Trinamool attack on Left Front election meeting

সিতাইতে বামফ্রন্টের নির্বাচনী সভায় হামলা তৃণমূলের, পাল্টা প্রতিরোধ

খেলা জেলা

উপ -নির্বাচনে জিততে তৃনমুল সিতাইতে সন্ত্রাসের চেনা রাস্তায় ফিরে গেল রবিবার। সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বামফ্রন্টের প্রচার সভায় সরাসরি হামলা করলো তৃনমুল কর্মীরা। সিতাই বাজারে ভরদুপুরে হামলার ঘটনা ঘটে পুলিস ও নির্বাচন কমিশনের নিযুক্ত ভিডিওগ্রাফারদের সামনেই। হামলার সময়ে পুলিস দাঁড়িয়েছিল কাঠের পুতুলের মত। সভাস্থলে ঢুকে মারমুখি তৃনমুল কর্মীরা সরাসরি আক্রমন করায় সভায় উপস্থিত সাধারন মানুষ আক্রান্ত হন,ভেঙ্গে দেওয়া হয় বেশ কিছু চেয়ারও। পুলিস গোটা ঘটনায় নিঃশ্চুপ থাকলেও হামলার অনতিবিলম্বেই উপস্থিত সাধারন মানুষ ও বামফ্রন্ট কর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।পিছু হটে হামলাকারীরা। আক্রান্ত হয়েও সাধারন মানুষ সভা চালিয়ে যেতে বামফ্রন্ট নেতাদের অনুরোধ করে। সভায় আসা দর্শক,স্রোতারাই পাহারাদার হয়ে সভার কাজ শেষ করতে বামফ্রন্ট কর্মীদের সাহায্য করেন।
ভোটের প্রচার শুরু হতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী সিতাইতে এলেও এদিনের হামলার পরে তিন ঘন্টা কেটে গেলেও দেখা মেলেনি কেন্দ্রীয় বাহিনীর।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন রবিবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ এই  সিতাই বাজার এলাকায় বামফ্রন্টের পথসভায় বক্তব্য রাখছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অক্ষয় ঠাকুর। বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি যখন প্রশ্ন তোলেন এই বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সঙ্গীতা রায় কি আদৌ তপশিলি জাতির অন্তর্ভুক্ত? তার জাতিগত শংসাপত্র নিয়ে স্থানীয় ভোটারদের মঞ্চ প্রশ্ন তুলেছে। কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট প্রার্থী আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। তথ্য জানার অধিকার আইনে তথ্য চেয়েও পাওয়া যায়নি। প্রশাসন শাসক দলের হয়ে কাজ করছে। তৃনমুল প্রার্থীর ভোটার কার্ডে স্বামীর নাম রাতারাতি বদলে কী করে বাবার নাম বসলো! প্রার্থীর পদবি কী করে বদলে গেলো? তখনই সভাস্থলের অদূরে জড়ো হওয়া তৃনমুল কর্মীরা অতর্কিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সভা শুনতে আসা সাধারন মানুষের ওপর। হামলাকারীরা সভার বক্তাদের ওপর চড়াও হতে গেলে সভা শুনতে আসা সাধারন মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে বামফ্রন্টের নেতাদের রক্ষা করতে।
সিপিআই(এম) নেতা শুভ্রালোক দাস অভিযোগ করেন, "চেয়ারে বসে যারা নেতাদের বক্তব্য শুনছিলেন তাদেরকে রীতিমতো ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তুলে দেয় এই দুষ্কৃতীরা। এরপর চেয়ারগুলি ফেলে দেয় ও ভাঙচুর শুরু করে। পুলিশের সামনেই এই আক্রমণ চালায় শাসকদলের মদতপুষ্টরা বলে অভিযোগ। সাধারন মানুষ এগিয়ে না এলে এদিন বামফ্রন্ট নেতারা গুরুতর জখম হতেন। ওরা নেতাদের ঘিরে মারতে চাইছিল। প্রতিরোধের মুখে পালিয়ে গেছে দুস্কৃতীরা। হামলার পরেও বামফ্রন্ট প্রার্থী তাঁর নির্ধারিত সবকটি সভা ও প্রচার সেরেছেন।
এদিনের হামলা প্রসঙ্গে ফরওয়ার্ডব্লক  নেতা অক্ষয় ঠাকুর বলেন, "তৃণমূল এই মুহূর্তে ভীতসন্ত্রস্থ। বামফ্রন্ট প্রার্থীর স্বচ্ছতা ও জনপ্রিয়তা এবং সামগ্রিক বিচার-বিশ্লেষণে নিরিখে তৃণমূল প্রার্থীর চাইতেই অনেকটাই এগিয়ে। ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটারেরা ভোট দিলে বদলে যাবে সব হিসেব নিকেশ"।
পরাজয় নিশ্চিত এটা বুঝতে পেরেই তৃনমুল হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে এদিন। এর পাশাপাশি তৃণমূল প্রার্থীর জাতিগত শংসাপত্রের অসত্যতা নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হওয়ায় এই মুহূর্তে অস্বস্তিতে তৃণমূলীরা। রীতিমতো ভীত সন্ত্রস্ত তারা। আর একারণেই এই হামলা চালিয়েছে তৃণমূল। তবে বামফ্রন্ট কর্মী, সমর্থক ও নেতৃত্বদের হার না মানা মেজাজের কাছে এদিন শেষ পর্যন্ত দুষ্কৃতীরা চলে গেছে অন্যত্র। আর সমস্ত সন্ত্রাসকে উপেক্ষা করেই শেষ হয়েছে সভা। এ ব্যাপারে থানা এবং নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হবে বলে এদিন জানিয়েছেন তিনি। ভোটের দিন ঘোষনার পর থেকেই মন্ত্রী উদয়ন গুহ থেকে সাংসদ জগদীশ চন্দ্র রায় বসুনীয়া উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখছিল।ভোটের দুদিন আগে সরাসরি আক্রমনে নেমে বুঝিয়ে দিল আরেকটা প্রহসনের ভোট হবে সিতাইতে।

Comments :0

Login to leave a comment