লিকুড পার্টির নেতা বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবার পরে ইজরায়েলের সামাজিক-রাজনৈতিক বিন্যাস আরো দক্ষিণমুখী মোড় নিল। নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার শপথ নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সংসদে ১২০ সদস্যের মধ্যে ৬৩ জনের সমর্থন পাবার পরে নেতানিয়াহু শপথ নিয়েছেন। তার আগেই তাঁর দক্ষিণপন্থী কোয়ালিশনের শরিকরা মন্ত্রীত্ব ভাগ করে নিয়েছে।
চরম রক্ষণশীল শাস পার্টির নেতা আরেহ ডেরি মন্ত্রী হচ্ছেন, যদিও তিনি আদালতে শাস্তিপ্রাপ্ত। রিলিজিয়াস জিওনিস্ট পার্টির নেতা বেজালাল স্মটরিচকে প্রতিরক্ষা দপ্তরে স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী করা হয়েছে। তাঁর দায়িত্বে থাকছে ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক। এখানেই প্যালেস্তিনীয় জনবসতি হঠিয়ে অবৈধ দখলদারি ও জায়নবাদী বসতি তৈরি করা হচ্ছে।
জাতীয় নিরাপত্তার একটি মন্ত্রক তৈরি করে তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অতি দক্ষিণপন্থী ওৎজমা ইহুদিত দলের নেতা ইতামার বেন গভিরকে। তাঁর বিরুদ্ধে জাতিবিদ্বেষ, সন্ত্রাসবাদী কাজের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। স্মটরিচক ও বেন গভির দু’জনেই অবৈধ দখলদারির এলাকায় থাকেন। গভির ইজরায়েল থেকে সমস্ত প্যালেস্তিনীয়দের তাড়িয়ে দেবার দাবির সওয়ালকারী।
নির্বাচনের আগেই ঠিক হয়েছিল কোয়ালিশন জিতলে নেতানিয়াহু প্রধানমন্ত্রী হবেন। কিন্তু শরিকরা দরকষাকষি করে এমন শর্ত আদায় করে নিয়েছে যা চরম দক্ষিণপন্থার দিকে ইজরায়েলকে টেনে নিয়ে যাবে। প্যালেস্তাইনের ভূখন্ডে ইহুদি জনবসতিকে বৈধতা দেওয়া, রাষ্ট্র ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের ওপরে ধর্মীয় প্রভাব বৃদ্ধি, বিচারবিভাগ ও সামরিক কাঠামোয় পরিবর্তন এই শর্তের মধ্যে রয়েছে। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এই কোয়ালিশনই ইজরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে দক্ষিণপন্থী জোট। ইজরায়েলের অভ্যন্তরের কাঠামোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বৃহস্পতিবার সংসদ চলাকালীন বাইরেই বিক্ষোভ দেখান মধ্যপন্থী, বামপন্থী সমর্থকরা। তাঁরা বলেন, অতীতের যে কোনো সরকারের থেকে এই সরকার পৃথক। কট্টর রক্ষণশীল, কট্টর জায়নবাদী, উগ্র জাতীয়তাবাদী এই সরকার।
প্যালেস্তাইন কর্তৃপক্ষের রাষ্ট্রপতি মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, এই সরকারের লক্ষ্যেই হতে চলেছে ‘উগ্রপন্থা ও জাতিবিদ্বেষ’।
Comments :0