প্রেরণা তেভাগা, সংগ্রামের সাফল্য সংহত করার স্লোগান কৃষক সম্মেলনে
প্রসূন ভট্টাচার্য
‘সংগ্রাম, সংহতকরণ, বিকল্পের পথে এগনো’- এই স্লোগান তুলে সলগঠিত হচ্ছে সারা ভারত কৃষক সভার ৩৫ তম সর্বভারতীয় সম্মেলন। কেরালার ত্রিশূরের এই সম্মেলন ঘিরে প্রচারে প্রেরণা হয়েছে তেভাগার লড়াই। তেভাগার লড়াইকে সেলাম জানিয়ে প্রকাশিত হয়েছে পোস্টার।
মঙ্গলবারই শুরু হয়েছে সর্বভারতীয় সম্মেলন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কৃষক আন্দোলনের সংগঠকরা যোগ দিয়েছেন সম্মেলনে। তারই প্রস্তুতিতে সাত দিন ধরে চলেছে দুই জাঠা, দুই ‘শহীদ জ্যোতি যাত্রা’। একটি এসেছে তামিলনাডুর কঈঝভেনমানি গ্রাম থেকে। কৃষকসভার প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি এন শঙ্করাইয়া সেই জাঠার উদ্বোধক ছিলেন। এই গ্রামেই হত্যা করা হয়েছিল ৪৪ জন খেতমজুরকে। ন্যায্য মজুরির দাবিতে আন্দোলনরত খেতমজুরদের ওপর আক্রমণ নামিয়ে এনেছিল উচ্চবর্ণের জমিদাররা।
দ্বিতীয় ‘শহীদ জ্যোতি যাত্রা’ শুরু হয়েছিল তেলেঙ্গানার কাড়াভেন্ডি থেকে। এই গ্রামেই থাকতেন ডোড্ডি রামাইয়া। তেলেঙ্গানার সশস্ত্র কৃষক বিদ্রোহের প্রথম শহীদ। পরাধীন ভারতে শুরু হয়েছিল সংগ্রাম। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও তা চলেছে।
বাংলার তেভাগার লড়াই, উৎপন্ন ফসলের ভাগের জন্য সংগ্রামও শুরু হয়েছিল পরাধীন ভারতেই। কাকদ্বীপ থেকে তেলেঙ্গানায় শহীদের রক্তে ভিজে উঠেছিল মাটি। কিন্তু অধিকারের দাবিতে সামন্তবাদ আর সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে চেতনায় আলোড়িত হয়েছিল নতুন ভারত। সেই প্রেরণা আঁকড়ে থাকার ঘোষণা করেছে কৃষকসভা।
কৃষকনেতারা জানিয়েছেন শহীদ জ্যোতি যাত্রার দীর্ঘ পথ অনন্য অভিজ্ঞতা জুগিয়েছে। দুই জাঠায় নেতৃত্ব দিয়েছেন সারা ভারত কৃষকসভার দুই নেতা পি কৃষ্ণপ্রসাদ এবং বিজু কৃষ্ণান।
আবার হিমাচল প্রদেশের আপেল কৃষকদের যন্ত্রণা নিয়েও সম্মেলনের প্রস্তুতিতে প্রকাশ হয়েছে নতুন বই- ‘সেও হামার জীবন’। প্যাকেজিংয়ের ওপর জিএসটি’র মারাত্মক বৃদ্ধি, বেআইনি আমদানি, সার, বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়ায় সঙ্কটের বিশ্লেষণ রয়েছে বইয়ে। কৃষকনেতারা জানিয়েছে সঙ্কটের মূলে পৌঁছাতে বিশ্লেষণ করেছেন অর্থনীতিবিদরাও।
স্মরণ করা হয়েছে দিল্লির বছরভর কৃষক আন্দোলনের ৭০০ শহীদকেও। শুরু হয়েছে নতুন লড়াইয়ের প্রস্তুতি।
Comments :0