Protests across the state today

আজই রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ

রাজ্য

চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ওপর তৃণমূল সরকারের পুলিশের বর্বরোচিত আক্রমণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিপিআই (এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। বুধবার তিনি এক বিবৃতিতে শিক্ষক নিয়োগে সীমাহীন দুর্নীতিতে জড়িত তৃণমূল সরকার ও যুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে, স্কুল শিক্ষাকে বাঁচানোর দাবিতে এবং এই বর্বরোচিত আক্রমণের প্রতিবাদ জানাতে বৃহস্পতিবার ১০ এপ্রিল রাজ্যের সর্বত্র রাস্তায় নেমে ছাত্র, যুব, শিক্ষক, অভিভাবক ও অন্যান্য সংগঠনগুলিকে ব‍্যাপক জমায়েতসহ প্রতিবাদ কর্মসূচি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। 
সম্মানীয় মাস্টারমশায়দের যারা লাঠির বাড়ি মারলো অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার না করলে বুঝতে হবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই লাঠি চালানো হয়েছিল। বুধবার কসবায় ডিআই অফিসে যেভাবে যেভাবে শিক্ষক শিক্ষিকাদের ওপর লাঠি চালিয়েছে, লাথি মেরেছে পুলিশ তার তীব্র নিন্দা করে এদিন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী সাংবাদিক বৈঠকে একথা বলেছেন। শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলাকে বর্বর, নির্মম ও হিংস্র আক্রমণ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী অবিলম্বে চাকরিচোরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন, যোগ্য ও অযোগ্যদের পৃথক তালিকা প্রকাশ করে যোগ্যদের শিক্ষকতার চাকরির দিন, আর নয়তো মুখে চুনকালি মেখে বসে থাকুন। বৃহস্পতিবার গোটা রাজ্যজুড়ে এর প্রতিবাদ হবে।

অন্যদিকে, এদিন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীনাক্ষী মুখার্জি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী আবোলতাবোল বললেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মেনে নেবেন না। সাধারণ মানুষের টাকায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম ভাড়া করার চেয়ে যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকার দুটি প্রিন্ট আউট বার করে দিলেই তো সহজ হতো। এটা তিনি করতে পারলেন না? পারবেন কি করে, পশ্চিমবঙ্গে এমন একটা জায়গা দেখান যেখানে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার দুর্নীতি করেনি। রাজ্য জুড়ে মানুষ প্রতিবাদে আছেন, প্রতিবাদে থাকবেন। এদিন ডিওয়াইএফআই এবং এসএফআই রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচী পালিত হবে।  
উল্লেখ্য, বুধবার কসবা ডিআই অফিসে যান চাকরিহারারা। তাঁদের দাবি ছিল, যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তাঁদের উত্তরপত্রের মিরর ইমেজ আদালতে দিতে হবে। তৃতীয়ত: বেতন নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত প্রকাশ করতে হবে। সুজন চক্রবর্তী বলেন, শিক্ষকদের দাবি সঙ্গত। আসলে অযোগ্যদের বাঁচাতে গিয়ে শিক্ষাকে ধ্বংস করছেন মুখ্যমন্ত্রী। যোগ্যদের সিভিক ভলান্টিয়ার বানাতে চাইছেন। একটা অসভ্যতা শুরু হয়েছে এই মুখ্যমন্ত্রী আর  শিক্ষামন্ত্রীর আমলে। শিক্ষামন্ত্রীর এই মুহূর্তে পদত্যাগ করা উচিৎ। তিনিই তো একসময়ে বলেছিলেন তৃণমূলের ছেলে ছাড়া চাকরি হবে না।  এদিন এই শিক্ষক শিক্ষিকাদের কোনো কথাই শোনা হলো না, মেরে তাড়িয়ে দেওয়া হলো। তাঁদের হকের চাকরি ফেরৎ দিতে হবে। কাল ডিগ্রিধারীদের যোগ্য শিক্ষকদের চাকরি কেড়ে নেওয়ার কোনো অধিকার নেই। 
অন্যদিকে, সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি’র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি এদিনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে সভাপতি জাহানারা খান ও সংগঠনের সম্পাদক কনীনিকা ঘোষ বলেন, তৃণমূলের  দুর্নীতির শিকার হয়েছেন ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা। এই রাজ্যে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাটাই এখন প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে। চাকরি এবং শিক্ষা’র এই বেহাল দশায় আমাদের রাজ্যর  ছেলেমেয়েরা তাঁদের পরিবার নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে পড়েছে। এর দায় মুখ্যমন্ত্রীর সরকার এড়াতে পারেন না। অবিলম্বে এই সমস্যার  সমাধান করতে হবে। দুর্নীতিগ্রস্তদের শাস্তি এবং যোগ্য শিক্ষকদের চাকরি বহাল রাখতে হবে। 
সিআইটিইউ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি’র সভাপতি সুভাষ মুখার্জি ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অনাদি সাহু বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর উপর পুলিশের বর্বরোচিত আক্রমণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করছি। দোষী পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া মানব সম্পদ উন্নয়ণ সহায়ক কর্মী ইউনিয়ন-র সাধারণ সম্পাদক মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যোগ্য শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীরা আন্দোলনে নামলে তাদের উপরে এই রাজ্যের সরকার পুলিশ প্রশাসনকে লেলিয়ে দিয়ে আজ যেভাবে শিক্ষিত যুবক যুবতীর উপর অত্যাচার করেছে তাতে সংগঠনের পক্ষ থেকে এই রাজ্যের সরকারকে  ধিক্কার জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে যে সমস্ত পুলিশ তাদের উপর অত্যাচার করেছে তাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

Comments :0

Login to leave a comment