2024 INDIAN GENERAL ELECTION

মাংস, মুঘল, মঙ্গলসূত্রের পর এবার মুজরা, বিহারে ভাষণ ত্রস্ত মোদীর

জাতীয়

CPIM TMC BJP AIKS WEST BENGAL PANCHAYAT ELECTION WEST BENGAL POLITICS 2023 BENGALI NEWS

নড়ে গিয়েছে বিহার-উত্তরপ্রদেশের খুঁটি। ষষ্ঠ দফার নির্বাচনের পরেও আশার আলো হাতড়াচ্ছে বিজেপি। তাই মেরুকরণের কোনও সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছেন না মোদী। 

উত্তর প্রদেশে ১৪ আসন, হরিয়ানায় ১০, দিল্লির ৭, বিহারের ৮, পশ্চিমবঙ্গের ৮, ওডিশার ৬, ঝাড়খন্ডের ৪ এবং জম্মু ও কাশ্মীরে ১ আসন। সব মিলিয়ে শনিবার লোকসভা নির্বাচনের ষষ্ঠ দফার নির্বাচনে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন দেশের ৫৮টি লোকসভা কেন্দ্রের মানুষ। নির্বাচন কমিশন জানাচ্ছে, বিকেল পাঁচটা অবধি গোটা দেশে ভোট পড়েছে ৫৭.৭ শতাংশ। পশ্চিমবঙ্গের ৮ আসনের ক্ষেত্রে ভোটদানের হার ৭৭.৯৯ শতাংশ।  

বিহারে আরও ৯ আসনে ভোট সপ্তম দফায়। ১ জুন সপ্তম তথা শেষ দফায় দেশের মোট ৫৭টি আসনে ভোট নেওয়া হবে।  ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিহারে ৩৯ আসনেই জয়ী হয়েছিল এনডিএ। উত্তর প্রদেশে ৬২ আসনে জয়ী হয়েছিল এনডিএ। মায়াবতী ১০ আসনে। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এবারের নির্বাচনে ৪টি ‘সুইং স্টেট’ বা এমন রাজ্য রয়েছে, যেখানে রাজনৈতিক ভারসাম্য বিরোধীদের দিকে ঘুরে যেতে পারে। রাজ্যগুলি হল বিহার, উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং কর্ণাটক। ২০১৯ সালের নির্বাচনে এই চার রাজ্যের প্রায় সমস্ত আসনে জিতেছিল বিজেপি। এবারে পরিস্থিতি জটিল বুঝে মেরুকরণ করার কোনও সুযোগ নষ্ট করছে না বিজেপি। 

শনিবার বিহারের একাধিক জনসভায় নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যের নির্যাস ছিল, ‘‘সামাজিক ন্যায়ের আন্দোলনে নতুন রাস্তা দেখিয়েছিল বিহার। এখানেই ঘোষণা করছি যে তপসিলি জাতি, আদিবাসী এবং ওবিসি সংরক্ষণ কিছুতেই কেড়ে নিয়ে মুসলিমদের দিতে দেব না। ভোট ব্যাঙ্ককে তুষ্ট করতে ‘ইন্ডিয়া’ মুজরা নেচে যেতে পারে।’’ 

এর আগে মোদী দাবি করেছিলেন, হিন্দু মহিলাদের মঙ্গলসূত্র কেড়ে মুসলমানদের মধ্যে বিলি করবে কংগ্রেস। মাংস খাওয়া মানে হিন্দুদের অপমান করা, কিংবা কংগ্রেস মুঘল বাদশাদের নিয়ে চুপ- এমন দাবিও নির্বাচনী মরশুমে শোনা গিয়েছে মোদীর গলায়।

শনিবার কারাকাট এবং পাটলিপুত্রে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবারই হরিয়ানায় মোদী বলেছেন দু’টি মুসলিম দেশ বানাতে চায় কংগ্রেস। সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, ‘‘নির্বাচন প্রচারের বিধি অনুযায়ী ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো যায় না। মোদী তা করে চলেছেন নির্বাচন কমিশনের মদতে। একের পর এক অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও চুপ কমিশন।’’ 

কলকাতা হাইকোর্টের ওবিসি রায়ের প্রসঙ্গ টানেন মোদী, তবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন একেবারেই নিজের মতো করে। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজ্যের ওবিসি শংসাপত্র বিতর্কের জন্য দায়ী তৃণমূল সরকারের বেনিয়ম। কিন্তু আর্থিক এবং সামাজিক বিচারে বঞ্চিত অংশের মানুষ মুসলিম হলেও তাঁকেও সংরক্ষণের সুযোগ দেওয়ার নীতির বিরোধিতা করেনি কলকাতা হাইকোর্ট। 

কিন্তু নীতিগত বিচারে এই বিরোধিতা চালাচ্ছেন মোদী। তিনি বলেছেন, ‘‘এই বিরোধীরা যে ভোট জিহাদিদের খুশি করতে চাইছিল। তাকে বাতিল করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।’’ 

উত্তর প্রদেশের যাদব সম্প্রদায়ের ভোট পেতে মোদী বলেছেন, ‘‘ ‘ইন্ডিয়া’ জোট সরকারে এলে সংবিধান এমনভাবে বদলাবে যে আদালত পর্যন্ত মুসলিম সংরক্ষণ বদলাতে পারবে না।’’ যাদব ভোটে ভাঙন ধরানোর চেষ্টায় মোদী বলেন, যারা সংরক্ষণের সুবিধা পেয়েছে তাদের সবাইকে ভুগতে হবে।’’ 

একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘মোদী পাকিস্তানের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদ, মাওবাদী উগ্রপন্থা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে নির্ভয়ে কাজ করে চলেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চলবে। প্রতিটি ভোট কেবল স্থানীয় সাংসদকে জয়ী করার জন্য নয়, প্রধানমন্ত্রীর জন্যও।’’

 

Comments :0

Login to leave a comment