SC Governor

বিল আটকে রাখার সময়সীমাও রাজ্যপালকে বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট, চাপে বিজেপি

জাতীয়

রাজ্য সরকারের পরামর্শ এবং সহায়তা অনুযায়ীই ভূমিকা পালন করতে হবে রাজ্যপালকে। অনির্দিষ্টকাল রাজ্য বিধানসভায় পাশ বিল আটকে রাখতে পারবেন না তিনি। কোন ক্ষেত্রে রাজ্যপালরা বিল সর্বোচ্চ কতদিন আটকে রাখতে পারবেন তার সময়সীমাও মঙ্গলবার বেঁধে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এভাবে রাজ্যপালের কাজে সময়সীমা অতীতে কখনও সুপ্রিম কোর্ট বেঁধে দেয়নি বলে জানাচ্ছেন আইনজ্ঞরা। 
তামিলনাডু সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রের পাঠানো রাজ্যপাল এন রবির বিরোধ সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দিয়েছে।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভাঙার অভিযোগে সরব বিরোধীরা। রাজ্যপালদের নিয়োগ করে বিরোধী দল পরিচালিত সরকারকে দিল্লি থেকে নিয়ন্ত্রণ করছে বিজেপি, এই অভিযোগ উঠেছে বারবার। সে কারণে এদিনের রায় অত্যন্ত তাৎপর্যের বলে মত বহু অংশের। 
সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার বলেছে, রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য অপেক্ষা করার যুক্তিতে ১০টি বিল আটকে রাখার সিদ্ধান্ত বেআইনি এবং একতরফা। এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হলো। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে এই ১০টি বিলই রাজ্যপালের সম্মতি পেয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে। ঠিক যেদিন বিধানসভা এই বিল পাশ করে রাজ্যপালের সম্মতির জন্য পাঠিয়েছিল সেদিন থেকেই তা চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, তামিলনাডুতে বিধানসভায় পাশ ১০টি বিল আটকে রেখেছেন রাজ্যপাল। তার মধ্যে চার বছর ধরে বিল আটকে রাখা হয়েছে বিধানসভায় না পাঠিয়ে। 
সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি জেবি পরদিওয়ালা এবং আর মহাদেবন স্পষ্ট করেছেন যে রাজ্যপালেরা অনির্দিষ্টকাল বিল আটকে রাখতে পারবেন না। আপত্তি থাকলে তা বিধানসভায় ফেরত পাঠাতে হবে। বিধানসভা ফের পাশ করালে বিলে সম্মতি দিতে বাধ্য রাজ্যপাল। সংবিধানের নির্দেশকে মনে করিয়ে একথা বলেছেন বিচারপতিরা। 
সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, সংবিধানে কোনও ‘চূড়ান্ত ভেটো’ বা ‘পকেট ভেটো’-র ধারণা নেই। সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যপাল তিনটি পদক্ষেপ নিতে পারেন- বিধানসভায় পাশ বিলে সম্মতি দিতে পারেন, বিলে সম্মতি আটকে রাখতে পারেন অথবা রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য পাঠাতে পারেন। তবে প্রথমবারই কেবল রাজ্যপাল তা করতে পারেন। 
সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, বিধানসভায় কোনও বিল দ্বিতীয়বার পাশ করে ফের রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হলে তিনি আটকে রাখতে পারেন না। কেবল দ্বিতীয় বিলের বয়ান প্রথম বিলের থেকে আলাদা হলে রাজ্যপাল নতুন করে সময় নিতে পারেন। তবে রাজ্যপালের আপত্তি থাকলে অনির্দিষ্টকাল বিল আটকে রাখতে পারেন না। তাঁকে তখন তা ফেরত পাঠাতে হবে বিধানসভার কাছে। বিচারপতিরা বলেছেন, সংবিধানের ২০০ ধারা অনুযায়ী সম্মতি দিতে আপত্তি থাকলে তখনই রাজ্যপালকে বিল ফেরত পাঠাতে হবে বিধানসভার কাছে। কিন্তু তামিলনাডুর ক্ষেত্রে সম্মতি না দিয়ে বিলটি আটকে রাখা হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যেই তা বোঝা গিয়েছে। 
রাজ্যপালদের বিল আটকে রাখা সংক্রান্ত সময়সীমা ঠিক করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বলা হয়েছে যে সময়সীমা না মানলে বিচারবিভাগীয় পর্যালোচনার মুখে পড়তে হবে রাজ্যপালকে। 
সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য ১ মাসের বেশি অপেক্ষা করা যাবে না। রাজ্য মন্ত্রীসভার পরামর্শের বিরুদ্ধে বিল আটকে রাখার মেয়াদ ৩ মাসের বেশি হবে না। মন্ত্রীসভার পরামর্শের বিপক্ষে রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য রাজ্যপাল ৩ মাসের বেশি অপেক্ষা করতে পারবেন না।    

Comments :0

Login to leave a comment