SKM Rally

সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার রাজ ভবন অভিযান

কলকাতা

২৬ নেভেম্বর সংবিধান দিবসে কেন্দ্রের কৃষক বিরোধী নীতি এবং একই সাথে এই রাজ্যের তৃণমূল সরকারের কৃষকের প্রতি বঞ্চনামূলক মনোভাবের বিরুদ্ধে রাজভবন অভিযান। সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা (Samyukt Kisan Morcha)। উদ্দেশ্য, রাজ্যপালের মারফত দেশের রাষ্ট্রপতির কাছে কেন্দ্রীয় কৃষি নীতির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং রাজ্যস্তরীয় কৃষি নীতির বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা। 

এদিন সারা দেশে হয় রাজভবন অভিযান।

সংযুক্ত মোর্চার তরফে এদিন কলকাতার রানী রাসমণি রোডের সমাবেশ থেকে , এমএসপি (MSP) আইন প্রণয়ন, বিদ্যুৎ বিল ২০২০ বাতিল, শহিদ কৃষকদের এবং লখিমপুরে নিহত সাংবাদিকের পরিবার পিছু ক্ষতিপূরণ প্রদান, কৃষকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার সহ দেশের কৃষিজীবী মানুষের একগুচ্ছ দাবি সনদ তুলে দিতে যান কৃষক নেতৃবৃন্দ। তাঁরা জানান এই দাবিগুলির বিষয়ে কেন্দ্র লিখিত আশ্বাস দিলেও তা কার্যত ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে দেওবা হয়েছে। পাশাপাশি, ইতিপূর্বেই মোর্চার তরফে এই রাজ্যে সরকারের কাছে এমএসপি আইনের যে খসড়া বিল প্রেরণ করা হয়েছিল সেটাও ১৩ মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেছে অথচ রাজ্য সরকার চুপ। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের বিধানসভায় যাতে তা পেশ করে আইন হিসেবে বাস্তবায়িত হয় সেই ব্যাপারেও রাজ্যপালের মাধ্যমে রাজ্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন তাঁরা।


এদিন মোর্চা নেতৃত্ব অভিযোগ করেন, কৃষকের প্রতি কেন্দ্র এবং রাজ্যের মনোভাবে কোনো তফাৎ নেই। একদিকে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি ( kisan samman nidhi) প্রকল্পের নামে সম্পূর্ণ ভাঁওতা দিচ্ছে কেন্দ্র, অন্যদিকে কৃষক দরদি পরিচয় দেওয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারও কৃষি নীতির প্রশ্নে চুপ। সমাবেশ থেকে কৃষক নেতা অমল হালদার জানান, সাড়ের দাম কমাতে, কৃষকদের ন্যায্য দাম দিতে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না রাজ্য সরকার। শনিবার রাণী রাসমণি রোডে সংযুক্ত কৃষক মোর্চার সমাবেশ থেকে রাজ্য সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন সারা ভারত কৃষক সভার রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার। 

তিনি বলেন, ‘‘আমরা বলছি না সরকারি পরিসংখ্যান বলছে শুধু মাত্র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ফসলের দাম না ১২২ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছে। গোটা রাজ্য জুড়ে বহু কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু কোন কৃষক পরিবারের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি রাজ্য সরকার। সারা বছর ধরে চাষ করে লোকসান করে মাত্র ১৩০০-১৪০০ টাকায় কৃষককে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে।’’ এদিনের সভায় হালদার বলেন, ‘‘বার বার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আমরা দাবি জানিয়েছি মাঝারি এবং ছোট কৃষকদের জন্য মাসিক ৫০০০ টাকা পেনশনের ব্যবস্থা করার।’’
সমাবেশ থেকে অন্যান্য নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন কৃষিতে লাভ না থাকায় দেশজুড়ে বাড়ছে অনাবাদী জমি। সামান্য ধানের বিনিময়ে অন্য কাউকে চাষ করতে দিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা। সরকারি সহায়তা না পাওয়ায় মাইক্রো ফিনান্সের পাঁদে জড়িয়ে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। আরেকদিকে চাষাবাদ ছেড়ে অসংগঠিত শ্রমিকে পরিণত হতে হচ্ছে তাঁদের।  
এদিনের সমাবেশ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, কেন্দ্র-রাজ্য অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি তাঁদের দাবি দাওয়া পূরণ না করলে বৃহত্তর আন্দোলেনর পথে হাঁটবেন কৃষক নেতৃবৃন্দ।

Comments :0

Login to leave a comment