শ্রমিককে সঙ্গত মজুরির অধিকার দিতে হবে। কৃষককে ফসলের ন্যায্য দাম দিতে হবে। খেতমজুরকে দিতে হবে নাগরিকের ন্যায্য অধিকার। জাত, ধর্মের বেড়া সরিয়ে অধিকার চাইতেই ৫ এপ্রিল দিল্লিতে অভিযান করবেন শ্রমজীবীরা।
দিল্লিতে ‘মজদুর কিষান সংঘর্ষ’ অভিযানের আগে এই বার্তাই দিচ্ছে সিআইটিইউ, সারা ভারত কৃষক সভা এবং সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়ন। অভিযানকে সফল করার আহ্বান জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক প্রভাত পট্টনায়েকও।
সব রাজ্য থেকে মেহনতির বিভিন্ন অংশ রওনা হচ্ছে দিল্লি অভিমুখে। প্রস্তুতি চলছে দিল্লিতেও।
পট্টনায়েক বলেছেন, ‘‘দিল্লিতে ৫ এপ্রিল বড় সমাবেশ হতে যাচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ হলো, যে তিনটি শ্রেণি এবং অংশ জনসংখ্যায় তাঁরাই সবচেয়ে বেশি, এই জমায়েত তাঁদেরই।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘এই সমাবেশ বিকল্প ধারার রাজনীতির ইঙ্গিতবাহী।’’
সমাবেশ কেন গুরুত্বপূর্ণ তার ব্যাখ্যায় পট্টনায়েক বলেছেন, ‘‘সরকার চেষ্টা করছে এই শ্রেণিগুলিকে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক ভাবাবেগ থেকে চালিত করতে। অসহায় সংখ্যালঘু অংশের বিরুদ্ধে ঘৃণা এবং বিদ্বেষ তৈরি করা হচ্ছে এই অংশের মধ্যে। ৫ এপ্রিলের সমাবেশ হচ্ছে নিজেদের শ্রমের প্রাপ্য বুঝে নেওয়ার দাবিতে। আলাদা ভাষ্য তৈরি করছে এই সমাবেশ।’’
সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক বিক্রম সিং বলেছেন, ‘‘জাতি ধর্মের বিভাজন ভেঙে নিজেদের প্রাপ্যের দাবি জানাতে আসছেন মেহনতিরা। দেশের স্বৈরাচারী সরকারকে হুঁশিয়ারি দিতে চাইছেন তাঁরা। এই সমাবেশ বলছে যে দেশ আদানি-আম্বানির নয়। দেশ তৈরি হয়েছে মেহনতির শ্রমে। মেহনিতকে অবিরত লুট করা চলবে না।’’
সিআইটিইউ, কৃষক সভা এবং খেতমজুর ইউনিয়নের প্রচারে স্লোগান উঠেছে, ‘কাম চাহিয়ে, কাম কা পুরা দাম চাহিয়ে’। স্লোগান উঠেছে, ‘একশো দিনের কাজ আমাদের অধিকার, পাওনা মজুরি আদায় করবই’। ‘শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে‘। ‘বৃদ্ধ বয়সে দিতে হবে পেনশন’।
শ্রমজীবীর বিভিন্ন অংশের দাবিও জোরালো করা হচ্ছে সমাবেশে। যেমন আপেলচাষী ফেডারেশনও একাধিক দাবি তুলেছে। বিদেশ থেকে আমদানি করা আপেলের ওপর ১০০ শতাংশ কর বসানোর দাবি উঠেছে, আপেল থেকে তৈরি সব পণ্যের থেকে জিএসটি বাতিলের দাবিও উঠেছে।
উঠেছে বনাঞ্চলে বাসিন্দাদের জমির পাট্টার আইন প্রয়োগের দাবিও। আইন থাকলেও বাস্তবে পাট্টা দেওয়া হচ্ছে না। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে ‘লঙ মার্চ’-ও এই দাবিতে সরব হয়েছে। বন সংরক্ষণ আইনের বিধি সংশোধন করা হয়েছে। বাসিন্দাদের না জানিয়ে কর্পোরেটকে জমি দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। সেই সংশোধনী বাতিলেরও দাবি উঠেছে সমাবেশে।
Comments :0