ছত্রছায়ায় থেকেই চোপড়ায় তার দুর্নীতির সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন। এইসব মানুষের কঠিনতম সাজা হওয়া দরকার।
Tab Scam
ট্যাব দুর্নীতি মাস্টারমাইন্ড গ্রেপ্তার
×
Comments :0