Cooch Behar MJN

দুর্নীতির অভিযোগ, বদলি কোচবিহারের এমএসভিপি

রাজ্য জেলা

বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত কোচবিহার এমজেএম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এমএসভিপি রাজীব প্রসাদকে অবশেষে বদলি করতে বাধ্য হল রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর। শুক্রবার রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবন থেকে এক লিখিত নির্দেশ নামায় জানানো হয় ডাঃ রাজীব প্রসাদকে কোচবিহার এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এমএসভিপি পদ থেকে বদলি করে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন ও টক্সিকোলজি বিভাগের প্রফেসর হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। আর তার জায়গায় কোচবিহার এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এমএসভিপি হিসেবে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেরই ইএনটি বিভাগের প্রফেসর ডাঃ সৌরদীপ রায়কে।
আরজি করের ঘটনায় যখন উত্তাল গোটা বাংলা, ঠিক এই সময়েই একাধিক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ওঠে কোচবিহার এমজেএম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এমএসভিপি রাজীব প্রসাদের বিরুদ্ধে।  
তার বিরুদ্ধে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়ার পাশাপাশি এই মেডিকেল কলেজের পড়ুয়াদের পরীক্ষায় নম্বর বাড়ানোর জন্য রীতিমতো চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ ওঠে। আর এই অভিযোগ তুলে সরব হন এই মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডাঃ তনয় মোহন্ত। আর এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খোলার অপরাধে স্বাস্থ্য ভবন তড়িঘড়ি এই অধ্যাপককে অন্যত্র বদলি করে দেয় বলে অভিযোগ।
 এই মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক ডাঃ তনয় মহন্ত বলেন, শুধু এই বিষয়েই নয়, ভ্যাকসিন সংক্রান্ত বিষয়ক বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে এই এমএসভিপি-র বিরুদ্ধে। মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপালের মাধ্যমে তাকে বিভিন্ন ভাবে হুঁশিয়ারি দিতেন এই এমএসভিপি বলে সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন তিনি। এই প্রাক্তন অধ্যাপকের আরও মারাত্মক অভিযোগ, এই মেডিকেল কলেজে যে পরীক্ষাগুলি হতো, তার পরীক্ষক ছিলেন তিনি এবং তার আরেকজন কলিগ। এমএসবিপি পরীক্ষক ছিলেন না, তিনি এই পরীক্ষার আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি বলেন, পরীক্ষক ছাড়া কোন পরীক্ষার্থীর নম্বর কমানো বা বাড়ানোর কোন রকম অধিকার নেই। কিন্তু এরপরেও পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিশেষ এমন কয়েকজন ছিলেন, পরীক্ষার শেষে তাদের নম্বর বাড়ানোর ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করতে চেয়েছিলেন এই এমএসভিপি। তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি এবং তার আরেকজন পরীক্ষক কলিগ। এরপরও তাদেরকেও বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিতেন এই এমএসভিপি বলে অভিযোগ তাঁর। এরপরই তাকে বদলি করে দেওয়া হয়। কিন্তু এই অনিয়ম নিয়ে তিনি লিখিত অভিযোগ করার পরেও স্বাস্থ্য দপ্তর এব্যাপারে কোনরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ ডাঃ তনয় মহন্তের।
তিনি বলেন, পরীক্ষায় অবৈধ ভাবে নম্বর বাড়ানোর তিনি প্রতিবাদ করলে তাকে পরীক্ষক এবং পরীক্ষার আহ্বায়ক দুটি পদ থেকেই সরিয়ে দেওয়া হয়, তাকে আগাম কিছু না জানিয়েই।
আরজি কর কাণ্ডের পর এই বিষয়টি সামনে আনে সংবাদ মাধ্যম। আর এরপরই শোরগোল পড়ে যায় গোটা কোচবিহার জেলা সহ এই রাজ্যে। রীতিমত প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর। এই পরিস্থিতির মধ্যেই অবশেষে এদিন এই এমএসভিপির বদলির নির্দেশিকা জারি করা হয় স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে।

Comments :0

Login to leave a comment