প্রতীম দে
‘‘জনতাকে জেগে থাকতে হবে। দোষীদের কঠিন শাস্তি আদায় করে আনতে হবে। বিচারের প্রক্রিয়া যারা আটকাচ্ছে তাদেরকে চিনে নিতে হবে। সবাইকে শাস্তি দিতে হবে। না হলে আন্দোলন চলবে।’’
শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়ে একদিকে পুলিশ আরেকদিকে বামফ্রন্টের কর্মী সমর্থকদের বিশাল বাহিনী। এর আগে ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়েছে মিছিল। বিচারের দাবিতে মিছিলে আসা বামফ্রন্ট কর্মীরা বসে পড়লেন রাস্তার ওপরেই। রাস্তাতেই বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনিই বলেছেন একথা।
তিনি বলেছেন, ‘‘আরও কিছুক্ষণ অবস্থান হবে। পুলিশ মিছিল আটকাতে চেয়েছিল। মানুষ বিচার চাইছেন। মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভা অধিবেশন ডেকে তামাশা করছেন। পুলিশ কেন হাসপাতালে হামলা আটকাতে পারল না আগে তার জবাব দিতে হবে। বাধা কেবল দেওয়া হচ্ছে প্রতিবাদীদের।’’
সেলিম বলেন, ‘‘বিনীত গোয়েল কলকাতার পুলিশ কমিশনারের পদ ছাড়লে মানুষ শান্তি পাবেন। সন্দীপ ঘোষ তো কান, মাথা ধরে টানতে হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘ কোনও ব্যারিকেডকে মানুষ ভয় পায় না। মেয়েটার রক্তের দাগ পুলিশের গায়ে লেগে আছে।’’
সেলিম বলেন, ‘‘প্রতিদিন মানুষ রাত জাগছে, পথে নামছেন। যারা এই প্রতিবাদে আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন তাঁদের লাল সেলাম। চিকিৎসকে যে ভাবে ধর্ষণ করা হলো, প্রমাণ লোপাট করা হলো তৃণমূলের লোকদের এনে। কালীঘাটের নির্দেশে আত্মহত্যা বলে চালানো হয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘সন্দীপ ঘোষকে ডাক্তার বলতে লজ্জা করে। তাঁরাই চিকিৎসক যাঁরা লালবাজার অভিযান করছেন। জুনিয়র চিকিৎসকরা রোগী দেখছেন আবার আন্দোলনও করছেন।’’
তিনি বলেন, ‘‘লড়াই পুলিশের বিরূদ্ধে নয়। কিন্তু যখন ধর্ষণ হয় তখন পুলিশ কী করে। বিনীত গোয়েলের আইপিএস ব্যাচ ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া উচিত। কামদুনি ধর্ষণ হত্যায় প্রমাণ লোপাট করেছেন তিনি। মমতার আমলে ধর্ষনের কোন শাস্তি হয়নি। তাদের আড়াল করছে কালীঘাট। আর উনি আইন দেখাছেন। বিধানসভা হোক বা সংসদ যারা অপরাধীদের শাস্তি দিতে পারেনা তখন বিচার ছিনিয়ে আনতে হয়। আমরা বিচার ছিনিয়ে আনতে এসেছি।’’
আমরা সবাইকে আহ্বান দিয়েছিলাম পথে নামার মানুষ নেমেছেন। দেহ যখন লোপাট করছিল বামপন্থী কর্মীরা প্রাণকে বাজি রেখে সেই চক্রান্ত আটকায়। হাথরসে বিজেপি-ও এভাবেই দেহ লোপাট করেছিল, পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দিয়েছিল।’’
এদিন মিছিল ঘিরে জনতার সাড়া ছিল একেবারেই অন্য মাত্রার। বাড়ির বারান্দায় বারান্দায় ভিড়। পথচলতি মানুষ দাঁড়িয়ে পড়ছেন। স্লোগানের তালে হাততালি দিয়ে সাড়া দিচ্ছে সারি করে দাঁড়িয়ে থাকা মহিলারা, চোখে পড়েছে এমন দৃশ্যও।
Comments :0