SITARAM YECHURY

রেল দুর্ঘটনার তদন্তে সিবিআই,
তীব্র সমালোচনা ইয়েচুরির

জাতীয়

odisha train accident bengali news ganashakti exclusive SITARAM YECHURY

বালেশ্বর রেল দুর্ঘটনা নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মোদী সরকারের রেল মন্ত্রক। এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করলেন সিপিআই(এম)’র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। 

সোমবার সিপিআই(এম)’র টুইটার হ্যান্ডেল থেকে একটি ভিডিও আপলোড করা হয়। সেখানে সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, সিবিআই তদন্ত সাধারণত হয় ক্রিমিনাল কেসে। কিন্তু এখানে প্রশ্ন উঠছে যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে। যাত্রী সুরক্ষার বিষয়ে কি কি খামতি রয়েছে, কি কি দুর্বলতা রয়েছে সেটা তদন্ত করে দেখার কথা রেল বোর্ডের। কিন্তু আমাদের আশঙ্কা, সেদিক থেকে নজর ঘোরাতেই সিবিআই তদন্তের কথা বলা হচ্ছে। 

ইয়েচুরি আরও বলেন, এই আশঙ্কা যদি সত্যি হয়, তবে তা গোটা দেশের জন্য বিপদজ্জনক বিষয়। তার কারণ, ভারতীয় রেল গোটা দেশের জীবনধারার কাজ করে, বিশেষ করে গরীব মানুষের জন্য। বর্তমানে ভারতীয় রেলের ৩ লক্ষ ১২ হাজার শুন্যপদ রয়েছে। এই শুন্যপদের প্রায় পুরোটাই নন গেজেটেড শ্রেণীর। তথ্য বলছে এই নন গেজেটেড শুন্যপদের মধ্যে গ্যাংম্যানের পদও রয়েছে। 

ইয়েচুরি প্রশ্ন তোলেন, গ্যাংম্যানের কাজ কি? তাঁরা রোজ পরীক্ষা করে দেখেন, রেললাইন এবং সিমেন্টের পাটাতনের মধ্যে সংযোগকারী বোল্ট সঠিক ভাবে লাগানো আছে কিনা। রেল দুর্ঘটনা রোধের ক্ষেত্রে এই পদের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু তারপরেও কয়েক হাজার গ্যাংম্যানের পদ দীর্ঘদিন ধরে খালি পড়ে রয়েছে। 

সীতারাম ইয়েচুরি আরও বলেন, ২০১৭ সালে মোদী সরকার একটি টাস্ক ফোর্স গঠনের কথা বলেছিল। সেই টাস্ক ফোর্স গঠিত হয় ট্র্যাক রিনিউয়াল বা রেল লাইন মেরামতের কাজ পর্যবেক্ষণের জন্য। এই টাস্ক ফোর্স রিপোর্ট জমা দেয়, এবং রিপোর্ট অনুযায়ী, লাইন রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতির পরিমাণ যথেষ্ট নয়। 

ইয়েচুরি এদিনের ভিডিও বার্তায় বলেছেন, মজার বিষয়, এই রিপোর্ট আসার পরেও ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের বাজেটে লাইন মেরামতের জন্য বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ ১৪ শতাংশ কমিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। অর্থাৎ ইচ্ছাকৃত ভাবে যাত্রী সুরক্ষার সঙ্গে আপোষ করা হয়। 

তিনি বলেন, দুর্ঘটনার ১ দিন আগে, অর্থাৎ ৩১ মে হিন্দু সংবাদপত্রে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেই প্রতিবেদনে স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরা হয়, ভারতীয় রেলের যাত্রী সুরক্ষার প্রশ্নে কোথায় কোথায় ঘাটতি রয়েছে। দেশের সাধারণ মানুষের স্বার্থে এই খামতি গুলি পূরণের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু সিবিআই তদন্তের নামে এই সবটাকে যদি আড়াল করা হয়, কোনও ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব সামনে আনা হয়, তাহলে তা ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত ভয়ঙ্কর হতে চলেছে। 

সংবিধান অনুযায়ী, ভারতীয় রেলের সমস্ত দুর্ঘটনার তদন্ত করার কথা রেলওয়ে সুরক্ষা কমিশনারের। তিনি বলেন, সেই তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই সিবিআই তদন্তের কথা হাওয়ায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরফলে স্বাভাবিক নিয়মেই রেলের তদন্ত অসম্পূর্ণ থাকবে। এবং তা দেশের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর। 

তিনি  দাবি জানান, এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত, এবং যাত্রী সুরক্ষার যাবতীয় ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে। আসল বিষয়গুলি থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা কখনোই দেশের ভালোর জন্য হতে পারে না। 

Comments :0

Login to leave a comment