রাজ্য জুড়ে চলা দুর্নীতি বিরোধী চলমান আন্দোলনের উপর পুলিশের নির্মম আচরণ সারা রাজ্যের মানুষের সামনে তুলে ধরবে সিপিআই(এম)। নন্দকুমারের ঘটনার তীব্র নিন্দা করে এমনটাই জানালেন সিপিআই(এম)’র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁরা আহ্বান, রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদে নামতে হবে।
শুক্রবার দুপুরে নন্দকুমারে সিপিআই(এম)’র ডাকে গ্রামবাসীরা বিডিও অফিসে ডেপুটেশন জমা দিতে যান। আবাস দুর্নীতির প্রতিবাদে এই ডেপুটেশন নিতে অস্বীকার করেন ডেপুটেশন। সিপিআই(এম)’র অভিযোগ, তৃণমূলের সঙ্গে যোগসাজস রয়োছে এই বিডিও’র। ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা এরপর বিডিও দপ্তরে অবস্থান শুরু করেন। সন্ধ্যার মুখে বিনা প্ররোচনায় তাঁদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী। স্থানীয় সিপিআই(এম) দপ্তরে ঢুকে গ্রেপ্তার করা হয় পার্টির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি, পরিতোষ পট্টনায়েক সহ ১৭জন কর্মী-সমর্থককে। মহিলাদের শ্লীলতাহানি করতেও দেখা গিয়েছে পুলিশকে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এক বিবৃতি দিয়ে মহম্মদ সেলিম জানিয়েছেন, ‘‘শুক্রবার দুপুরে নন্দকুমারে আবাস যোজনায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিডিও অফিসে বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের নির্মম লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন বহু কমরেড। পরবর্তীতে পার্টি অফিস থেকে জেলা সম্পাদক ও সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সহ বেশ কয়কজন কমরেডকে ধরপাকড় করা হয়েছে। রাজ্যজুড়ে এর প্রতিবাদ হওয়া প্রয়োজন অবিলম্বে। প্রতিটি ক্ষেত্রে আবাস যোজনার দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার হওয়া মানুষের ওপর পুলিশী অত্যাচার নামিয়ে আনছে বর্বর তৃণমূল সরকার। এর বিরুদ্ধে সর্বত্র প্রতিবাদ হোক। দুর্নীতি বিরোধী চলমান আন্দোলনের ওপর পুলিশের এই নির্মম আচরণ জনগণের সামনে আবারও স্পষ্ট করে তুলে ধরা প্রয়োজন।’’
এদিনের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিপিআই(এম)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। এক ভিডিও বার্তায় তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘ পুলিশ এবং সিভিক পুলিশের নাম করে বাইক বাহিনী এদিন হামলা চালিয়েছে। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে বাইকের হেলমেট পরে একদল লোক সিপিআই(এম) কর্মীদের উপর আক্রমণ করছে। এরা কারা? সম্পূর্ণ বিনা প্ররোচনায় এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা করছি। পার্টি অফিসে ঢুকে পার্টির জেলা সম্পাদককে মারধর করা হয়েছে। সেখান থেকে টানতে টানতে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়েছে। এ জিনিস চলতে পারে না।’’
ধৃত সিপিআই(এম) নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়ে সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ আবাস দুর্নীতি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। এই দুর্নীতির সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং বিডিওরা সরাসরি যুক্ত। মানুষ হকের পাওনা বুঝে নিতে রাস্তায় নেমেছে। সেটা তৃণমূলের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই বিডিওকে আগে থেকে জানানো থাকলেও তিনি ডেপুটেশন গ্রহণের প্রয়োজন বোধ করেননি। উল্টে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির নেতৃত্বে ব্লক অফিসে বহিরাগত দুষ্কৃতি জড়ো করা হয়েছিল।’’
Comments :0