কমিউনিস্টরা সর্বদা আগ্রাসী দক্ষিণপন্থাকে রুখতে সক্রিয় হয়েছে। সেই ভূমিকাই পালন করছে সিপিআই(এম)। মণিপুর থেকে হরিয়ানা দেখাচ্ছে যে দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করার দিকে এগচ্ছে আরএসএস-বিজেপি। তা রুথে যৌথ লড়াই গড়ে তুলছে বামপন্থীরা।
সোমবার সংবাদমাধ্যমে সিপিআই(এম) এবং বামপন্থীদের অবস্থান এভাবেই ব্যাখ্যা করেছেন পার্টির রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এক প্রশ্নে তাঁর মন্তব্য, ‘‘মণিপুর নিয়ে তিন মাস ধরে চুপ বিজেপি। আর এ রাজ্যে সিপিআই(এম) কী করল তা নিয়ে মাথাব্যথা দেখাচ্ছে। মিডিয়া বিজেপি’র কথায় নাচছে।’’
পাটনা এবং বেঙ্গালুরুতে বিজেপি বিরোধী দলগুলির এক মঞ্চে আসার প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করেছেন সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘ফ্যাসিবাদ কায়েমে উদ্যত উগ্র দক্ষিণপন্থাকে রুখতে হবে। বামপন্থীরা সেই ভূমিকা নিচ্ছে। তার জন্যই যৌথ সংগ্রাম, যৌথ প্রচার এবং যৌথ আন্দোলনে অংশ নিচ্ছে। অতীতেও তা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থীরা তৃণমূল এবং বিজেপি দুই শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও পাটনা এবং বেঙ্গালুরুতে বিরোধী বৈঠকে যোগ দিয়েছে তৃণমূল।
সেলিমের ব্যাখ্যা, ‘‘দেশে বিজেপি যা করছে রাজ্যে তা করছে তৃণমূল। তা সে বুলডোজার রাজনীতি হোক বা মন্দির-মসজিদের নামে ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতিতে ফয়দা তোলা। হিন্দু-মুসলিম বিভাজন বা তপশিলি-রাজবংশী-আদিবাসী বিভাজনের রাজনীতিতেও দু’দলের মিল।’’
সেলিম মনে করিয়েছেন যে অধিকার কেড়ে নেওয়া, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার ভূমিকাতেও বিজেপি এবং তৃণমূলের মিল স্পষ্ট। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ-বিডিও-এসডি-তৃণমূলের গুণ্ডা-মস্তান সব এক হয়ে মানুষের ভোটের অধিকার, নির্বাচনে দাঁড়ানোর অধিকার কেড়েছে। নবান্ন আর রাজভবন এক হয়ে গণতন্ত্র কেড়েছে। গট-আপ হয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে এখন বোঝাপড়ার জন্য দরকষাকষি করছে বিজেপি আর তৃণমূল।’’
ভারতীয় রাজনীতিতে বিজেপি’র উত্থান, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরিপ্রেক্ষিতে বামপন্থীদের অবস্থান প্রসঙ্গ মনে করিয়েছেন সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘দক্ষিণপন্থাকে রোধ করতে একজোটে লড়াইয়ের কথা বামপন্থীরা বলেছিল অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের সময়ও। তৃণমূল কংগ্রেস সেই সরকারে আসীন ছিল। সরকার গড়তে সমর্থন দরকার বলেই বিজেপি-আরএসএস কংগ্রেসকে ভাঙিয়ে তৃণমূল তৈরি করেছিল।’’
সেলিম মনে করিয়েছেন আর আগে ১৯৯৬ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল সিপিআই(এম), দক্ষিণপন্থাকে রুখতে হবে বলে। সেই অবস্থান নিয়েই চলছে পার্টি। দক্ষিণপন্থাকে রুখতে হবে মেহনতীর জন্যই, সিপিআই(এম)’র ২৩ তম পার্টি কংগ্রেসেই এই মর্মে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
সোমবার সেলিমের সঙ্গে ছিলেন সিপিআই(এম) পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ।
Comments :0