TMC MURDER HIGH COURT

কিশোর খুনে রেহাই তৃণমূল নেতাকে, সিআইডি তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

জেলা

কিশোর খুনে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়ার পিছনে চক্রান্ত থাকতে পারে। বীরভূম জেলা পুলিশের তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করে রাজ্য সিআইডিকে নতুন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়ে এমনই সন্দেহ জানালো কলকাতা হাইকোর্ট। 
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর। বীরভূমের রাজনগর থানায় সিপিআই(এম) সমর্থক জব্বর খান অভিযোগ জানান যে তাঁর ৯ বছরের ছেলেকে অপহরণ করে খুন করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা  শাহিদুল খান এবং তার দলবল। পরবর্তীকালে কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার হলে ৮ ডিসেম্বর শাহিদুল এবং তার দলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন জব্বর। 
অভিযোগ, জেলা পুলিশ চার্জশিট থেকে শাহিদুলের নাম বাদ দিয়ে তাকে মামলা থেকে নিষ্কৃতি দেয়। এর বিরুদ্ধে  কলকাতা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন জব্বর। ১ এপ্রিল বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে শুনানি হয়। বিচারপতি নির্দেশে বলেন, বীরভূম জেলা পুলিশের তদন্তে একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে। তাই জব্বর খানের আবেদন অনুযায়ী মামলার নতুন করে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। মামলার তদন্তভার সিআইডি'কে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। 
বাবা সিপিআই(এম) সমর্থক। তাঁর কিশোর পুত্রের খুনে অভিযুক্ত তৃণমূলের নেতা বলে তাঁকে যেন রেহাই দেওয়াই যায়। তৃণমূল সরকারের মেয়াদে গ্রাম বাংলার গণতন্ত্রের এই ছবি ধরা পড়েছে মামলায়। 
জব্বর খানের ক্ষোভ, ২০১৪ সালের ৮ ডিসেম্বর তিনি থানায় শাহিদুল খানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। কারণ কিশোরটিকে শেষবারের মতো শাহিদুলের সঙ্গে দেখা যায়। প্রথমবার পুলিশ এফআইআর নিলেও, পরবর্তীকালে 'ফার্দার স্টেটমেন্টের' নামে সিআরপিসি'র ১৬১ নম্বর ধারা ব্যবহার করে জব্বর খানের বয়ানে বদল করে। শাহিদুল খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ লঘু করে দেয়। এরপরে মামলা থেকেও শাহিদুল খানকে মুক্তি দেয় পুলিশ। 
এর প্রতিবাদ জানিয়ে দুইবার নিম্ন আদালতে পিটিশন দাখিল করেন জব্বর খান। ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট ম্যাজিস্ট্রেট সিআরপিসি'র ১৬৪ নম্বর ধারায় জব্বর খানের বয়ান রেকর্ডের নির্দেশ দিলেও সেটার পালন করা হয়নি।
পর্যবেক্ষণে বিচারপতি সেনগুপ্ত বলেছেন, মামলার একাধিক স্তরে এমন সব কাণ্ড ঘটানো হয়েছে, যা দেখে সন্দেহ হওয়ার অবকাশ রয়েছে যে প্রধান অভিযুক্তকে বাচানোর একটা চেষ্টা হয়েছে। তাই এই মামলার আরও তদন্তের এবং অভিযোগকারীর বয়ান রেকর্ডের নির্দেশ দিচ্ছি। 
তিনি তিন মাসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সিআইডি'র এডিজি'কে।

Comments :0

Login to leave a comment