BRIGADE

ব্রিগেডে আহ্বান জানাতে হাওড়ায় সমাবেশ, ডেপুটেশন

জেলা ব্রিগেড

আগামী ২০ এপ্রিল ব্রিগেড সমাবেশে যোগদানের আহ্বান জানিয়ে বুধবার সমাবেশ ও জেলা শাসকের কাছে ডেপুটেশন। রাজ্যকে সার্বিক ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে শ্রমজীবী মানুষের ঐক্য গড়তে ব্রিগেড সমাবেশে যোগদানের আহ্বান জানান বামপন্থী গণসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সিআইটিইউ, সারা ভারত কৃষক সভা, সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়ন, পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতি ও ১২ জুলাই কমিটি হাওড়া জেলা কমিটির যৌথ উদ্যোগে বুধবার হাওড়া ময়দানে ফ্লাইওভারের নীচে সমাবেশ ও জেলা শাসকের কাছে ১৯ দফা দাবিতে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা অনাদি সাহু, কৃষক নেতা পরেশ পাল, খেতমজুর ইউনিয়নের নেতা নিরাপদ সরদার, বস্তি উন্নয়ন সমিতির বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, সমীর সাহা, মহেন্দ্র রায়, সুমিত্র অধিকারী, প্রবীন শ্রমিক নেতা দীপক দাসগুপ্ত, অশোক দলুই, বিজন মান্না ও  সুদিপ্ত দাস। শামসুল মিদ্দে, কার্তিক দলুই, সন্তোষ অধিকারী, সুব্রত চক্রবর্তী ও তপন দাসকে নিয়ে গঠিত সভাপতিমণ্ডলী সভার কাজ পরিচালনা করেন। সুমিত্র অধিকারীর নেতৃত্বে আট সদস্যের প্রতিনিধি দল জেলা শাসকের অনুপস্থিতিতে হাওড়া মহকুমা শাসকের সঙ্গে দেখা করে ডেপুটেশন দেন। 
অনাদি সাহু বলেন বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে রাজ্যে যে শিল্পায়নের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের সময়ে সেই পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। নতুন কলকারখানা তৈরি হয়নি বরং বহু কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন করে বেকার হয়েছেন বহু মানুষ। স্বাধীনতার পর থেকে দেশের সাথে রাজ্যের বেকারের সংখ্যা সর্বাধিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি করছে। সাধারণ মানুষের উপর ট্যাক্সের বোঝা চাপিয়ে দেশের বৃহৎ পুঁজিপতিদের ট্যাক্স মুকুব করছে। তিনি বলেন, সারা দেশে কেন্দ্রীয় সংস্থায় ১০ লক্ষ শূন্যপদে লোক নিয়োগ না করে বেকার শিক্ষিত যুবকদের বিপথে পরিচালিত করছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে শিক্ষায় রাজ্যে এত বড় নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়নি। রাজ্যে সর্বত্র দুর্নীতি চলছে। রাজ্যে ছয় লক্ষ সরকারি দপ্তরের শূন্যপদে স্থায়ী নিয়োগ না করে অস্থায়ী নিয়োগ করছে রাজ্যে সরকার। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শ্রমজীবী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে লাগাতার আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার কথা বলেন অনাদি সাহু। 
পরেশ পাল বলেন, রাজ্যে অযোগ্য শিক্ষকদের বাঁচাতে যোগ্য মেধাবী শিক্ষকদের শিক্ষকতা থেকে বঞ্চিত করলো রাজ্য সরকার। স্কুলের শিক্ষকতার চাকরি চলে গিয়ে হাহাকার করছেন যোগ্য শিক্ষকেরা। দেশের কৃষকেরা ফসলের ন্যায্য দাম না পেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন অথচ কেন্দ্রীয় সরকার দেশের পুঁজিপতিদের স্বার্থে করে ছাড় দিচ্ছেন। 
নিরাপদ সরদার বলেন, সারা রাজ্যে গরীব মানুষের দাবি আদায়ের আন্দোলন শুরু হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের ভয়ভীতির পরিবেশ থেকে বেরিয়ে গ্রামের গরীব মানুষেরা রাস্তায় বের হয়ে প্রতিবাদে সামিল হচ্ছেন। দেশের মানুষের অর্জিত অধিকার কেড়ে নিতে চায় বিজেপি সরকার। বামপন্থীদের আন্দোলনের ফলে সারা দেশে ১০০ দিনের কাজ গরীব মানুষেরা পেলেও আমাদের রাজ্যে দুর্নীতির কারণে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ। ফলে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে গ্রামের গরীব মানুষেরা। রাজ্যে সরকারি স্কুল বন্ধ হয়ে য বার ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন গরীব মানুষেরা। গরীব ঘরের ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা স্কুলে পড়াশোনা বন্ধ হতে বসেছে।

বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, বামফ্রন্ট সরকারের উদ্যোগে গ্রামের গরীব মানুষদের হাতে জমি তুলে দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার সেই জমি কেড়ে নিতে চায়। দেশের সরকার ধর্মীয় ও ভাষার ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়। ভারতের গণতন্ত্র, সংবিধান, বহুত্ববাদ ধ্বংস করতে চায় আর এস এস পরিচালিত বিজেপি সরকার। আমাদের রাজ্যে কর্মসংস্থানের সুযোগ না পেয়ে অন্য রাজ্যে চলে যাচ্ছেন রাজ্যের বেকার ছেলে মেয়েরা। ভট্টাচার্য আরও বলেন, বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে গ্রামে গ্রামে অবৈতনিক শিক্ষার প্রসারে স্কুল তৈরি করা হয়েছিল। বর্তমানে সেই সমস্ত স্কুল বন্ধ করে দিতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্যে সরকার। এর বিরুদ্ধে সমাজের সকল স্তরের মানুষদের ঐক্যবদ্ধ করেই আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান বিকাশ ভট্টাচার্য।

Comments :0

Login to leave a comment