দীপশুভ্র সান্যাল-জলপাইগুড়ি
সরকারি সাহায্য মেলেনি, সুবিধা নেই ব্যাংক ঋণের। তবুও মানুষের থেকে ঋণ নিয়ে ঝুড়ি, টুকরি, কুলো,চালন বানিয়ে সারা বছর ক্রেতাদের যোগান দিয়ে যান জলপাইগুড়ি কদমতলা এলাকার ধারা পট্টির শিল্পীরা। বাঁশের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি অন্যান্য সামগ্রী দাম ক্রমাগত বেড়ে চলায় খুব বেশি লাভ হয় না। পাঁচ-দশ টাকা লাভে বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি করে কোনও ক্রমে দিনযাপন করছেন ধারা পট্টির বাঁশের শিল্পীরা। এই পেশায় বেশি আয় না হওয়ায় নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা বাঁশের কাজে আগ্রহী হচ্ছেন না। তাই বাপ দাদার আমলের বাঁশের সামগ্রী তৈরির কাজ আগামীতে কেউ করবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেন এলাকার বয়স্ক শিল্পী দীনেশ দাস। সারা বছর বাঁশের ঝুড়ি টুকরি, কুলোর অল্পস্বল্প বিক্রি থাকলেও দীপাবলি ও শারদ উৎসবের সময় ঝুড়ি, টুকরি,কুলো, ডালার বিক্রির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। বাঁশের ঝুড়ি টুকরি ভালো পরিমাণে বিক্রি হবে এই আশায় জলপাইগুড়ি শিলিগুড়ির প্রাইভেট বাস স্ট্যান্ডের উল্টোদিকে অবস্থিত ধারা পট্টির বাঁশ শিল্পীরা বাঁশের সামগ্রীর পশরা সাজিয়ে বসলেও আশানুরূপ বিক্রি নেই তাঁদের। ১৭৫ টাকা পিস বাঁশ কিনে বড় বাঁশের ঝুড়ি ২৫০ টাকা, কুলো ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ছোট ঝুড়ির ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ডালা ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন তাঁরা। সাইজ অনুযায়ী দামের পরিবর্তন হলেও ভালো পরিমাণে ক্রেতার দেখা মিলছে না এখন পর্যন্ত। তাই বাঁশ শিল্পীদের অভিমত এই বছর যত বাঁশের সামগ্রী তাঁরা তৈরি করেছেন সমগ্র বাঁশের সামগ্রী বিক্রি হওয়া সম্ভব নয়। বেশি দিন এই সমস্ত জিনিস ফেলে রাখা যায় না তাই খরচটুকু উঠলেই তাঁরা সমস্ত সামগ্রী বিক্রি করতে রাজি, তবুও বহু ক্রেতা দামাদামি করে ফিরে যাচ্ছেন। জলপাইগুড়িতে এই বাঁশ শিল্পীরা আগামীতে তাঁদের এই পেশার সাথে যুক্ত রাখতে পারবেন কিনা? বাঁশের সামগ্রী বিক্রি করে সামান্য হলেও লাভ ঘরে তুলতে পারবেন কিনা সেই দুশ্চিন্তাই দিন কাটাচ্ছেন বাঁশ শিল্পীরা।
Comments :0