‘জল-জঙ্গল-জমিন’ স্লোগান কেবল মুখেই থাকবে। নাকি আদিবাসী কল্যাণে কাজের কাজ কিছু করা হবে?’ বস্তারে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী জনসভার ঠিক মুখেই এই প্রশ্ন ছুঁড়ছে কংগ্রেস।
বিজেপি’র জনসভার মুখে কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশের প্রশ্ন, ‘‘ছত্তিশগড়ের ফুসফুস বলা হয় হাসদেও অরণ্যকে। সেই অরণ্যে কয়লা খাদান খোলার ছাড়পত্র মিলেছে বিজেপি’র ঘনিষ্ঠ বন্ধু আদানি গোষ্ঠীর। আদিবাসী জনতা নয়, বিজেপি’র লক্ষ্য ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বন্ধুদের কল্যাণ নিশ্চিত করা।’’
হাসদেও অরণ্যের বিশাল জমিতে আদানি গোষ্ঠীকে কয়লা খাদানের অনুমতি দেওয়ায় প্রতিবাদ মাথা তুলেছে। বনাঞ্চল এবং সংলগ্ন এলাকার আদিবাসী মানুষের জীবিকায় ক্ষতিকর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা গভীর। আদিবাসী নন, বনাঞ্চল সংলগ্ন এলাকার এমন অংশও প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছেন।
রমেশ বলেছেন, ‘‘হাসদেও অরণ্য তার বৈচিত্রময় জৈবসম্পদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বপূর্ণ আদিবাসী মানুষের জন্যও। কংগ্রেসের সরকার এই বনভূমিতে ৪০টি কয়লা খাদান খোলার প্রস্তাব খারিজ করেছিল। না হলে অরণ্য ধ্বংস হয়ে যেত। এখন এখানেই খাদান দিয়ে দেওয়া হলো আদানি গোষ্ঠীকে। বিজেপি ফের রাজ্যের সরকারে আসীন হওয়ার পর থেকে আদানির মালিকানায় থাকা পারসা কয়লা খাদানের কাজ শুরু হয়েছে। অথচ আদিবাসী অধিকারের বহু অংশ, সংগঠন বিক্ষোভ দেখাচ্ছে।’’
গত বছরের ডিসেম্বরে ছত্তিশগড়ে কংগ্রেস হেরে যায়। বিজেপি’র আসন বাড়ার সম্ভাবনা থাকলেও প্রায় কোনও স্তর থেকে কংগ্রেস সরকারের বিদায়ের সম্ভাবনা জানানো হয়নি। ফলাফলে দেখা যায় বিজেপি সবচেয়ে ভালো ফল করেছে বস্তারে আদিবাসী ঘন এলাকায়। বস্তুত বস্তারের ফলাফলের কারণে রাজ্যের সরকারে ফিরেছে বিজেপি। লোকসভা নির্বাচনেও বস্তারে গুরুত্ব দিচ্ছে দু’দলই। সোমবার ভানুপুরীতে বিজেপি’র নির্বাচনী জনসভা করবেন মোদী।
ফেব্রুয়ারিতে রাহুল গান্ধী বস্তারে দেখা করেন হাসদেও অরন্য বাঁচাও সংঘর্ষ সমিতির নেতানেত্রীদের সঙ্গে। রাহুল বলেন যে হাসদেও অরণ্যকে অন্য কোনও ব্যবসায়িক স্বার্থে ব্যবহার না করার অবস্থান নেবে কংগ্রেস। কংগ্রেসের পাশাপাশি সিপিআই(এম) এবং ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের একাধিক দল অরণের জমি রক্ষার দাবি তুলেছে। বনাঞ্চলে জমির অধিকার আইনের প্রয়োগ করে আদিবাসীদের পাট্টা সুনিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছে নির্বাচনী প্রচারে।
রমেশের প্রশ্ন তুলেছেন নাগরনর ইস্পাত প্রকল্প নিয়েও। বিজেপি-কে লক্ষ্য করে তাঁর প্রশ্ন, ‘’২৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পের বেসরকারিকরণ না করার ঘোষণা করা হোক। ঘোষণা করে দেখান প্রধানমন্ত্রী। ২০২০ থেকে এই প্রকল্পের ৫০.৭৯ শতাংশ শেয়ার বিক্রির মতলব চলছে।’’
Comments :0