খুনের মামলা দায়ের করে র্যাগিংয়ের তদন্ত চালানোর দাবি তুললেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
রবিবার সেলিম বলেছেন, ‘‘আমরা চাই অপরাধীদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হোক। যাতে কেউ আর র্যাগিং করার সাহস না পায়। তা সে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হোক বা আইআইটি।’’ এদিন মুর্শিদাবাদে যান তিনি।
গত বছরে খড়্গপুর আইআইটি’র ছাত্র ফয়জান আহমদের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় হস্টেলের ঘরে। ঘটনাটিকে প্রথমে তদন্ত হয়নি। পরে খুনের মামলা দায়ের করে গুয়াহাটির এই ছাত্রের পরিবার। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ডিব্রুগড় থেকে তাঁর দেহ তুলে এনে ফের ময়না তদন্ত হয়। দ্বিতীয়বার ময়না তদন্তের রিপোর্টে বলা হয় ‘খুন করার চেষ্টা হয়েছিল’।
সেই ঘটনার উল্লেখ করেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘দ্বিতীয়বার ময়না তদন্তের পর খুনের মামলা রুজু হয়েছিল ফয়জানের ক্ষেত্রে। স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর মৃত্যুতেও খুনের মামলা দায়ের করতে হবে।’’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে র্যাগিংয়ের অভিযোগ জোরালো। রবিবার আরও দুই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও গাফিলতির অভিযোগ রয়েছে।
স্বপ্নদীপের জন্য বিচার চেয়ে শনিবারই মিছিল করেছে এসএফআই। সোমবার যাদবপুর থানা এলাকায় ফের মিছিল করবে এসএফআই।
এর আগে ধৃত সৌরভ চৌধুরীকে জেরা করে এদিন গ্রেপ্তার করা হয়েছে যাদবপুরের দুই পড়ুয়া দীপশেখর দত্ত এবং মনেতোষ ঘোষকে। যাদবপুরের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র দীপশেখর। তাঁর বাড়ি বাঁকুড়ায়। মনোতোষ সমাজবিদ্যার দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। তাঁর বাড়ি হুগলির আরামবাগে। স্বপ্নদীপের সঙ্গে হস্টেলে এক ঘরে থাকত মনতোষ।
পুলিশের অনুমান নিহত ছাত্র স্বপ্নদীপের উপর যে মানসিক চাপ তৈরি করা হয়েছিল, তার নেপথ্যে এই দুই পড়ুয়ার বেশ বড়সড় ভূমিকা রয়েছে। সেই ভেবেই গ্রেপ্তার করা হয় দুই পড়ুয়াকে। ধৃত দুই ছাত্রকে করে লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রবিবারই এসএফআই অভিোগ তুলেছে যে তদন্ত ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। বাইরে কী কথা বলতে তা শিখিয়ে দিতে এক বহিরাগতের নেতৃত্বে শনিবারও সভা হয়েছে হস্টেলের ওই ব্লকে। স্বপ্নদীপের মৃত্যুর পরও এমন একাধিক সভা হয়েছে। এসএপআই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিক কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, কোনও সংগঠন প্রাতিষ্ঠানিকভাবে র্যাগিংকে সমর্থন করে না। আমরা চাইব যে সব সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অংশ একযোগে স্বপ্নদীপের মৃত্যুর স্বচ্ছ তদন্তের দাবিতে সরব হবে। এর মধ্যেই প্রমাণ লোপাট করা বা বিকৃতির চেষ্টা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। সব অংশকে এর বিরুদ্ধে শামিল হওয়ার আবেদন জানাচ্ছে এসএফআই।
এসএফআই’র অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ঘটনার পর থেকে আসছেন না। তাঁকে ২১ জুলাইয়ের সভার প্রস্তুতিতে অংশ নিতে দেখা গেলেও এমন কঠিন সময়ে আসছেন না। তাঁর ভূমিকাকে ধিক্কার জানিয়েছে এসএফআই। হস্টেলের সংশ্লিষ্ট ব্লকের সুপারদের জেরা করারও দাবি তুলেছে এই ছাত্র সংগঠন।
Comments :0