তালোজা জেল থেকে বেরলেন সমাজকর্মী গৌতম নভলখা। জেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে তুলে দিয়েছে নভি মুম্বই পুলিশের হাতে। জেলের বদলে গৃহবন্দি রাখার আবেদন জানিয়েছিলেন নভলখা। সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদন মঞ্জুর করলেও সাতদিন পর জেল থেকে ছাড়া হলো তাঁকে। নভি মুম্বাইয়ে একটি কমিউনিটি হলে থাকবেন তিনি। এই কমিউনিটি হল সিপিআই(এম)’র পরিচালনাধীন।
মহারাষ্ট্রের ভীমা-কোরেগাঁও মামলায় অভিযুক্তদের অন্যতম নভলখা। তাঁর সঙ্গে বন্দি করা হয় অপর সমাজকর্মী, আইনজীবীদের। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা বা এনআইএ তাঁদের রাষ্ট্রের পক্ষে বিপজ্জনক বলে হেফাজতে রাখার আবেদন জানিয়ে গিয়েছে আদালতে। শনিবার এনআইএ সকালের দিকে বিশেষ আদালতে নভলখা সংক্রান্ত তথ্য পেশ করে। বিশেষ আদালত তারপর নভলখাকে ছাড়ার নির্দেশিকা জারি করে।
এর আগে বম্বে হাইকোর্ট এই মামলায় জামিন দিয়েছে অপর অভিযুক্ত সমাজকর্মী আনন্দ তেলতুম্বডেকে।
সুপ্রিম কোর্ট তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে গৃহবন্দি রাখার আবেদন মঞ্জুর করে। শীর্ষ আদালত যদিও শর্ত আরোপ করেছে। নভলখাকে রাখা হবে সিসিটিভি’র নজরদারিতে। ফোন ব্যবহারেও থাকবে নিষেধাজ্ঞা, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন না তিনি। নভলখার সঙ্গী সাবা হুসেনকে সঙ্গে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এনআইএ’র পক্ষে শীর্ষ আদালতে সওয়াল করেছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এবং অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু। আদালতে তাঁরা বলেন যে নভলখাকে যেখানে রাখার কথা বলা হচ্ছে সেটি কোনও ফ্ল্যাট নয়, একটি পাঠাগারের অংশ। সুপ্রিম কোর্ট ভর্ৎসনার সুরে দুই আইনজীবীকে বলে যে শীর্ষ আদালতের নির্দেশে ফাঁক খোঁজার চেষ্টা হলে তা কড়া চোখে দেখা হবে। আবাসস্থলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় আদালত বাড়তি শর্ত আরোপ করে নভলখার ওপর। আবাসস্থল সিপিআই(এম)’র পরিচালনাধীন জানান এনআইএ’র এই দুই আইনজীবী। বস্তুত কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের মনোভাব ধরা পড়ে তাঁদের সওয়ালে। সিপিআই(এম)’র প্রসঙ্গ ওঠায় আদালত জানিয়ে দেয় যে এর মধ্যে সমস্যা নেই। সিপিআই(এম) একটি স্বীকৃত রাজনৈতিক দল।
২০১৭’র ৩১ ডিসেম্বর ভীমা কোরেগাঁওয়ে সমাবেশে ভাষণ দেন নভলখা। পরের দিন ওখানে সংঘর্ষ হয়। তার জন্য সমাজকর্মীদের দায়ী করে এনআইএ। সমাবেশের সঙ্গে মাওবাদীদের সংযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করেছিল পুনে পুলিশ। পরে তদন্তের দায়িত্বভার নেয় এনআইএ। ঘটনার পর যদিও উসকানির অভিযোগ ছিল উগ্র হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক অংশের বিরুদ্ধে।
Comments :0