শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের মদত পুষ্ট জমি হাঙররা খাস পাট্টা জমি থেকে উচ্ছেদের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে খড়্গপুর মহকুমা ভূমি দপ্তরে বিক্ষোভ দেখালো সিপিআই(এম)। আক্রান্ত পরিবারগুলির সদস্যদের নিয়ে দেওয়া হলো ডেপুটেশন।
বিক্ষোভে দাবি ওঠে, জমির হাঙরদের বিরুদ্ধে আইনানুসারে পদক্ষেপ নিতে হবে, গরিব আদিবাসী সহ সাধারণ মানুষকে তাঁদের বসবাস এবং চাষের জমির দলিল দিতে হবে।
সোমবারই শিলিগুড়িতে রাজ্যজুড়ে এমন আক্রমণের প্রসঙ্গে ক্ষোভ জানান সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি জানান, গরিব মানুষকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। সর্বত্র আন্দোলন চালাচ্ছে সিপিআই(এম)।
খড়্গপুরে বিক্ষোভ সভায় সিপিআই(এম) নেতা সবুজ ঘোড়াই বলেন, ‘‘বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে খাস ও পাট্টা জমি পেয়ে খড়্গপুর শহরের ইন্দা মৌজার অন্তর্গত সাঁজোয়াল এলাকায় শতাধিক আদিবাসী পরিবারের বসতি গড়ে ওঠে। চাষের জমিও পেয়েছেন বহু পরিবার। পরিবর্তনের জমানায় এই গ্রামে লুট হচ্ছে। জরিমানার চাপে আদিবাসীরা তৃণমূলের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন। এখনও তিনশোর বেশি পরিবারের বাস রয়েছে। এঁদের খাস পাট্টা জমি নথিভুক্ত করার নামে শাসকদল তৃণমূলের জমি হাঙররা কাগজপত্র হাতিয়ে নেয়। এখন সেই জমি থেকে উচ্ছেদ করে শিল্প কারখানার মালিকদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। প্রতিকার চেয়ে খড়্গপুর মহকুমা ভূমি দপ্তরে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ সহ ডেপুটেশন হয়।’’
তৃণমূলের পাশাপাশি বিজেপি-ও প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ স্থানীয় মানুষের। কালো মান্ডি,,সন্ধ্যা সিং, রবি পাত্র , প্রিয়ব্রত দাস, ছবি সিং প্রমুখরা বলেন, ‘‘তৃণমূল ও বিজেপি দুই দলের জমির হাঙরদের টিম একসাথে মিলেমিশে এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে। বসত জমি সহ চাষের জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য হুমকি সহ চাপ দিচ্ছে রাতের অন্ধকারে। পাট্টার কাগজ হাতিয়ে নিয়ে সেগুলিকে ব্যবহার করে একাধিক ব্যাক্তির নামে নকল দলিল বের করছে। সেই জমি জায়গা কারখানার মালিকের হাতে তুলে দিতে দালালি করছে।’’
বিপন্ন এই বাসিন্দারা দিনমজুরি আর পাকা ঘর নির্মাণে জোগানদার, কেউ কেউ মিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালান। নির্মাণকর্মী হিসাবে ভাতা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে এক হাজার করে টাকা নিয়েও শাসকদল তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।
সিপিআই(এম) খড়্গপুর শহর কমিটির এই বিক্ষোভ ডেপুটেশন কর্মসূচী থেকে দাবি জানানো হয়, খাস জমিতে ২০ বৎসরের অধিককাল বসবাসকারীদের পাট্টা অথবা লিজ দিতে হবে। রায়ত জমিতে ২০ বৎসরের অধিককাল বসবাসকারীদের পাট্টা অথবা সরকারকে জমি ক্রয় করে দিতে হবে।
দাবি উঠেছে যে খাস, রায়ত জমিতে ২০ বৎসরের অধিককাল বসবাসকারীদের 'প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা'র বাড়ি সরকারকে তৈরি করে দিতে হবে। গরিব মানুষ বসবাস করছেন অথবা চাষ করছেন, সেখানে প্রোমোটার রাজ বন্ধ করতে সরকারকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরকে সরকারি কাগজ-পত্র দিতে হবে।
বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য রাখেন এরিয়া কমিটির সম্পাদক কামরুজ্জামান সহ পার্টি নেতা অসিত সরকার, গৌতম দত্ত, শক্তি চ্যাটার্জী, দিলীপ দে প্রমুখ।
KHARAGPUR EVICTION CPI(M)
মালিকের হয়ে মিলেমিশে উচ্ছেদে নেমেছে তৃণমূল-বিজেপি, বিক্ষোভ খড়্গপুরে
×
Comments :0