Brigade Campaign

ব্রিগেড সমাবেশে শামিল হবে বড় অংশের পরিবহণ শ্রমিকরা

রাজ্য জেলা ব্রিগেড

ব্রিগেড সমাবেশকে কেন্দ্র করে জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে চলছে প্রচার। শনিবার জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন বুথ ধরে ব্রিগেড সমাবেশের প্রচার, পদযাত্রা সংগঠিত হয়। প্রায় ৩ শতাধিক শ্রমজীবি মানুষ উপস্থিত ছিলেন। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। পদযাত্রা শেষে আদর্শপল্লী বাজারে সভা হয়েছে। ছিলেন খেতমজুর ইউনিয়নের নেতৃত্ব কৌশিক ভট্টাচার্য্য, রতন রায়, মোক্তাল হোসেন, ক্ষীরমোহন রায়, জগদীশ রায়, কৃষক নেতা খরেন রায় সহ নেতৃত্ববৃন্দ। ব্রিগেডের আহ্বান জনিয়ে চলছে বৈঠকি সভা, পদযাত্রা, পথসভা, অর্থ সংগ্রহ। 
ব্রিগেড সমাবেশ ও আগামী ২০ মে সাধারণ ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে এদিন ইসলামপুর মুক্ত মঞ্চের সামনে নির্মাণ শ্রমিকদের নিয়ে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পথসভায় সিআইটিইউ উত্তর দিনাজপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক স্বপন গুহ নিয়োগী বলেন, বর্তমান সময়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নীতির কারণে শ্রমিক তাঁর ন্যায্যমজুরি পাচ্ছেন না, কৃষক ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না, বস্তিবাসী মানুষের জমির অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে এবং বেকারত্ব বাড়ছে মূল্যবৃদ্ধি। ঠিক এরকম অবস্থায় শ্রমিক কৃষক বস্তিবাসী ও খেত মজুর অংশের মানুষকে নিয়ে আগামী ২০ এপ্রিল ব্রিগেড সমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে কলকাতায় এবং ২০ মে সাধারণ ধর্মঘট পালিত হবে সারা দেশ জুড়ে। এই ব্রিগেড সমাবেশ ও সাধারণ ধর্মকে সফল করবার জন্যই এদিনের এই পথসভা।
ব্রিগেড সমাবেশের প্রচার চলছে জেলা জুড়ে। শনিবার গঙ্গারামপুরে সিআইটিইউ অনুমোদিত অল বেঙ্গল মিউনিসিপালিটি ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সদস্যদের সঙ্গে পেশাগত সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানেই ব্রিগেডের মুখ্য উদ্দেশ্য সম্বলিত লিফলেট তাদের মধ্যে বিলি করে প্রচার কবেন সিআইটিইউ নেতৃত্ব। ছিলেন শ্রমিক নেতা পার্থ সরকার, বস্তি উন্নয়ন সমিতির নেতৃত্ব শংকর শর্মা, সৌমেন সুত্রধর প্রমুখ। সারা ভারত ক্ষেত মজুর ইউনিয়নের পক্ষ থেকে  কুশমন্ডিতে পথ সভায় বক্তব্য রাখেন দারুল ইসলাম সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।  বুনিয়াদপুরের বাজারে ব্রিগেডের প্রচার সহ কাগজের পোষ্টার মারে শ্রমজীবীরা। 
২০ এপ্রিল খেটে খাওয়া মানুষের ব্রিগেড অভিযান সফল করা এবং আগামী ২০ মে দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে শনিবার পুরুলিয়ার ভোজুডি কোল ওয়াশারির সামনে সভা সংঘটিত হয়। সিআইটিইউ অনুমোদিত ভোজুডি কোল ওয়াসারী এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন ও ভোজুডি কোল ওয়াসারি ঠিকাদার শ্রমিক ইউনিয়নের সভায় বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বক্তব্য রাখেন সিআইটিইউ জেলা সভাপতি নিখিল মুখার্জি। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ভোজুডি কোল ওয়াশারী এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপল্লব পাসোয়ান, সিআইটি ইউ সম্পাদক মন্ডলী সদস্য অশোক মাহাত। সভা পরিচালনা করেন স্বপন মুখার্জি।
বন্ধ পেপার মিল শ্রমিকরা কারখানা খোলার দাবি নিয়ে ২০ তারিখ ব্রিগেড যাবে। পনেরো মাস আগে সাসপেনশন অব ওয়ার্ক নোটিশ টাঙিয়ে পেপার মিল বন্ধ করে দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ। কাজ হারিয়েছেন তিনশো শ্রমিক। কর্মরত শ্রমিকরা বেকার হয়ে যান। লালঝাণ্ডা নিয়ে কারখানা খোলার দাবি নিয়ে লড়াই করছে সিআইটিইউ'র পেপার মিল মজদুর ইউনিয়ন। সিআইটিইউ পশ্চিম বর্ধমান জেলা সাধারণ সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরী পেপারমিল খোলার জোরালো দাবি তুলেছেন। কারখানা বন্ধের পর ঘোলা জলে মাছ ধরতে আসরে নেমে বহু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তৃণমূল ও বিজেপির বিধায়ক ও নেতারা। প্রতিশ্রুতির ফাঁকা আওয়াজে ক্ষোভ বেড়েছে শ্রমিক সহ স্থানীয় মানুষের। এলাকায় তাদের ধর্মের নামে বিভাজন করতে চাইছে। দাম বাড়ছে  নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের। তৃণমূল-বিজেপি সবাই চুপ। এদিন বন্ধ পেপার মিল গেটের সামনে সভা করে সিআইটিইউ। বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা সুপ্রিয় রায়, হেমন্ত প্রভাকর, রুনু দত্ত। সেখান থেকে মিছিল করে বল্লভপুর পুলিশ ফাঁড়ি পর্যন্ত পৌঁছায়। সন্তোষ বাউরি, উমেশ দুষাদ, রঞ্জিত কর্মকাররা জানান, শ্রমিকরা জোট বাঁধছেন ব্রিগেড সমাবেশে শামিল হতে।  কলকাতার পথে চলতে চলতে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিজেদের যন্ত্রণার কথার সঙ্গে তার জন্য দায়ী বিজেপি ও তৃণমূলের নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবেন। তাদের স্বপ্ন আবার কারখানার চিমনিতে ধোঁয়া উড়বে। সাইরেনের শব্দে কারখানার শ্রমিকদের আনাগোনায় প্রাণচঞ্চল্য ফিরে পাবে বল্লভপুর। খনি শ্রমিক মহল্লায় ব্রিগেড সমাবেশ সফল করার দাবি নিয়ে প্রচার তুঙ্গে। কয়লাখনি অধ্যুষিত চাপুই, রতিবাটি এলাকায় সভা হয়েছে।

ব্রিগেড হবে শ্রমজীবীদের। আর তাতে যুক্ত হবে বড় অংশের পরিবহন শ্রমিকরা। গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলায় বাস, লরি,পণ্য পরিবহণ গাড়ি, টোটো সহ অন্যান্য গাড়ির চালক, কন্ডাক্টার, খালাসী মিলিয়ে শ্রমিকের সংখ্যা ১ লক্ষর বেশি। ‘‘পৌঁছাও সব শ্রমিকের কাছে’’ রাজ্য কমিটির এই স্লোগানকে সামনে রেখে আগামী ২০ এপ্রিল শ্রমজীবী জনতার ব্রিগেডের বার্তা পৌঁছে দিতে বর্ধমান মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’র উদ্যোগে পূর্ব বর্ধমান জেলার আলিশা, সগড়াই, জামালপুর, মেমারী, কালনা, কাটোয়া, নবাবহাট, গলসী, বুদবুদ, গুসকরা, ভাতার সহ অন্যান্য মিলিয়ে ১৭ টি বাসস্ট্যান্ড, ২২টি টোটো, ট্রেকার, লরি স্ট্যান্ডে গত দুদিন প্রচার জাঠা অতিক্রম করে। আমরা ভালো নেই, ইনকাম একদম কমে গেছে, ডিজেলের দাম লাগাতার বাড়ছে - তার সঙ্গে বাড়ছে পুলিশি অত্যাচার - বলেন গুসকরার বাস শ্রমিক সঞ্জয় মন্ডল। কাগজপত্র দেখার নাম করে নানান ভাবে হেনস্তা, টাকা তোলে পুলিশ বলতে বলতে রেগে ফেটে পড়েন মাল বাহক গাড়ির চালক সামাদ সেখ।
সগড়াইতে, দাইহাটে জাঠা ঢুকলে চন্দনের ফোটা, গোলাপ, মালা পরিয়ে স্থায়ী জাঠা যাত্রীদের সংবর্ধিত করেন স্থানীয় পরিবহণ শ্রমিকেরা। লিফলেট দাও, কি একটা আইন এনেছে মোদী, মমতা বলছে এক্সিডেন্ট করলেই ১০ বছরের জেল। কেনো আমরা কি ইচ্ছে করে এক্সিডেন্ট করি। সব আমাদের দোষ, আমাদের পরিবারের কি হবে, ছেলে মেয়ের পড়াশুনা, ওষুধের খরচ এটা তো পরে এখন খাবার জিনিসের দাম যা বাড়ছে এতে হয়না। বাসের লাইন ছেড়ে দিয়ে বাইরের রাজ্যে কাজে চলে গেছে অনেকে, আরও অনেক যেতে চাইছে, নিজেদের দুঃখের কথা বলছিলেন গলসীর বাস শ্রমিক অজয় দাস, বিনু ,পলাশরা। তাই জাঠার দাবি - ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৬ ধরার ( ১/২ উপধারা) বাতিল করতে হবে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমাতে হবে। পরিবহণ শ্রমিকের উপর পুলিশের জুলুম চলবে না। কালা কানুন মোটর ভেহিকল আইন ( সংশোধীন - ২০১৯) বাতিল করতে হবে।

Comments :0

Login to leave a comment