RG Kar: Rally for Justice

‘আর কে আছে জানতে চাই’, সরব প্রতিবাদী মিছিল শিয়ালদহ আদালত থেকে

রাজ্য কলকাতা

শিয়ালদহ আদালত চত্বরে শামিল প্রতিবাদীরা।

অরিজিৎ মণ্ডল ও অর্পণ সেনগুপ্ত

অপরাধের মাথাদের আড়াল করা হচ্ছে। শিয়ালদহ চত্বরের সামনে এই অভিযোগে সরব থেকেছেন প্রতিবাদী এবং চিকিৎসকরা। বিকেলে শিয়ালদহ আদালতের সামনে থেকে শুরু হয়েছে মিছিল ‘অভয়া মঞ্চ’-র ডাকে।
কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা চার্জশিট পেশ করেছিল কেবল ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের নামে। সেই সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধেই গঠিত হয়েছিল চার্জ। শনিবার রায় ঘোষণায় দোষী সাব্যস্ত কেবল সেই সিভিক ভলান্টিয়ারই। কিন্তু পরিবার থেকে প্রতিবাদী, সব অংশেরই বক্তব্য প্রকৃত বিচার মেলেনি। 
শনিবার শিয়ালদহে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারপতি অনির্বাণ দাস রায়ে সঞ্জয়কেই দোষী সাব্যস্ত করেছেন। এর বাইরে কিছু হওয়ার ছিলই না এদিন। বিচারপতি জানিয়েছেন সোমবার হবে সাজা ঘোষণা। সেদিনও নিজের পক্ষে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হবে সঞ্জয়কে। 
রায় ঘোষণার পরও আদালতের বাইরে, সম্মিলিত স্লোগানে উঠেছে দাবি, আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে হত্যা ও ধর্ষণ কাণ্ডে আর যারা ছিল, তারা কোথায়।
খুন ও ধর্ষণের পাশাপাশি দুর্নীতির মামলাও রয়েছে এই আর জি কর কাণ্ড ঘিরে। রয়েছে তথ্য ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ। বস্তুত সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে এই ঘটনারই শুনানিতে জানিয়েছিল যে অপরাধস্থল বদলানো হয়েছে। অর্থাৎ ৯ আগস্ট, যে সেমিনার রুমে চিকিৎসকের দেহ মিলেছিল, সেটিই অপরাধস্থল নয়।
এদিন রায় ঘোষণার আগেই নির্যাতিতা মৃতা চিকিৎসকের মা জানিয়েছিলেন যে শিয়ালদহ আদালতের রায়ে বিচার প্রক্রিয়া থামবে না। তদন্তও থেমে যাবে না। আর বাবা শিয়ালদহ আদালতের বাইরে বলেছেন যে পূর্ণ বিচারের দাবিতে চলবে লড়াই।
পূর্ণ বিচার কেন? ‘গণশক্তি ডিজিটাল’-কে আদালত চত্বরের বাইরে জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদার বলেছেন যে এই অপরাধে জড়িত অন্যরা বিচারপ্রক্রিয়ার বাইরেই রয়েছে। তাদের অপরাধের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। 
জুনিয়র চিকিৎসক ফ্রন্ট, নাগরিকদের ‘অভয়া মঞ্চে’-র সঙ্গে প্রতিবাদী বিভিন্ন অংশই এদিন শামিল ছিলেন আদালতের বাইরে। তাঁরা বলেছেন, আরজি কর কাণ্ডে কর্মরত অবস্থায় চিকিৎসক হত্যার সঙ্গে অপরাধচক্র এবং দুর্নীতিচক্রের যোগসাজশ বেরিয়ে এসেছিল। তা ঢাকতেই মরিয়া প্রয়াস চালিয়েছে পুলিশ এবং প্রশাসন। 
সিবিআই-র ভূমিকাতেও কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের ‘সেটিং’ ধরা পড়ছে। সিবিআই চার্জশিট না দেওয়ায় জামিন মিলেছে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অভিযুক্ত প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ বা টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের। আর রাজ্য সরকার চার্জশিট দেওয়ার অনুমতি দিচ্ছে না।  
তাঁরা মনে করিয়েছেন এই দুর্নীতিচক্রের অপরাধ ফের সামনে এসেছে মেদিনীপুর মেডিক্যালে জাল স্যালাইন সরবারহে। আর তৃণমূল সরকার এখানেও অপরাধীদের আড়াল করতে শাস্তির মুখে ফেলছে চিকিৎসকদের। 
রায় ঘোষণার পরই এদিন সঞ্জয় রায়কে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার  ৬৪, ৬৬ এবং ১০৩(১) ধারায়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হতে পারে সোমবার। তবে তাতেই দুর্নীতি-দুষ্কৃতীচক্রের মূল মাথাদের ধরার দাবি থেমে যাবে না। সুপ্রিম কোর্টে চলবে বিচার। বাইরে চলবে আন্দোলন। শনিবারই তা স্পষ্ট করেছে শিয়ালদহ।

Comments :0

Login to leave a comment