Dengue Death

দমদমে ডেঙ্গু আক্রান্ত কিশোরের মৃত্য

রাজ্য

চলতি বছরের জুলাই মাসের শেষের দিকে কলকাতার মেয়র ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার প্রকোপকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটা কম। তাঁর আত্মসন্তুষ্টির ৩ দিন পরেই ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর খবর মিলল সেই কলকাতা থেকেই। গত ৭ আগস্ট ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় মুর্শিদাবাদের এক কলেজ পড়ুয়া এবং হুগলীর এক গৃহবধূর। সোমবার ফের এক পঞ্চম শ্রেণির স্কুল ছাত্রের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে। জানা গেছে দক্ষিণ দমদম পৌরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দা সৃজন সাহা গত কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিল। শুক্রবার জানা যায় সে ডেঙ্গু আক্রান্ত। শনিবার সকালে ইএম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সৃজনকে ভর্তি করা হয়। ওইদিন বিকেলে তার মৃত্যু হয়। 
মৃতের পরিবারের অভিযোগ পৌরসভার হাসপাতালে পরিষেবা মেলেনি। সেই অভিযোগ খারিজ করে দক্ষিণ দমদম পৌরসভা জানিয়েছে, ভর্তি করা হলেও প্রয়োজনে অন্য হাসপাতালে রেফার করা হতে পারে, এ কথা শুনেই কিশোরকে ভর্তি করেনি পরিবার।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘‘বৃষ্টিতে জমছে জল আশঙ্কা মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধির।  জায়গায়-জায়গায় যত্রতত্র পড়ে থাকে ময়লা আবর্জনা। বেহাল রস্তায় জমে জল। নিকাশি ব্যবস্থাও খারাপ। সেই কারণেই বাড়ছে মশার উৎপাত। নজর নেই পৌর সভার। দমদমে ডেঙ্গুতে এটাই প্রথম মৃত্যু নয়, এর আগেও দক্ষিণ দমদমে উদ্বেগ বাড়িয়েছে ডেঙ্গু প্রাণও গেছে।’’  
মালদহ এবং মুর্শিদাবাদে ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত। পিছিয়ে নেই উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাও। পাল্লা দিয়ে ডেঙ্গু বেড়ে চলেছে কলকাতা, হুগলী, হাওড়া, বর্ধমান জেলায়ও। বাদ যাচ্ছে না উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির চা বাগান এলাকাগুলিতেও। বেসরকারি তথ্য বলছে, রাজ্যে চলতি বছরে জানুয়ারি মাস থেকে জুলাই মাসের শেষ পর্যন্ত অন্তত আড়াই হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। ডেঙ্গু হু হু করে ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে।
মরশুমের প্রথম থেকেই ডেঙ্গু মোকাবিলা ও নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ সরকার একবার সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাব, আবাসনগুলিতে জল জমার কথা বলছে, আরেকবার বর্ষার দেরিতে আগমনকে দায়ী করে সাফাই দিয়ে চলেছে। 
অন্যদিকে আলিপুরদুয়ার জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। রবিবার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩০০। আগামী সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা রাজ্য সরকারের। সেই নির্দেশ পাওয়া পরই সতর্ক হয়েছে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার বিভিন্ন দপ্তরকে নিয়ে এবিষয়ে ডুয়ার্সকন্যায় বৈঠক হবে। আলিপুরদুয়ার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় জানান, রবিবার পর্যন্ত ২৯৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এবছর আগে থেকেই আক্রান্তের হার অনেকটাই বেশি ছিল। আলিপুরদুয়ার ১ নম্বর ব্লকে ৪৭, আলিপুরদুয়ার ২ নম্বর ব্লকে ৩৯, ফালাকাটা ব্লকে ৬৫, কুমারগ্রাম ব্লকে ১২, আলিপুরদুয়ার পৌরসভায় ৮, মাদারিহাট ব্লকে ৬, কালচিনি ব্লকে ১১৬ জন আক্রান্ত। কালচিনির চা বাগানগুলিতে কেন ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ। গতবছর মাদারিহাট ব্লকে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ছিল। এছাড়াও বাজার সংলগ্ন এলাকাগুলিতে জমে থাকা আবর্জনা এবং ব্যবহার করা প্লাস্টিক নির্দিষ্ট জায়গার রাখার জন্য সাধারণ মানুষকে সচেতন করা, চা বলয়ে ড্রেনগুলি দ্রুত আবর্জনা মুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

Comments :0

Login to leave a comment