Tea Gardens Workers Protest

২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভ ডুয়ার্সের একাধিক চা বাগানে

জেলা

বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের আর মাত্র হাতে গোনা ক’দিন বাকি। অথচ এখনও বোনাস অধরা থেকে গেল ডুয়ার্সের একাধিক চা বাগানে। বকেয়া মজুরিও মেলেনি। পুজোর মুখে চরম অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতার মধ্যে পড়েছেন হাজার হাজার চা শ্রমিক পরিবার। ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সোমবার একাধিক বাগানে বিক্ষোভ ও গেট মিটিং করে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি পেশ করেছেন। জলপাইগুড়ির নাগরাকাটা ব্লকের গ্রাসমোড় চা বাগানের শ্রমিকরা সোমবার অফিসের সামনে বিক্ষোভে সামিল হন। শ্রমিকদের অভিযোগ, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের মজুরি এখনও দেওয়া হয়নি। উপরন্তু কর্তৃপক্ষ বোনাসও মেটায়নি। শ্রমিক নেতা সন্তোষ ভুজেল বলেন, ‘‘এভাবে প্রতিদিন আজ দেবো কাল দেবো করে ঘোরাচ্ছে। বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নামতে হয়েছে।’’ শ্রমিক সুকুরমুনি ওরাওঁ বলেন, ‘‘সব বাগান ২০ শতাংশ বোনাস দিচ্ছে, অথচ এখানে ১৫ শতাংশ বলে মালিকরা ঠকাতে চাইছে। আমরা এই অন্যায় মেনে নেব না।’’ অন্যদিকে নাগেশ্বরী ও কিলকোট চা বাগানের শ্রমিকরাও সোমবার গেট মিটিং করে বোনাসের দাবিতে সরব হন।
উল্লেখ্য, এই দুটি বাগান সম্মেলন টি অ্যান্ড বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেড’র অধীনে। শ্রমিকদের বক্তব্য, কর্তৃপক্ষ ১০ শতাংশ এখন , ৫ শতাংশ ডিসেম্বর মাসে এবং বাকি ৫ শতাংশ ফাগুয়ার সময় দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। কিন্তু শ্রমিকরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘‘এভাবে কিস্তিতে নয়, পুজোর আগেই সম্পূর্ণ ২০ শতাংশ বোনাস চাই।’’ শ্রমিক কৌশল্যা ভুজেলের আক্ষেপ, ‘‘বোনাস তো অনেক দূরের কথা, মজুরিটুকুও পাচ্ছি না। পুজোর মুখে এই অবস্থায় আমরাদের চলবে কীভাবে?’’
চা শ্রমিক সংগঠন জয়েন্ট ফোরামের অভিযোগ, শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের ছত্রছায়ায় মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ন্যায্য প্রাপ্য কেড়ে নিতে চাইছে। শ্রমিকদের দাবি, অবিলম্বে বকেয়া মজুরি ও পূর্ণাঙ্গ ২০ শতাংশ বোনাস না দিলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন তাঁরা।
এদিন তিস্তা পারের এলেনবাড়ি চা বাগানের শ্রমিকরা বোনাসের দাবিতে ম্যানেজারকে ঘেরাও করেন। দুপুর দুটো পর্যন্ত ঘেরাও চলে। চা বাগানের শ্রমিক নেতা শেখর ছেত্রী জানান, ‘‘আমাদের চা বাগানে মজুরি নিয়ে সমস্যা চলছে। চা গাছের পাতা নেই অথচ চা বাগান কর্তৃপক্ষ দৈনিক ২৪ কেজি পাতা তোলার টার্গেট দিয়েছে। টার্গেট ফিলাপ না হওয়ায় অর্ধেক মজুরী শ্রমিকদের দেওয়া হচ্ছে। তার উপর ১৫ শতাংশ এখন এবং পরবর্তীকালে আরও ৫ শতাংশ বোনাস দেয়া হবে বলে জানিয়েছে। শ্রমিকরা এসব মানছে না। সোমবার ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ম্যানেজারকে ঘেরাও করেন। 
এলেনবাড়ির বোনাস ও মজুরি নিয়ে নিষ্পত্তির জন্যে এদিন বিকেলে মালের সহকারি শ্রম আধিকারিকের  দপ্তরে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যার খানিকক্ষণ আগে শ্রম আধিকারিক শুভ্রজ্যোতি সরকার জানান, ‘‘মজুরি নিয়ে আলোচনা চলছে। বোনাস নিয়ে এখনও পর্যন্ত কথা হয়নি। আশা করছি সমস্যা মিটে যাবে।’’
মাল ব্লকের বাগ্রাকোট, মানাবাড়ি মেটেলী ব্লকের নাগেশ্বরী ও কিলকোট চা বাগানে শ্রমিকরা তিন দফায় বোনাস নিতে রাজী না। তাঁরা এদিন সকালে এক দফায় ২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে গেট সভা করেন।

Comments :0

Login to leave a comment