বক্তা, রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। খাদ্য আন্দোলনের ৬৫তম বছরে দাঁড়িয়ে ধর্মতলায় সমাবেশের ডাক দিয়েছিল রাজ্য বামফ্রন্ট। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন বিমান বসু। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে উপস্থিত জনতা উৎসুক হয়ে শুনছে সেই ভাষণ। গোটা ধর্মতলা চত্বর তখন লালঝান্ডার দখলে।
প্রথম থেকেই সভা ভন্ডুলের ছক কষেছিল কলকাতা পুলিশ। মেলেনি অনুমতি। তারপরেও ট্রাকের উপর অস্থায়ী মঞ্চ বেঁধে সমাবেশের কাজ চালান নেতৃবৃন্দ। বিমান বসু বলেছেন যে দেশে এবং রাজ্যের বুকে নেমে আসা আঁধার কাটাতে হারাতে হবে দুই শক্তি, বিজেপি এবং তৃণমূলকে।
এদিন সভা থেকে বিমান বসু শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন। খাদ্য আন্দোলনের শহীদদের সঙ্গে রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটাধিকার রক্ষায় শহীদ সহনাগরিকদেরও স্মরণ করেছে সমাবেশ। সমস্ত শহীদের উদ্দেশ্যেই শোকজ্ঞাপন করা হয় মঞ্চ থেকে।
বিমান বসু বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে খুন হচ্ছে। গণতন্ত্রের উৎসবে প্রাণহানি কেন হবে? খারাপ সময়। রাজ্যে অপশাসন চলছে। একই কায়দায় দিল্লিতে আরএসএস-বিজেপি সরকার চালাচ্ছে। পশ্চিমবাংলায় তৃণমূল তাদের ডেকে এনেছে। মিডিয়া দেখায় তৃণমূল বনাম বিজেপি লড়াই। কিন্তু তাদের বোঝাপড়া প্রকাশ্যে আনে না। গণ আন্দোলনের পথ প্রশস্ত করতে হলে দুই শক্তিকেই হারাতে হবে।
বসু বলেন, জ্যোতি বসু বলেছিলেন, মমতা ব্যানার্জির সব থেকে বড় অপরাধ বিজেপিকে ডেকে আনা। তাদের সঙ্গে সরকার করা। সাম্প্রতিক সময়ে তৃণমূলের মদতে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্পের চাষ হচ্ছে বাংলা জুড়ে। শপথ গ্রহণ করতে হবে, যত প্রতিকূলতা আসুক, এই আঁধার সরাতেই হবে। তৃণমূল বিজেপিকে জনবিচ্ছিন্ন করে উৎখাত করতে হবে। নতুন অধ্যায় শুরু করতে হবে।
নরেন্দ্র মোদী-আদানী যোগকে আক্রমণ করে বসু বলেন, মোদী আদানী ঘনিষ্ঠতার কথা দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও পাড়ি দিয়েছে। আজকে লন্ডনের ফিনান্সিয়াল টাইমস এবং গার্ডিয়ান প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে তুলে ধরা হয়েছে, কীভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্যে আদানী গোষ্ঠীর পুঁজির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটেছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে বৈঠকে বসেছে বিরোধী রাজনৈতিক বিন্যাস ইন্ডিয়ার নেতৃবৃন্দ। বৈঠকে রাহুল গান্ধী, শারদ পাওয়ার, সোনিয়া গান্ধীর পাশাপাশি সিপিআই(এম)’র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও অংশ নিয়েছেন। সেই বৈঠকের অঙ্গ হিসেবে সাংবাদিক সম্মেলন করেন রাহুল গান্ধী। তিনিও লন্ডনের ফিনান্সিয়াল টাইমস এবং গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন তুলে ধরে নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ শানিয়েছেন।
এদিন কলকাতার সমাবেশে বিমান বসু ছাড়াও ফরোয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চ্যাটার্জি, সিপিআই’র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পরিষদের সম্পাদক স্বপন ব্যানার্জি, আরএসপি’র রাজ্য সম্পাদক তপন হোড়, সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং যুবনেত্রী মীনাক্ষি মুখার্জি বক্তব্য রাখেন। সভা পরিচালনা করেন বিমান বসু।
ছবি: শ্যামল মজুমদার
Comments :0