অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আইনের পক্ষে বিল পেশ হলো রাজ্যসভায়। শুক্রবার এই বিল যদিও কেন্দ্রীয় সরকার পেশ করেনি। রাজস্থানের বিজেপি সাংসদ কিরোরি লাল মীনা পেশ করেন এই বিল। পেশের সময়েই তীব্র প্রতিবাদ জানান বিভিন্ন দলের সাংসদরা। সিপিআই(এম) এবং বামপন্থীরা সোচ্চার হন রাজ্যসভা অধিবেশনের মধ্যেই।
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীর ধনকর বিলটি পেশের অনুমতি দেন মীনাকে। প্রতিবাদে সিপিআই(এম) সাংসদ জন ব্রিটাস সহ বিভিন্ন দলের সাংসদরা বাধা দেন। কয়েক দফা হট্টগোল চলতে থাকে। বিলটি পেশের অনুমতি নেওয়ার জন্য ধ্বনি ভোট নেন ধনকর। ৬৩-২৩ ভোটে বিল পেশের অনুমতি দেওয়া হয়।
ব্রিটাস বলেন, এই বিল যে অপ্রয়োজনীয় তা আগেই জানিয়েছে আইন কমিশন। ডিএমকে সাংসদ তিরুচি শিবা বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের বিরোধী অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। সমাজবাদী পার্টির সাংসদ রামগোপাল ভার্মা বলেন, এই বিল সংবিধানের বিরোধী। সংসদে এই বিল পেশ হতে দেওয়া উচিত নয়।
বিজেপি এবং আরএসএস’র মূল আদর্শগত চিন্তার সঙ্গে যুক্ত অভিন্ন দেওয়ানি বিধির ধারণা। গুজরাট এবং মহারাষ্ট্রে এই বিধি চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট লড়েছে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর অর্থ, আপাত বিচারে, সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য একই ব্যক্তিগত আইন চালু করা। প্রকৃত বিচারে যদিও বিজেপি’র প্রচার ভিন্ন। মুসলিমদের একই ব্যক্তিগত আইনবিধির আওতায় আসতে বাধ্য করার লক্ষ্য জানানো হয়। বিভিন্ন সংগঠনেরই মত, ‘অভিন্ন’ হলেই ‘সমতা’ নিশ্চিত করা যায় না।
এদিন বিল পেশ হওয়ার পর তা বকেয়া আলোচনা হিসেবে সংসদে নথিভুক্ত থাকবে। পরে কোনও সময় তা নিয়ে আলোচনার সুযোগ থাকবে। শুক্রবার সাংসদরা বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের প্রস্তাবিত বিল পেশ করেন। এই ব্যক্তিগত বিল নিয়ে আলোচনা হলেও সরকার তা আনতে বাধ্য নয়। তবে অনুমান, ২০২৪’র লোকসভা ভোটের আগে সংসদ তপ্ত করার অন্যতম কৌশল এদিনের বিল।
এর আগে ছ’বার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল রাজ্যসভায় নথিভুক্ত হয়েছে। কিন্তু কখনও পেশ হয়নি। সেই বিচারে শুক্রবার সংসদের অত্যন্ত গুরুত্বপূ্ণ দিন। সিপিআই(এম) , সিপিআই, কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, ডিএমকে, এনসিপি, এমডিএমকে, আরজেডি সাংসদরা বিলের বিরোধিতায় প্রস্তাব পেশ করেন। তার ওপরই ধ্বনিভোট নেন চেয়ারম্যান।
Comments :0