Md Salim at Tufanganj

বালাভূতকে মণিপুর বানাতে চাইছে তৃণমূল, এলাকায় সেলিম

রাজ্য

Md Salim at Balabhut Village in Tufanganj

জয়ন্ত সাহা, তুফানগঞ্জ

তুফানগঞ্জ শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে বালাভূত। শুক্রবার মহম্মদ সেলিম সহ সিপিআই(এম)’র নেতৃবৃন্দকে নিয়ে গাড়ি চলছিল সন্ত্রাস কবলিত এলাকার দিকে। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল যে ভোট পেরিয়ে যাওয়ার বারো দিন পরেও স্বাভাবিক ছন্দে ফেরেনি বালাভূত।
রাস্তার ধারে সিপিআই(এম) দপ্তর ভাঙা। দক্ষিণ বালাভূতের দিকে কিছুটা এগিয়ে মহম্মদ সেলিম, সিপিআই(এম)নেতা জীবেশ সরকার, মহানন্দ সাহা, তমসের আলি, পূর্ণেশ্বর অধিকারী ও অসীম সাহা, শিখা আদিত্য ও সিপিআই(এম) কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় কিছুটা এগিয়ে যেতেই আবিয়া বিবি, হালিমা বেওয়ারা কান্নায় ভেঙে পড়লেন। 

দু’জনেরই এক অবস্থা। ছেলেদের দোকান ভেঙে দিয়ে সব লুট করে নিয়ে গেছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। কালজানি নদী পেরিয়ে সবাই প্রাণ বাঁচাতে পালিয়েছিলেন আসামে। তারপর ঘরে ফিরলেও বাড়ির পুরুষেরা ঘর ছেড়ে কেউ আসামে কেউ ফের বাংলাদেশে চলে গিয়েছেন! যেতে হয়েছে। গোটা দক্ষিণ বালাভূতের ৬০ শতাংশ বাড়িতে পুরুষরা নেই।
জরিমানা না দিলে গ্রামে ঢোকা নিষেধ। জমিতে কাজ বন্ধ। মহিলাদের ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছে তৃণমূল। আর এসব হচ্ছে বালাভূতের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিজানুর হকের মদতে!
এদিন প্রতিনিধি দলের সামনে হঠাৎই বালাভূতের পুলিস ফাঁড়ির ইনচার্জ মিজানুর হক এলে মহম্মদ সেলিম তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, এত মানুষের বাড়ি, দোকান লুট হলো, ভাঙচুর হলো, আপনারা তদন্ত করলেন না? একটা অভিযোগ থানায় লিপিবদ্ধ করলেন না? আপনারা সরকারের নাকি কেবলই তৃণমূলের পুলিশ!
বাড়িতে কেবল মহিলারা আছেন। তাঁদেরও সামাজিক ভাবে বয়কট করার কথা ঘোষণা করেছে তৃণমূল। মহিলারা জমিতে ধান রুইতে গেলে তাঁদের কাজ থেকে ফিরিয়ে দিচ্ছে তৃণমূল। 

শুক্রবারই মজুরির বিনিময়ে পাট ধুতে গিয়ে শুধু দক্ষিণ বালাভূতের ১৬ জন মহিলাকে কাজ থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সেখানেই শেষ নয়, তাঁদের মারধরও করা হয়েছে। মহম্মদ সেলিমের কাছে অত্যাচারের এই বৃত্তান্ত জানিয়েছেন বিপন্নরা। 
সেলিম সাংবাদিকদের বলেন, বালাভূতে যে সন্ত্রাস চলছে সেটা মধ্যযুগীয় বর্বরতা ছাড়া কিছুই নয়। ওরা মহিলাদের ধর্ষণের হুমকি দিয়ে মণিপুর বানাতে চাইছে বালাভূতকে। তৃণমুল যদি সন্ত্রাস বন্ধ না করে, জেলা পুলিশ যদি ব্যবস্থা না নেয়, তবে হাইকোর্টের কাছে এই বর্বরতার ছবি তুলে ধরা হবে।

সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, বালাভূত আছে সন্ত্রাসেই। পঞ্চায়েত ভোটের দিন তৃণমূল প্রথমে বালাভূত অঞ্চলের সমস্ত বুথের দখল নিয়েছিল। তারপরেই শুরু হয় সিপিআই(এম) কর্মীদের বাড়ি বাড়ি আক্রমণ। দক্ষিণ বালাভূত ও চর বালাভূতের ৪৬টি বাড়ি, দোকানে ভাঙচুর ও লুট চালানো হয়। এলাকা ছাড়া হয় ১ হাজার ২৪৫টি পরিবার! কালজানি নদী পেরিয়ে তাঁরা আশ্রয় নেয় বাংলাদেশ ও আসামে।
সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ বালাভূতে সন্ত্রাসের তথ্য নিয়ে কোচবিহারের পুলিস সুপারের সঙ্গে দেখা করবেন।

 

Comments :0

Login to leave a comment