17th all india conference citu

আজ শুরু সিআইটিইউ সর্বভারতীয় সম্মেলন

জাতীয় রাজ্য

17th all india conference citu বেঙ্গালুরুর গায়ত্রী বিহারে রঞ্জনা নিরুলা ও রঘুনাথ সিং মঞ্চ এবং শ্যামল চক্রবর্তী নগরে সিআইটিইউ সর্বভারতীয় সম্মেলনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ছবি: রবীন গোলদার


তথ্য প্রযুক্তির শহর, ভারতের ‘সিলিকন ভ্যালি’ বলে পরিচিত বেঙ্গালুরুতে বুধবার শুরু হচ্ছে সিআইটিইউ’র ১৭তম সর্বভারতীয় সম্মেলন। শুধু তথ্য প্রযুক্তিই নয়, কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুকে ঘিরে চারপাশে মাথা তুলেছে নির্মাণ শিল্পও। পশ্চিমবঙ্গ সহ অন্যান্য রাজ্যেরও পরিযায়ী শ্রমিকদের এক ব্যাপক সংখ্যকের রুজি রোজগারের ঠিকানা এই অঞ্চলে। ব্যাপক শোষণ বঞ্চনার শিকার তাঁরাও। লকডাউন চলাকালীন পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি কর্ণাটকের বিজেপি সরকারের  শ্রমিকবিরোধী মনোভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে শ্রমিকদের বাস্তব অভিজ্ঞতাতেই।

বহু শ্রমিক কাজ খুইয়েছেন, হেঁটে ফিরতে গিয়ে অনাহারে অনেক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। কোনও হেলদোল ছিল না রাজ্যের বিজেপি সরকারের। মৃত শ্রমিকের সম্পর্কিত কোনও সঠিক তথ্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও মেলেনি বলে অভিযোগ। শ্রমিকদের বক্তব্য, আগামী দিনে সমস্ত হিসাব নিকেশ বুঝে নেওয়া হবে। সিআইটিইউ সম্মেলন তাঁদের কাছে বাড়তি অনুপ্রেরণার উৎস হিসাবে কাজ করছে।
কেন্দ্র ও বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিক্রিয়াশীল শাসক দলের শ্রমিকবিরোধী নীতি, শোষণ, বঞ্চনা এবং পুঁজিপতি তোষণের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ তীব্রভাবে ধ্বনিত হবে সিআইটিইউ সর্বভারতীয় সম্মেলনে। 
সিআইটিইউ সাধারণ সম্পাদক তপন সেন মঙ্গলবার বলেন, শ্রমিকরাই এই সম্মেলনের উৎসস্থল। সম্মেলনে শ্রমিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণই শুধু নয়, অর্থসংগ্রহ থেকে প্রস্তুতি, পতাকা ফেস্টুন নিয়ে সুসংহত মিছিল, পতাকা লাগানো, সাজিয়ে তোলা সবটাই শ্রমিকদের পরিশ্রম ও অবদানের ফসল। সংগঠিত এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকরা লড়াই সংগ্রামের ময়দানে রয়েছেন। সিআইটিইউ’র ছাতার তলায় বিভিন্ন সংগঠন রয়েছে। আগামী দিনে সেই সব সংগঠনগুলি আরও বেশি শক্তিশালী ও সক্রিয় হয়ে উঠবে— এই সম্মেলনের মাধ্যমে সেই বার্তাই উঠে আসবে।


সিআইটিইউ’র অন্যতম সম্পাদক কে এন উমেশ এদিন বলেন, আধুনিক উৎপাদনমূলক ক্ষেত্রগুলি, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র বা আইটি সেক্টরগুলিও এখন সিআইটিইউ’র আওতায় এসেছে। বিশেষ করে তথ্য প্রযুক্তির শহর বেঙ্গালুরু। ফলে এখানে সম্মেলনের আয়োজনের একটা গুরুত্ব রয়েছে। আরও একটা উল্লেখযোগ্য দিক হলো কর্ণাটকে বর্তমানে সাম্প্রদায়িকতা মাথাচাড়া দিয়েছে। বিভিন্ন উৎসবে, মেলায় মুসলিমদের অংশ নেওয়ার নানা বিধিনিষেধ কায়েমের চেষ্টা হচ্ছে। এই সম্মেলন জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত অংশের শ্রমিকদের আরও ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী করার প্রয়াস নেবে।


রঞ্জনা নিরুলা ও রঘুনাথ সিং মঞ্চ এবং শ্যামল চক্রবর্তী নগরে সিআইটিইউ সর্বভারতীয় সম্মেলন উপলক্ষে সেজে উঠেছে বেঙ্গালুরু শহর। বুধবার লাল পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে সম্মেলনের কাজ। পতাকা উত্তোলন করবেন সিআইটিইউ সভাপতি কে হেমলতা। প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখবেন সিআইটিইউ সাধারণ সম্পাদক তপন সেন। বেঙ্গালুরু শহরজুড়েই অসংখ্য লাল পতাকা এক দুর্দম আন্দোলনের প্রতীক হয়ে জানান দিচ্ছে সেই প্রস্তুতি ও আয়োজন ইতোমধ্যেই সম্পূর্ণ। মোট ১৫০০ প্রতিনিধি অংশ নেবেন সম্মেলনে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে উপস্থিত ২৪২ জন প্রতিনিধি।
শুরুতে থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং রেড ভলান্টিয়ারদের গার্ড অব অনার। স্বাগত ভাষণ দেবেন অভ্যর্থনা কমিটির চেয়ারম্যান কে সুব্বা রাও। সম্মেলনকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখবেন ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পামবিস কাইরিটসিস। সিআইটিইউ’র সর্বভারতীয় সম্মেলন উপলক্ষে গোটা দেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও গত কয়েকদিন ধরে মিছিল সভায় এবং নিয়েছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের সংগঠিত ও অসংগঠিত শ্রমিকরা। সম্মেলনকে ঘিরে বাড়ছে আগ্রহ ও উদ্দীপনা।


সম্মেলনকে সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন শ্রমিক আন্দোলনের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ। সম্মেলনকে ঘিরে  উৎসাহ ও উদ্দীপনা তুঙ্গে। তাঁদের সোচ্চার দাবি, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের নীতি নতুন শ্রম কোড বাতিল করতে হবে। রুখতে হবে বিভাজনের নীতি। সম্মেলন উপলক্ষে গোটা কর্ণাটকে সমস্ত ক্ষেত্রে শ্রমিকরা তাঁদের একদিনের মজুরি দিয়েছেন। এলাকা ভিত্তিতে সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি তাঁরা গিয়েছেন ওই অর্থ সংগ্রহে।

Comments :0

Login to leave a comment