প্রথম স্বামী বছর পাঁচেক আগে মারা যায়। দ্বিতীয় বিয়ে করে সংসার পেতে ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর বিধানসভা এলাকার উত্তর হলদিয়া গ্রামের মামনি গিরি। কিন্তু সংসার করার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল বছর পাঁচেকের শিশু। তাই দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে মিলে নিজের সন্তানকেই খুনের চেষ্টা করলেন মা। চলতে থাকে অত্যাচার। মঙ্গলবার মামনি গিরি ও দ্বীতীয় বিয়ে করা স্বামী সুখদেব মন্ডল ছয় বছরের শিশুকে ঘরের মধ্যে মুখে কাপড় জড়িয়ে নৃশংস ভাবে মারধর করে হাত পা প্রায় ভেঙে দেয়। মাথায় আঘাত করে বলে অভিযোগ। প্রচন্ড মারে বাচ্চাটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এই অবস্থায় শিশুটি মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে রাতের অন্ধকারে নিজের বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে বাচ্চাটিকে একটি মাঠে ঝোপের কাছে ফেলে দিয়ে আসে। ভোরের আলো ফুটতেই শিশুটি জ্ঞান ফিরে পায়। গায়ে পিঁপড়া জুড়ে যায়। প্রচন্ড তৃষ্ণার্ত টালমাটাল অবস্থায় পাশে দ্বীপ পাত্র’র নামে একজনের বাড়িতে গিয়ে জল চাইতে গৃহস্থ মহিলারা শিশুকে দেখে জল এবং খেতে দেয়। তার কাছ থেকে পরিচয় জানতে চাইলে তাদের কাছে ঘটনাটি খুলে বলে। প্রায় প্রতিদিনই তার সৎ বাবা এবং মা তাকে মারধর করে বলে অভিযোগও করে। খোঁজখবর নিয়ে তারা সুখদেব মন্ডলের বাড়ি পৌছায় ছেলের কোথায় জিজ্ঞেস করলে তার মা মামনি এবং শুকদেব বলে ছেলে কোথায় গেছে খুঁজে পাচ্ছি না। তারপরে তাকে ডেকে এনে ছেলেকে দেখানোর পরে। দুজনে স্বীকার করে তাদের ছেলে। এই অবস্থায় গ্রামের লোকজন দম্পতি যুগলকে মারধর করে এবং শিশুটিকে স্থানীয় রামনগর বড়রাং কুয়া হাসপাতালে ভর্তি করে। রামনগর থানার পুলিশ অভিযুক্ত দুজনকে আটক করে কাঁথি মহকুমা আদালতে হাজির করে। জানা গেছে কয়েক বছর আগে মামনির প্রথম স্বামী তথা শিশুটির বাবা কার্তিক গিরি মারা যায়। কয়েক মাস আগে মামনি হলদিয়ায় শুকদেব মন্ডলের সঙ্গে প্রেমে আবদ্ধ হয়ে বিয়ে করে। ছ বছরের শিশুটি একটি অঙ্গনওয়াড়ি শিক্ষা কেন্দ্রে পড়াশোনা করত। এদিন সংবাদমাধ্যমের সামনে মা-বাবার অত্যাচারের কথা বলে শিশুটি।
Beaten Child In Purba Medinipur
শিশুকে খুনের চেষ্টায় গ্রেপ্তার মা ও স্বামী
×
Comments :0