সোমবার, ১৬ জুন, থেকে পর্যটকদের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ডুয়ার্সের সমস্ত জাতীয় উদ্যান ও সংরক্ষিত বনাঞ্চল। জলপাইগুড়ি জেলার অন্তর্গত গরুমারা, নেওরাভ্যালি, চাপরামারি, জলদাপাড়া, বক্সা সহ অন্যান্য বনাঞ্চলও থাকছে এই তালিকায়। আগামী ১৬ জুন থেকে তিন মাসের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ডুয়ার্সের জঙ্গল।এই তিন মাস জঙ্গলে প্রবেশ করতে পারবেন না পর্যটকরা।
ফলে জঙ্গল বন্ধ হওয়ার আগে ডুয়ার্সের জঙ্গল সংলগ্ন পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মত। বন্ধ হওয়ার আগের সারা সপ্তাহ, এমনকি শেষ রবিবারের বিকেল পর্যন্ত, পর্যটকদের ঢল নামতে দেখা গেলো জলপাইগুড়ির গোরুমারা জাতীয় উদ্যান সহ অন্যান্য জঙ্গলে। 
দীর্ঘ তিনমাস জঙ্গল বন্ধ থাকার ফলে পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকে। তেমনি এই তিন মাস জঙ্গল সাফারি, হাতি সাফারি সব বন্ধ রাখা হয়। মুলত জঙ্গলের পুনর্জীবন ও বন্য প্রাণীদের প্রজননের জন্য জঙ্গল পর্যটকদের জন্য তিন মাস বন্ধ থাকে বলে জানান গোরুমারা অভয়ারণ্যের ডিএফও দ্বিজপ্রতীম সেন।
প্রতি বছর ১৬ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়কালকে বনদপ্তর বন্যপ্রাণীদের প্রজননকাল হিসেবে বিবেচনা করে। বর্ষার সময় জঙ্গলে গাছপালা ঘন হয়ে যায়, রাস্তাঘাটও হয়ে পড়ে বিপজ্জনক। এছাড়াও, বন্যপ্রাণীদের নিরাপত্তা ও নিরবচ্ছিন্ন জীবনচক্র বজায় রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বর্ষার জলে এই সময় জঙ্গলে বেড়ে ওঠে বিভিন্ন প্রজাতির অর্কিড। নতুন ফল ফুল গাছ পালা সতেজ থাকার কারণে এবং জঙ্গলের খাল বিল নদী নালা ভর্তি থাকার কারণে এই সময় বন্যপ্রাণীরা জঙ্গলেই থাকতে পছন্দ করে। সচরাচর তাদের জঙ্গলের বাইরে দেখা মেলে না।
তবে জলপাইগুড়ি বন বিভাগ জঙ্গলের বাইরে থাকা বিভিন্ন ওয়াচ টাওয়ার এবং বনবাংলো খোলা রাখার জন্য রাজ্য বন দপ্তরের কাছে  প্রস্তাব পাঠিয়েছে। কালিকাপুর, ধূপঝোরা, পানঝোরা, হর্নবিল ক্যাম্প ও চুকচুকি ওয়াচ টাওয়ার গুলি খোলা থাকবে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে মেথলা ওয়াচ টাওয়ার খোলা রাখার প্রস্তাব মানা হয়নি বলে জানিয়েছেন লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দিব্যেন্দু দেব । 
বন দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ফের খুলে দেওয়া হবে সব জাতীয় উদ্যান ও সংরক্ষিত বনাঞ্চল। তখন থেকেই পর্যটকরা আবার উপভোগ করতে পারবেন ডুয়ার্সের জঙ্গলের সৌন্দর্য ও বন্যপ্রাণীর সমাগম।