চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনে পুলিশের অত্যাচার নতুন নয়। আগেও আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের মারধর, লাঠিচার্জ করতে দেখা গেছে পুলিশকে। কিন্তু বুধবার সমস্ত সীমা লঙ্ঘন করে যেতে দেখা যায় পুলিশকে। এক মহিলা আন্দোলনকারীকে কামড়ে দেন এক পুলিশ কর্মী। ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায় মহিলা আন্দোলনকারীকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। কিন্তু এক মহিলা পুলিশকর্মী রীতিমত দৌড়ে গিয়ে ওই আন্দোলনকারীর হাতে কামড় বসিয়ে দেয়। পরবর্তী সময়ে আক্রান্ত ওই আন্দোলকারী মহিলা একটি ভিডিও শেয়ার করেন। সেখানে তিনি জানান তাঁকে থানায় আটক করে রাখা হয়েছে।
এদিন আন্দোলনে পুলিশের অত্যাচার প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে পুলিশ যদি পুলিশের কাজ করত তাহলে লুঠেরারা ধরা পড়ত। টাকা যারা লুঠ করেছে, চুরি করেছে চাকরি যারা বিক্রি করেছে তারা ধরা পড়ত। পুলিশ পুলিশের কাজ করছে না। তৃণমূলের নেতাদের পোষা গুণ্ডায়য় পরিণত হয়েছে, দালালে পরিণত হয়েছে। তৃণমূল নেতাদের ঘিরে রাখা যদি পুলিশের একমাত্র কাজ হয় তাহলে মানুষ মেনে নিতে পারে না। শিক্ষার্থী, পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এই আক্রমণ মানুষ কখনও মেনে নিতে পারবে না।’’
চাকরিপ্রার্থী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে এহেন আক্রমণের প্রতিবাদে বুধবার সন্ধ্যায় মোমবাতি মিছিল হয় শিয়ালদহ চত্বরে। আন্দোলনকারীদের হাতে মোমবাতি নিয়ে মিছিল করতে দেখা যায়। শিয়ালদহ অঞ্চলে যথেষ্ট সক্রিয় ছিল পুলিশ।
বুধবার দুপুরে টেট চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে রবীন্দ্র সদন মেট্রো স্টেশনে মোড়ে। চাকরির দাবিতে ২০১৪ সালে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় সফল প্রার্থীরা রাস্তা অবরোধ করেন। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় দফায় দফায়। বিক্ষোভকারীদের আটক করে জোর করে প্রিজন ভ্যানে তুলতে থাকে পুলিশ। মেট্রো স্টেশন থেকে কেউ বেরলেই ‘সন্দেহভাজন’ মনে করে তাঁদেরও আটক করা হয় বলে অভিযোগ। চাকরিপ্রার্থীদের অনেককে প্রিজন ভ্যানে তুলে গাড়ি নিয়ে এগতে গেলে অন্যান্য চাকরিপ্রার্থীরা গাড়ির চাকার নিচে শুয়ে পড়েন। ভ্যানের নিচে শুয়ে পড়া চাকরি প্রার্থীদের টেনে হিঁচড়ে বার করে আনতে থাকে পুলিশ। পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তিতে অনেক চাকরি প্রার্থীই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। এমনকি কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীকে রক্তাক্ত হতেও দেখা যায় সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত ছবিতে।
Comments :0