ধর্ষণ করেই হত্যা করা হয়েছিল আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসক ছাত্রীকে। ঘটনা নিয়ে ভুল প্রচারের প্রতিবাদ করে রবিবার বললেন চিকিৎসকরাই। রবিবার নিহত চিকিৎসকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরস’-র প্রতিনিধি এই চিকিৎসকরা। পরিবার তাঁদের কাছে মারাত্মক অভিযোগ জানিয়েছে।
এই মঞ্চের আহ্বায়ক চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী পানিহাটিতে বলেন, ‘‘হত্যার পর ধর্ষণ করা হয়েছে বলে প্রচার চলছে কোনও কোনও জায়গায়। আমরা এর প্রতিবাদ করছি। ধর্ষণ করেই হত্যা করা হয়েছে ওই ছাত্রীকে। ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার সাক্ষ্য দিচ্ছে ময়না তদন্ত রিপোর্টই।’’ তিনি বলেন, ‘‘পরিবারের অনুমান একজন এভাবে নির্যাতন করতে পারে না। ময়না তদন্তের রিপোর্ট দেখে আমাদেরও মনে হয়েছে একাধিক যুক্ত থাকতে পারে। সিমেন নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার পর বোঝা যাবে একাধিক অপরাধী জড়িত কিনা।’’
এই মঞ্চের দাবি, সরানো জরুরি আরজি কর হাসপাতালের মাথায় যারা বসে রয়েছে তাদের। সব মহিলা চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্যে। না করা পর্যন্ত চলবে আন্দোলন।
প্রতিনিধিদলে ছিলেন চিকিৎসকরাই। ছিলেন চিকিৎসক তমোনাশ চৌধুরী, বিদিশা দত্ত, মৌমিতা মুখার্জী, সংঘমিত্রা ঘোষ, আশিস কুমার মণ্ডলও।
গোস্বামী বলেন, ‘‘ময়না তদন্তের রিপোর্টও জানাচ্ছে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন ওই ছাত্রী। বাবা-মা এবং পরিজনরাও জানিয়েছেন যে সর্বাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন তাঁরা।’’ তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলেছেন সিবিআই তদন্তে আপত্তি নেই। পরিবারও সিবিআই তদন্তে আগ্রহী বলেই মনে হয়েছে।’’
হাসপাতাল এবং পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছে পরিবার। জানিয়েছেন চিকিৎসক প্রতিনিধিদলের সদস্যরাই। হাসপাতাল থেকে ফোন করে বলা হয়েছিল আত্মহত্যা। নিহত ছাত্রীর মা তাঁদের বলেছেন যে পুলিশের এক আধিকারিক প্রলোভন দেখিয়ে চুপ করে যেতে বলেছিলেন। গোস্বামী বলেন, ‘‘এরা কারা খুঁজে বের করা হোক। এদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
গোস্বামী বলেন, ‘‘চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীরা পুরুষ বা মহিলা আলাদা করে দেখেন না। কিন্তু ডিউটি রুম, বিশ্রামকক্ষ আলাদা থাকতে হয়। কেবল মেডিক্যাল কলেজ নয়, গ্রাম বা ব্লক স্তরে যে মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী বা চিকিৎসকরা রয়েছেন, কারও নিরাপত্তা নেই। তবু ডিউটি করে যান তাঁরা। তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। এই দাবিতে আন্দোলন চলবে।’’
এদিনই কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানিয়েছেন যে বিভিন্ন হাসপাতালের নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা বিহনীর এক এসিপি-কে বদলি করা হয়েছে। তিনি আবার গুজব ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন। এদিকে বদলি করা হয়েছে আরজি কর হাসপাতালের সুপার চিকিৎসক সঞ্জয় বশিষ্ঠকে। নতুন সুপার নিযুক্ত হয়েছেন চিকিৎসক বুলবুল মুখার্জি।
Comments :0