সারা দেশে বিজেপি’র বিরুদ্ধে করছে বামপন্থীরা। এ রাজ্যে তৃণমূল এবং বিজেপি, দুই শক্তির বিরুদ্ধেই লড়ছে বামপন্থীরা। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন যে বিজেপি’র সঙ্গে লড়াইয়ের জায়গায় ভোট লুট থেকে গণনা লুটের মতো গোলমাল তৃণমূল করেনি। করেছে বামপন্থীদের শক্তির এলাকায়।
শনিবার রানিগঞ্জে সিপিআই(এম) পশ্চিম বর্ধমান জেলা কার্যালয়ে শহীদ স্মৃতি ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এই মর্মে সরব হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দিল্লিতে মোদী আর রাজ্যে দিদি, দু’জনেই লুটের রাজনীতি করছেন। বামপন্থীরা লড়ছে দুই লুট বন্ধ করতে।’’
তৃণমূল-বিজেপি যোগসাজশের নমুনা ফের দিয়েছেন সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘এখানে কে কবে বিজেপি কে কবে তৃণমূল বোঝা যাচ্ছে না। মুকুল রায় দিল্লিতে বিজেপি’র কাছে গিয়েছিলেন। আবার এখানে মমতার মিটিংয়ে চলে এসেছেন। এরকম অনেক লুকিয়ে থাকা লোকজন আছে যারা বিজেপির ঝান্ডা নিয়ে তৃণমূল করে আবার তৃণমূলের ঝান্ডা নিয়ে বিজেপি করে।’’
পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘ভোটের আগে থেকে ব্যালট ছাপ মারা হচ্ছে, ভোটের গণনার আগে থেকে ব্যালট বাক্স বদল করা শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে বামপন্থীদের ব্যালট লুট হয়েছে। যেখানে বিজেপির লড়েছে সেখানে তৃণমূল কোনও ঝামেলাই করেনি। এটাই তো আপসের লড়াই। এটা বুঝতে কোনও অসুবিধা হয়নি।’’
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘গোটা রাজ্যজুড়ে বিজেপি কি প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে এই ভোটলুটে জড়িত তৃণমূলের গুন্ডাদের বিরুদ্ধে? করেছে বামফ্রন্ট, আইএসএফ এবং কংগ্রেস। জান দিয়েছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই লড়েছে। বিজেপি এবং তৃণমূল মিলে লুটের রাজনীতি জারি রাখতে তৎপর। এরা একে অপরকে সাহায্য করতে নাটক করছে।’’
সেলিম বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের আগেই ‘চোর ধরো-জেল ভরো’ কর্মসূচি নিয়ে পথে নেমেছে সিপিআই(এম)। পঞ্চায়েত ভোট পর্ব থেকে আইন আদালতের লড়াইয়ে বা মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে, বেকারের কাজের দাবির লড়াইয়ে বামপন্থীরা লড়েছে। সেই লড়াই বিজেপি এবং তৃণমূল উভয়ের বিরুদ্ধে।’’
সেলিম মণিপুর প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘গত মে মাসে মহিলাদের নগ্ন করে গণধর্ষণ করা হল। কেন্দ্রীয় সরকার চুপ। প্রধানমন্ত্রীকে মুখ খুলতে দাবি উঠেছে দীর্ঘদিন ধরে। দেড়শোর বেশি মানুষ মারা গেছেন। ত্রিশ পঁয়ত্রিশটি গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র জমি ও প্রাকৃতিক সম্পদ লুটের জন্য আদিবাসী ও তপশিলিদের একে অন্যের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। লড়াই লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি’র আইটি সেল এসব ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।’’
সেলিম বলেন, দলবেঁধে হিংসাত্মক কাজে জনতাকে শামিল করায় আরএসএস-বিজেপি’র রাজনীতি। মণিপুরের মতো ঘটনা পশ্চিমবঙ্গেও ঘটানোর চেষ্টা চলছে। তৃণমূল সরকার থাকার ফলে এ রাজ্যেও এমন পরিবেশ তৈরি হয়েছে। মেদিনীপুর, উত্তর দিনাজপুর, ধূপগুড়িতে দল বেঁধে হিংসা হয়েছে।’’
Comments :0