স্বাস্থ্যে দুর্নীতির কারণেই নিম্নমানের ওষুধ সরবরাহ হচ্ছে সরকারি হাসপাতালে। প্রসূতিমৃত্যুতে এসেছে সেই সত্য। তা থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতে চিকিৎসকদের সাসপেন্ড করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুক্রবার কর্মবিরতিতে যোগ দিয়ে এই অভিযোগে সরব রয়েছেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকরা। সংবাদমাধ্যমে তাঁরা জানিয়েছেন অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চালানো হবে।
শুক্রবারই বিধাননগর কমিশনারেটে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট। জুনিয়র চিকিৎসক আসফাকুল্লা নাইয়ারর ওপর পুলিশ এবং প্রশাসনের নিপীড়নের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভের ডাক। আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক হত্যার বিপক্ষে গড়ে ওঠা আন্দোলনের একেবারে সামনের সারিতে ছিলেন আসফাকুল্লা। মেদিনীপুর মেডিক্যালের ঘটনায় গত ১৪ তারিখ সাংবাদিক সম্মেলন করে জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট। সেখানেও শামিল ছিলেন তিনি।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন অংশই বলেছে, নিম্নমানের ওষুধ এবং সরঞ্জাম সরকারি পরিষেবায় দিয়ে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতিকে সামনে এনেছিল আরজি কর আন্দোলন। মেদনীপুরে সেটাই ফের ধরা পড়েছে। সে কারণেই তৃণমূল কংগ্রেস এবং সরকার নজর ঘোরাতে মরিয়া। দায়ী করা হচ্ছে চিকিৎসকদের। প্রতিবাদকে ভয় দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে। তবে তাতে কাজ হচ্ছে না।
শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, শিয়ালদহ আদালতে আরজি কর কাণ্ডে রায় ঘোষণা হবে। তার আগে, শুক্রবার, নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা বলেছেন যে গত প্রায় পাঁচ মাস কোনও তদন্ত হয়নি। তিনি জানিয়েছেন, বিচারের দাবিতে লড়াই চালিয়ে যাবে পরিবার।
পরিবার বারবারই জানিয়েছে আরজি কর কাণ্ডে সঞ্জয় রায় কেবল একা দোষী নন। যে অপরাধ চক্রের জন্য তাঁদের কন্যা, আরজি কর হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক-ছাত্রীকে কর্মরত অবস্থায় খুন হতে হলো, তার মাথাদের ধরা হচ্ছে না।
সিনিয়র চিকিৎসকদের মঞ্চ জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরসের পক্ষে ডা. সুবর্ণ গোস্বামী জানিয়েছেন যে মেদিনীপুর মেডিক্যালে আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সংহতি রয়েছে। মঞ্চের প্রতিনিধিদল যাবে হাসপাতালে।
গত সপ্তাহে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে অসুস্থ হতে থাকেন প্রসূতিরা। তাঁদের মধ্যে এমজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনজনকে নিয়ে আসতে হয়েছে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার মৃত্যু হয় এক সদ্যোজাতের। ওইদিনই মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যালের ১২ চিকিৎসককে সাসপেন্ড করেন। অথচ নিম্নমানের রিঙ্গার্স ল্যাকটেট বা অক্সিটোসিনের মতো প্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ কেন, তার ব্যাখ্যা মমতা ব্যানার্জি দেননি। কেবল সাসপেনশনই নয়, এই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে এফআইআর। আবার চিকিৎসক আসফাকুল্লা নাইয়ার কাকদ্বীপের বাড়িতে হয়েছে তল্লাশি। জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরস রাজ্য প্রশাসনের এই পদক্ষেপেরও তীব্র নিন্দা করেছে। মেদিনীপুরে প্রতিবাদ জানিয়েছে এসএফআই, ডিওয়াইএফআই, সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতিও।
Saline Suspension Protest
জাল স্যালাইন: মেদিনীপুরে কর্মবিরতি, বিধাননগরে চিকিৎসক-বিক্ষোভ বিকেলেই
×
Comments :0