KKR IPL

স্টার্কের স্পেলে ফাইনালে কেকেআর

খেলা

২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালের স্মৃতি ফেরালেন মিচেল স্টার্ক। সেদিন ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই নিউজিল্যান্ডের ব্যাটার ব্রেন্ডন ম্যাকালামের স্টাম্প ছিটকে দিয়েছিলেন স্টার্ক। তাতেই দুমড়ে গিয়েছিল কিউয়িদের মনোবল। আর এদিন আইপিএলের প্রথম কোয়ালিফায়ারে, স্টার্কের দ্বিতীয় বলে ইয়র্কার ছিল না। বলটা শেষ মুহূর্তে সুইং করল, লাইন মিস করে বোল্ড হলেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিধ্বংসী ওপেনার ট্রাভিস হেড। তাতেই দেওয়াল লিখনটা স্পষ্ট হয়ে যায় ফাইনালে কোন দল যেতে চলেছে! 
প্রথম ওভারে স্টার্ককে সুইং পেতে দেখে, পাওয়ার প্লে’তে তিন ওভার করালেন শ্রেয়স আইয়ার। তাঁর চালটা কাজে দিল। তৃতীয় ওভারে স্টার্ক পরপর দু’বলে নিলেন দু’উইকেট।  স্টার্কের আগুনে স্পেলের (৩-০-২৩-৩) ঝটকায় ভাঙল এবারের আইপিএলের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপের মেরুদণ্ড। এতদিন স্টার্কের যারা সমালোচনা করেছিলেন, তাঁদের মুখেই অজি পেসারের বন্দনা। সবাই লিখলেন, ‘এই জন্যই স্টার্ক বড় ম্যাচের খেলোয়াড়।
প্রাথমিক ধাক্কা সামলে, রাহুল ত্রিপাঠী (৫৫) ও ক্লাসেনের (৩৩) প্রতিআক্রমণাত্মক জুটি ও প্যাট কামিন্সের (৩০) ছোট্ট ক্যামিও’তে হায়দরাবাদ টেনেটুনে তুলল মাত্র ১৫৯। স্কোরটা ভদ্রস্থ। কিন্তু আমেদাবাদের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে, তার উপর ছোট বাউন্ডারিতে, ডিফেন্ড করার মতো নয়। আর কেকেআরের যা ব্যাটিং লাইন আপ। রান তাড়া করতে নেমে হায়দরাবাদের বোলারদের পাড়ার স্তরে নামিয়ে আনলেন আইয়ার জুটি। শ্রেয়স-ভেঙ্কটেশের জোড়া অর্ধশতরানে, ১৬০ রান কেকেআর তুললো মাত্র ১৩.৪ ওভারে। ৩৮ বল বাকি থাকতেই ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করল নাইটরা। আগামী ২৬ মে আইপিএলের ইতিহাসে চতুর্থবার ফাইনাল খেলতে নামবে কেকেআর। ২০২১ সালের পর ফের ফাইনালে শাহরুখের দল। এই দলটার যারা সমর্থক, তাঁরা তৃতীয় ট্রফির স্বপ্ন দেখতে পারেন। দশদিন পর ম্যাচ খেলতে নেমে, একইরকম ধারাবাহিকতা নাইটদের। সানরাইজার্সের মতো দলের বিরুদ্ধে নির্মম পারফরম্যান্সের করে বুঝিয়ে দিল ‘কেকেআর হে তেইয়ার’ খেতাব জেতার জন্য।
এদিন টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে কী ভুল করলেন প্যাট কামিন্স। গত ১৯ নভেম্বর ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠিয়ে বাজিমাত করেছিলেন প্যাট কামিন্স। এদিন আর হলো না! তিনি ভাবতেই পারেননি স্টার্কের হাত থেকে এভাবে গোলাগুলি বেরোবে! শূন্য রানে হেড ফেরার পর, আরেক ওপেনার অভিষেকও রান পেলেন না। তিনি শিকার হলে বৈভব আরোরা। ৪১ টি ছক্কা হাঁকানো অভিষেক এদিন কভারে দাঁড়ানো রাসেল ক্যাচিং প্র্যাকটিস করানোর ভঙ্গিমায় আউট হলেন। নীতীশ রেড্ডি (৯) ও শাহবাজ আহমেদ (০) দু’জনেই ফিরলেন স্টার্কের বলে। পাঁচ ওভারের ৩৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে হায়দরাবাদ। চতুর্থ উইকেটে ৬২ রানের জুটি রাহুল-ক্লাসেনের। গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু বরুন চক্রবর্তীর। ফিরলেন ক্লাসেন। এরপর রাসেল, ত্রিপাঠীকে রান আউট করে, হায়দরাবাদের বড় রানের স্বপ্নে আঘাত দেন। আব্দুল সামাদ (১৬) ও প্যাট কামিন্সের (৩০) ইনিংস দু’টি না থাকলে দেড়শো পেরোতো না হায়দরাবাদ।
স্কোরবোর্ডে কম রান। তাই বাড়তি চাপ ছিল না কেকেআরের ঘাড়ে। আগ্রাসী শুরু গুরবাজের। তাঁর ১২ বলে ২৩ রানের সুবাদেই প্রথম উইকেটে ওঠে ৪৪। পাওয়ার প্লে শেষ হতেই নিজের কাজ সেরে ফেরেন নারিন (২২)। এরপর তৃতীয় উইকেটে দুই আইয়ারের ৯৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ম্যাচ পকেটে পুরে নেয় নাইটরা। 
সংক্ষিপ্ত স্কোর—  হায়দরাবাদ ২০ ওভারে ১৫৯ অলআউট (রাহুল ৫৫, স্টার্ক ৩/৩৪)
কলকাতা ১৩.৪ ওভারে ১৬২/২ (ভেঙ্কটেশ অপরাঃ ৫১, শ্রেয়স অপরাঃ ৫৮, নটরাজন ১/২২)
 

Comments :0

Login to leave a comment