অভিবাসীরা সমুদ্রে ডুবে গেলেও উদ্ধারে নামা হবে না। কার্যত এই মর্মে বিধিনিষেধ চাপালো ইতালি। দেশের অতি দক্ষিণপন্থী ‘ব্রাদার্স অব ইতালি’ মন্ত্রীসভা দ্রুত স্বেসেবক সংগঠনের জলযানগুলিকে বন্দরে ফেরার নির্দেশও দিয়েছে। ডিসেম্বরের শেষে জারি নির্দেশের প্রতিবাদে সোচ্চার বহু সংগঠন।
‘ডক্টর্স উইদাউট বর্ডার্স’ সংগঠনের ইতালি শাখার তরফে বিবৃতি জারি করে সরকারি নির্দেশের সমালোচনা করা হয়েছে। বিবৃতিতে চিকিৎসকরা বলেছেন, ‘‘ভূমধ্যসাগরে পারাপারের অংশগুলিতে বিপন্ন অভিবাসীদের উদ্ধারে সরকারি ব্যবস্থা প্রায় নেই। সেই কারণেই স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনগুলিকে এগিয়ে যেতে হয়েছে। এই নির্দেশে গুরুতর ব্যাহত হবে উদ্ধারের কাজ। বহু মানুষ মারা যাবেন।’’
প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এবং তাঁর ‘ব্রাদার্স অব ইতালি’ প্রকাশ্যে মুসোলিনির অনুগামী। রাজনৈতিক স্তরে চিহ্নিত নয়া ফ্যাসীবাদী শক্তি দেশের সঙ্কটের জন্য দায়ী করে চলেছে অভিবাসীদের। রাজনৈতিক প্রচারেও অভিবাসীদের শত্রু বানিয়ে গণক্ষোভ সংগঠিত করেছে। এই সরকার উদ্ধারের কাজকে ‘উত্তর আফ্রিকার যাত্রী পারাপার পরিষেবা’ বলে খাটো করে থাকে।
নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জলযানে যে উঠবে তাকে জানাতে হবে ইউরোপের কোন দেশে শরণার্থীর স্বীকৃতি পেতে চায়। কোনও ভেসেল উদ্ধার চালিয়ে অন্য জলযানকে সাহায্য করতে পারবে না। সরাসরি বন্দরে ফিরে আসতে হবে।
উদ্ধারের কাজ করে এমন সংগঠনগুলির বক্তব্য সমুদ্রে একটি জলযান অন্যটিকে সহায়তা পৌঁছে দেয়। এমনই হয়ে আসছে। সে কারণে বহু মানুষকে রক্ষা করা সম্ভব হয়। এবার কড়াকড়ি চাপানোয় তাদের পক্ষে সমন্বয় রেখে উদ্ধার চালানো সম্ভব হবে না।
সরকারি নির্দেশ অমান্য করলে মোটা টাকা জরিমানার শাস্তিও ঘোষণা করেছে মেলোনি সরকার।
লিবিয়া, মিশর, আলজেরিয়া, মরক্কোর মতো দেশগুলি আফ্রিকার উত্তর অংশে। পশ্চিমী আগ্রাসনের কারণে বারেবারেই এই অংশগুলির বহু মানুষকে অভিবাসী হতে হয়। অর্থনৈতিক মন্দার তীব্রতার সঙ্গে সঙ্গে ইতালির মতো ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অতি দক্ষিণপন্থী শক্তিগুলি প্রভাব বাড়িয়েছে। অভিবাসী বিরোধী, ইসলামকে ঘিরে আতঙ্ক ছড়ানো নয়া ফ্যাসিবাদী এবং অতি দক্ষিণপন্থী শক্তিগুলির অভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি।
Comments :0