Assembly election CPI(M)

২৬’র ভোটে রাজ্যে শ্রেণিশক্তির ভারসাম্য বদলানোর লড়াই: শ্রীদীপ ভট্টাচার্য

রাজ্য

বামপন্থীদের শক্তি হ্রাসের বিনিময়ে রাজ্যে বেড়েছে উগ্র দক্ষিণপন্থী শক্তি। বিজেপি’র বৃদ্ধিকে ব্যবহার করে নির্বাচনে নিজের পক্ষে সমর্থন জোগার করছে তৃণমূল। ২০২৬’র নির্বাচনে এই অবস্থা বদলাতে। রাজ্যে শ্রেণিশক্তির ভারসাম্য বদলানোর লক্ষ্যে এই নির্বাচন লড়বে সিপিআই(এম)।
রবিবার কলকাতায় প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে সাধারণ সভায় এই লক্ষ্য জানিয়েছেন সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য। এদিন রাজ্য সম্মেলন এবং পার্টি কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। 
ভট্টাচার্য দেশে উগ্র দক্ষিণপন্থার বিপদকে মনে করিয়েছেন। ধর্মান্ধতাকে ব্যবহার করছে নয়া ফ্যাসিবাদী শক্তি। দেশের সরকারে নিয়ন্ত্রক তারা। যার পিছনে রয়েছে কর্পোরেট-হিন্দুত্ব জোট। 
এই বাস্তবতার উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, হিন্দুত্ব বিরোধী লড়াইয়ের মানে একসঙ্গে মতাদর্শগত, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক পরিসরে সংগ্রাম। জনতার দাবি দাওয়ার লড়াইয়ের সঙ্গে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিপদকে যোগ করে পরিচালিত করতে হবে এই সংগ্রাম। গরিব, শ্রমজীবীকে সংগঠিত করায় ঘাটতি কাটাতেই হবে গ্রামে এবং শহরে। এই অংশের মধ্যে নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে। 
এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, ধর্মের নামে রাজনীতির ফয়দা নেওয়ার বিরোধী আমরা। কিন্তু আমরা তো ধর্মের বিপক্ষে নই। বিশাল অংশের মানুষ ধর্মবিশ্বাসী। তাঁদের মধ্যে কাজ করতে হয় আমাদের। সামাজিক মিলনধর্মী ধর্মীয় উৎসবে কমিউনিস্টরা থাকবে। শারদোৎসবে বুকস্টল করে সে পথ কাকাবাবুরা আমাদের দেখিয়ে গিয়েছেন। আবার অন্ধতা, সংকীর্ণতা বা বিদ্বেষের অংশ হবে না কমিউনিস্টরা। এমন উৎসবে ধর্মবিশ্বাসী মানুষের বহু সহায়তার প্রয়োজন থাকে। পানীয় জল হতে পারে, কেউ হারিয়ে গেলে খুঁজে দেওয়া হতে পারে- আমাদের স্বেচ্ছাসেবকের মতো সেই দায়িত্বব নিতে হবে। 
তিনি বলেন, কর্পোরেট-হিন্দুত্ব আঁতাতের তিন পথ। এক, হিন্দুরাষ্ট্রে পরিণত করার পক্ষে জিগির তৈরি করা। রামমন্দিরের সময় তা দেখেছি। 
দুই, স্বৈরতন্ত্রের পথে জোরালো গতিতে চলা। সংসদকে এড়ানো যার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এবার পাহেলগামের পরও তাই হচ্ছে। বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া। দানবীয় আইন পাশ করে বা প্রয়োগ করে রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকদের ওপর আঘাত। তিন, যুক্তরাষ্ট্র ব্যবস্থা দুর্বল। রাজ্যপাল পাঠিয়ে বাধা দেওয়া। সরকারের আর্থিক প্রাপ্য আটকানো। এক দেশ এক ভোট নীতি নামানো। 
ভট্টাচার্য বলেন, গরিব মানুষের দাবি দাওয়ার পাশাপাশি রাজনীতি সচেতন করতে হবে। সামপ্রদায়িক রাজনীতির বিপদ সম্পর্কেও সচেতন করতে হবে। তিনি বলেন, সামাজিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই আর শ্রেণি সংগ্রাম একসঙ্গে চালাতে হবে। 
রাজ্য সম্মেলনের বোঝাপড়া ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, তৃণমূল সরকারের সময়ে পুলিশের মদতে শাসকদল ও লুম্পেনরা লুটে খাচ্ছে। শিক্ষকরা চাকরি হারাচ্ছেন। মাদ্রাসা শিক্ষক নেই। ৬ হাজারের বেশি স্কুলে মাত্র এক শিক্ষক। 
তিনি বলেন, গ্রামে শহরে নব্য ধনী তৈরি হয়েছে নয়া উদারনীতিতে। এরাই নন কর্পোরেট ক্রোনি ক্যাপিটালের মালিক। এরাই তৃণমূলের প্রধান শ্রেণিভিত্তি।
তিনি বলেন, ২০২৬’র ভোট শ্রেণিশক্তির ভারসাম্য বদলানোর করার লড়াই। সেই লক্ষ্যেই লড়বে সিপিআই(এম)।

Comments :0

Login to leave a comment