অনির্বাণ দে
শনশন হাওয়ায় বুক কাঁপে ফরিদ মণ্ডলের। সেদিন উঠেছিল এইরকম হাওয়া। অল্প বৃষ্টিও ছিল। রাতের অন্ধকারে তারপর শুরু হয় হুড়োহুড়ি। দৌড়েছিলেন ফরিদ মণ্ডল। নদীর পাশের বাড়ি থেকে দৌড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন শেষবারের মতো। তারপর সব শেষ। বাড়ি গিয়েছে নদীর গর্ভে।
লালগোলার পদ্মাপারের তারানগরের ফরিদ মণ্ডলের এই অভিজ্ঞতার সঙ্গে মিল রয়েছে সামসেরগঞ্জের মহেশটোলা প্রতাপগঞ্জ গ্রামের আমিনা বেওয়ার। এক মুহুর্তে তাঁরও ঘর গিলে খেয়েছে নদী। সেই নদীর নাম গঙ্গা।
ভাঙনের রকম ফের আলাদা। নদীর পাড় ভাঙার ধরন আলাদা। শব্দ আলাদা। তবে এক দিকে গঙ্গা। অন্য দিকে পদ্মা। দুই নদীর ভাঙনে বিপর্যস্ত মুর্শিদাবাদ জেলার দুই প্রান্ত।
দীর্ঘ সময় পর ফের ফিরেছে পদ্মা নদীর ভাঙন। চাষের জমি, আমের বাগান গিলে খেয়ে পদ্মা এখন থাবা বসিয়েছে লালগোলার তারানগর গ্রামে। পদ্মার ভাঙন শুরু তারানগর সংলগ্ন রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামেও। একই রকম ছবি ভাঙনে বিপর্যস্ত মালদারও।
দুই জেলার ভাঙনের চিত্র ঠিক কেমন ?
২০২৫-এর জুন মাসের ১২ তারিখ বিধানসভায় রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানিয়েছিলেন,‘‘মালদহ ও মুর্শিদাবাদ মিলিয়ে ২৫ হাজার বিঘার বেশি জমি জলের তলায় চলে গেছে।’’ এই বছরই রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী সিআর পাতিল জানিয়েছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী ১৯৮৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে মূলত পশ্চিমবঙ্গে গঙ্গা ও পদ্মা নদীর ভাঙনে ১০ হাজার ২৪৪ হেক্টর জমির ভাঙন হয়েছে। এর পর ফের সামসেরগঞ্জ ও লালগোলায় ভাঙন হয়েছে।
লালগোলার তারানগরের হাসিনা বিবির সারাজীবনের সঞ্চয় বলতে ছিল একটি একতলা বাড়ি। সেই বাড়ি গিলে নিয়েছে নদী। সেই রাত ছিল ভয়ঙ্কর। ‘‘আমরা সবাই দূরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমাদের কিছুই করার ছিল না। একের পর এক বাড়িগুলো নদীতে তলিয়ে যাচ্ছিল। আমাদের বাড়িটাও গেল। যন্ত্রণায় চোখ বুজেছিলাম’’, বলছিলেন হাসিনা বিবি। গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে একলপ্তে তারানগরের ১৫টি বাড়ি তলিয়ে গেছে পদ্মায়। সেই রাতে খেতে বসেছিলেন সুপ্রিয়া বিবি। রাত তখন পৌনে নটা। বলছেন,‘‘দৌড়ে এসে দেওরের মেয়ে বলল, বড় মা তোমার বাড়ি তলিয়ে যাচ্ছে। কিছুই টানতে পারিনি। ভাইদের চারটে বাড়ি একসঙ্গে তলিয়ে গেল।’’ একই অভিজ্ঞতা প্রায় ৬৮টি পরিবারের।
লালগোলার ভাঙনে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৩৮ টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৬৮টি বাড়ি সম্পূর্ণ জলের তলায় তলিয়ে গেছে। ৭০টি বাড়ি যে কোনোদিন ভেঙে পড়বে জলে। ওই ৭০টির বাড়ির বাসিন্দারাও আসবাব পত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ ত্রাণ শিবিরে, কেউ আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
মানুষের জীবন থেকে মর্যাদাটুকুও কেড়ে নিয়েছে ভয়ঙ্কর নদী ভাঙন। থাবা বসাচ্ছে জীবন যাত্রাতেও।
এখন তারানগর প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪৭ টি পরিবার, রাধাকৃষ্ণপুর বাপুজী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৬টি পরিবার, সেখালিপুর হাইস্কুল ৮৮ টি পরিবারের আশ্রয়স্থল। অনেকেই যদিও এই কয় দিনে আবার ঘর বাঁধার চেষ্টা করেছেন। ত্রিপল খাটিয়ে যায়গা করে নিয়েছেন রাস্তার পাশে। তবে শৌচাগারের অভাব, শিশুদের পড়াশোনার পরিবেশের অভাব সঙ্কটকে আরও ভয়ঙ্কর করে দিচ্ছে।
একই রকম ছবি সামসেরগঞ্জেও। সামসেরগঞ্জে জলদিপুর বেসিক প্রাইমারি স্কুল, উত্তর চাচণ্ড প্রাইমারি স্কুল, মহেশটোলা প্রতাপগঞ্জ প্রাইমারি স্কুল এখনও অনেক পরিবারের ঠিকানা। কেউ আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়দের বাড়িতে। কারও ভরসা রাস্তার পাশের ঝুপড়ি। তবে ভাঙন স্থায়ী দাগ কাটছে শিশুদের জীবনেও। সামসেরগঞ্জের কাঞ্চনতলা হাইস্কুলের এক শিক্ষক জানাচ্ছেন,‘‘ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো থেকে অনেক ছাত্র-ছাত্রীই এই কয় বছর স্কুলে কম আসছে। কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। কেউ আবার অন্য গ্রামে চলে গেছে। অনেক কিশোরই ভাঙনে বিপর্যস্ত গ্রাম থেকে পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে পাড়ি দিচ্ছেন অন্য রাজ্যে। এটা দুর্ভাগ্যের।’’
২০২০ থেকে শুরু হওয়া গঙ্গা নদী ভাঙনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সামসেরগঞ্জের ধানঘড়া, ধূসড়িপাড়া, নতুন শিবপুর, কামালপুর, হীরানন্দপুর, চাচণ্ড, উত্তর চাচণ্ড, শিকদারপুর, লোহরপুর, প্রতাপনগরের। ক্ষতি হয়েছে ধূলিয়ান পৌরসভার ১৬, ১৭ এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের। ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ৭০০-রও বেশি বাড়ি গঙ্গার গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ বাসিন্দাই কোনও পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণ পাননি।
সামসেরগঞ্জের নদী ভাঙনের ইতিহাস রয়েছে। ১৯৫২-১৯৫৩ সালের গঙ্গার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ধূলিয়ান। সাতের দশকেও ভাঙন হয়। ভাঙন হয় আটের দশকে। সেবার ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা করে সরকার। হয় বোল্ডার দিয়ে স্পার তৈরির কাজ। তবে এরপর দীর্ঘ সময় ভাঙন হয়নি সামসেরগঞ্জে।
২০২০ সালের আগস্ট মাসে ভয়ঙ্কর নদী ভাঙন শুরু হয় সামসেরগঞ্জে। সেই দফায় ধানঘড়া, ধূসড়িপাড়া, নতুন শিবপুরে হয় ভাঙন। এরপর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসে নতুন করে নদী ভাঙন শুরু হয় সামসেরগঞ্জের প্রতাপগঞ্জ ও মহেশটোলা গ্রামে।
কিন্তু কী করছে সরকার? ভাঙন মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের ভূমিকা যেন মুর্শিদাবাদ, মালদহর মানুষের সঙ্গে সরকারের পরিহাস।
২০২৫ সালের মে মাসের শুরুতে মুর্শিদাবাদ এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেছিলেন,‘‘কেন্দ্রকে ১৩০০ কোটি টাকার প্রস্তাব দিয়েছি। ওরা কোনও খরচ করছে না। ফরাক্কার জন্য টাকা পাই সেই টাকা দেয়নি। ৮০০ কোটি টাকা দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করেছি আরও ১৭৫ কোটি টাকার কাজ হবে।’’ এর আগে ২০২৩ সালে মে মাসে সামসেরগঞ্জ এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেই বার গঙ্গার ভাঙন-প্রতিরোধে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করছেন বলে দাবি করছেন তিনি। সেবার নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ৮৭টি পরিবারের হাতে জমির পাট্টা তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে সেই পাট্টা যাঁরা পেয়েছেন তাঁদের সকলে এখনও জমির দখলই পাননি। জমি নিয়ে রয়েছে আইনি জটিলতা।
তবে মুখ্যমন্ত্রী একেক বার একেক রকম টাকা বরাদ্দের কথা বললেও কাজ কী হচ্ছে? উত্তর দিচ্ছেন সামসেরগঞ্জের মানুষই। বোগদাদনগরের করিম মণ্ডলের কথায়,‘‘ এত কোটি কোটি টাকার কাজ হলে আমরা তো রক্ষা পেয়ে যেতাম। বালির বস্তা ফেলা ছাড়া কোনও কাজ কেই কোনোদিন দেখেনি।’’ মুর্শিদাবাদের ভাঙন দুর্গতদের পাশে মমতা ব্যানার্জির সরকার কীভাবে দাঁড়িয়েছে, তার তথ্য ২০২৫ এর জুন মাসে বিধানসভায় পেশ করে সরকারপক্ষ। সেখানে বলা হয়েছে, ২৫৯৯ জনকে পাট্টা প্রদান করা হয়েছে।
কারা সেই পাট্টাপ্রাপক? সেই তথ্যও প্রকাশ করেনি রাজ্য সরকার। যারা স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁদের চাপ দেওয়া হচ্ছে মুখ না খোলার জন্য। কারা পাট্টা পেয়েছেন ? শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়েছে সিপিআই(এম)।
২০২৫-২০২৬ অর্থবর্ষে রাজ্যের বাজেটে ‘নদী বন্ধন প্রকল্প’ বলে একটি প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে সেই প্রকল্পে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু ভাঙন রোধে কাজ কী হয়েছে ? সামসেরগঞ্জের মানুষ দিনের আলোয় দেখেছেন সেই চুরি। ফারুক শেখের কথায়,‘‘বালির বস্তা নদীর বুকে ছুঁড়ে দিচ্ছে। কোনও মাপ নেই। কোনও হিসাব নেই। বস্তা তলিয়ে যাচ্ছে গভীরে। কিছু বলতে গেলেই চোখ রাঙাচ্ছে তৃণমূল।’’
তৃণমূল বাজারে ভাসিয়ে দিচ্ছে, ভাঙন প্রকৃতির অভিশাপ। ভাঙন আটকানো যাবে না। লালগোলাতে রেনু ক্যাম্প থেকে আটরোসিয়া পর্যন্ত ভাঙনরোধের কাজের জন্য ৭৫ কোটি টাকার টেন্ডার সম্প্রতি হয়েছে। তবে স্থানীয়দের শঙ্কা, সামসেরগঞ্জে যেরকম ভাঙন রোধে কাজ হয়েছে। একইরকম অভিজ্ঞতা হবে না তো লালগোলায় ?
কেন্দ্রের সরকারও ভাঙন নিয়ে ভাবতে রাজি নয়। ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী দাবি করেছেন, পশ্চিমবঙ্গে গঙ্গা নদীর উপর ৩ টি ‘ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট’ চলছে। ‘ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বর্ডার এরিয়াজ প্রোগ্রাম’-এ নাকি কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ৪১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
ফারাক্কা ব্যারেজ তৈরির পর থেকেই বামপন্থীরা দাবি জানাচ্ছেন, দীর্ঘ নদীপথের সংস্কার, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কেন্দ্রের সরকারকে নিতে হবে। ২০০৪ সালে ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মাধ্যমে আলোচনায় ঠিক হয় ফারাক্কা ব্যারেজ প্রজেক্টের আপস্ট্রিমে ৪০ কিমি এবং ডাউনস্ট্রিমে ৮০ কিমি এলাকায় ভাঙন মোকাবিলায় কাজ করবে ফারাক্কা ব্যারেজ প্রজেক্ট। যদিও ২০১১ সালের পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চাইছিলেন ভাঙন মোকাবিলায় কাজ করবে রাজ্য সরকার। সেই মতো রাজনৈতিক চাপ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে তৃণমূল। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ফারাক্কা ব্যারেজ প্রজেক্টের ১১২ তম টেকনিকাল অ্যাডভাইজারি মিটিং-এ সিদ্ধান্ত হয় পুরানো ঘোষণা মতো কেবল মাত্র ফারাক্কা ব্যারেজ থেকে ১২.৫কিমি আপস্ট্রিমে এবং ৬.৯কিমি ডাউন স্ট্রিমেই কাজ করবে ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ। এখনও কেন্দ্রীয় সরকার সেই দাবি করছে। যদিও ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বিগত পাঁচ বছরে ফারাক্কা ব্যারেজ প্রোজেক্ট কর্তৃপক্ষ মাত্র প্রায় ৩৫ কোটি টাকার কাজ করেছে।
সেই কাজ নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে মালদা থেকে ফারাক্কার মানুষের। কিন্তু সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ভাঙন প্রতিরোধের উদাহরণ আছে এই মুর্শিদাবাদেই। নয়ের দশকে পদ্মার ভয়ঙ্কর ভাঙন দেখেছে মুর্শিদাবাদ। গ্রামের পর গ্রাম গিলে খেয়েছে পদ্মা নদী। আস্ত একটা পঞ্চায়েত চলে গিয়েছে পদ্মার গর্ভে। সেই অবস্থাতেও ভাঙন রুখেছিল মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের তৎকালীন সভাধিপতি নৃপেন চৌধুরি বলছেন,‘‘এই কাজের জন্য জেলা পরিষদকে ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে। দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে। বামফ্রন্টের জেলা পরিষদ নিজে পদ্মা নদীতে বোল্ডার দিয়ে ভাঙন রোধে স্থায়ী কাজ করেছে।’’
সেই স্থায়ী কাজের ফলে রক্ষা পেয়েছে জলঙ্গী থেকে ভগবানগোলা, লালগোলার বিস্তীর্ণ অংশ। জেলা পরিষদের উদ্যোগে পদ্মায় তৈরি করা হয় স্পার। যাতে নদীর ঘুর্ণি ঢেউ পাড়ে ক্ষতি না করতে পারে। ভাঙন বিধ্বস্তদের রক্ষা করতে সরকারের উদ্যোগে জমি কিনে তৈরি হয়েছিল বামনাবাদ পঞ্চায়েতের মাহাতাব কলোনি, সাগরপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চরউদনগর কলোনি, চোঁয়াপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সাহেবরামপুর কলোনি। সেই কলোনি ঘিরে তৈরি হয়েছিল স্কুল, আইসিডিএস সেন্টার। সেদিনের সেই কলোনি আজ গঞ্জ এলাকা।
আটের দশকে ভাঙন রুখতে স্থায়ী কাজ হয়েছে সামসেরগঞ্জ, সুতি এলাকাতেও। বোল্ডার দিয়ে সেই স্থায়ী কাজের জন্যই বেঁচে গিয়েছে ধূলিয়ান শহরের ১, ২ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড। সুতির অরঙ্গাবাদের জগতাই থেকে মহলদারপাড়াও রক্ষা করা গিয়েছে সেই সময়।
অথচ ২০১১ সালের পরবর্তী সময়ে সামসেরগঞ্জ থেকে তারানগর -পুনর্বাসন নিয়ে কার্যত দিশাহীন রাজ্যের সরকার। লালগোলার ভাঙন দুর্গতরা কোথায় যাবেন? প্রশ্ন করলে কোনও উত্তর নেই শাসক দলের নেতা, মন্ত্রী থেকে বিধায়কদের কাছে।
সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদক জামির মোল্লার বক্তব্য,‘‘কেন্দ্র আর রাজ্য সরকার নদী ভাঙন নিয়ে কোনও কাজ করছে না। যৌথভাবেই এই কাজ করতে হবে। নদী বাঁচিয়ে গ্রামের মানুষকে বাঁচাতে হবে।’’
কিন্তু কীভাবে ? লড়াইয়ের রাস্তা দেখাচ্ছে লাল পতাকা। এই বছর ১৮ সেপ্টেম্বর মুর্শিদাবাদের ফারাক্কায় জমায়েত করেছিলেন মুর্শিদাবাদ আর মালদহর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। বক্তব্য রেখেছিলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। জনস্রোতে আওয়াজ উঠেছিল, লড়াই করেই বাঁচার। দাবি উঠেছিল, জাতীয় নদী গঙ্গার ভাঙনকে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করতে হবে। সেই লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যেতে লালগোলার ভাঙন বিধ্বস্ত মানুষের সঙ্গে দেখা করেছেন মীনাক্ষী মুখার্জি, আভাস রায়চৌধুরি, জামির মোল্লারা।
সব হারিয়েও বাঁচার লড়াইয়ে মরিয়া সামসেগঞ্জ থেকে লালগোলা।
Comments :0