Birbhum Cow Rescue

বীরভূমে পাচারের চক্র চলছে বহাল তবিয়তেই, বিপুল সংখ্যায় গোরু আটক

রাজ্য

বীরভূমে আটক হওয়া গোরু। ছবি রণদীপ মিত্র।

রণদীপ মিত্র- বীরভূম

যখন দিনরাত এক করে বেমালুম পাচার হয়ে যেত গোরু তখন পুলিশ ছিল ঠুঁটো। জেলা রাজ্যের সীমানা ছাড়িয়ে লরি, ডাম্পার, ট্রেলারে করে গোরু পার হয়ে যেত দেশের সীমান্ত। আর পাচারের রাস্তা নিরপদ্রুপ রাখার জন্য চক্রের মাফিয়ারা শাসকদলের নেতা থেকে শুরু করে পুলিশ, প্রশাসনের কাছে পৌছে দিত মাসোহারা। কোথাও দেখা যায় নি পুলিশকে টু শব্দ করতে। সিবিআইয়ের ধাক্কায় বেসামাল হতেই এতদিন খানিকটা সক্রিয়তা দেখাচ্ছে পুলিশ। মাঝে মাঝে পুলিশ গোরু আটকের খবর দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে পাচার বিরাট জাল বিছানো পাচার চক্র বন্ধ হয়েছে ? ওয়াকিবহাল মহলের মত, গোরু পাচারের চক্র চলছে বহাল তবিয়তেই। মাঝে মাঝে পুলিশ হয়ত ধরছে। তবে তার থেকে ঢের বেশি পাচার হয়ে যাচ্ছে অনায়াসে। অবশ্যই ‘রাস্তা খরচ’ ও মাসোয়ারা দিয়ে নজরদারদের সন্তুষ্ট করেই। পাচার চক্রের রমরমার নমূনা মিলছে ফের বিপুল সংখ্যায় গোরু আটকের ঘটনায়। ৪০৯ টিগরু আটক করেছে পুলিশ। বীরভূমের দুই প্রান্তে দু শতাধিক করে গোরু আটক করা হয়েছে।
জানা গেছে, রবিবার রাত্রে বীরভূমের রামপুরহাট থানার পাইকপাড়াও কুসুমডৈ গ্রাম থেকে ২০৮টিগোরু আটক করেছে পুলিশ। অন্যদিকে নলহাটি থানার সন্তোষপুর গ্রামের পাশে শালবন থেকে ২০১টি গোরু আটক করা হয়েছে। গোরুগুলি ঝাড়খণ্ড থেকে নিয়ে আসা হচ্ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। বৈধকোন কাগজ পত্র ছিল না গোরুগুলির। যদিও গরু ব্যবসায়ীদের দাবি, বীরভূম লাগোয়া ঝাড়খন্ডের সারাসডাঙ্গা গ্রামের পশুহাট থেকে গোরুগুলি কিনে বীরভূমের রামপুরহাট ওনলহাটির পশুহাটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে গোরু বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ঋকদা এই গোরু পাচারচক্রের মদতদাতা ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলাসভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। যিনি আজ তিহার জেলে। তারপরেও কিন্তু গোরু পাচার যে বন্ধ হয়ে গিয়েছে তা নয়। হয়ত খানিকটা লাগাম পড়েছে। খুল্লামখুল্লা বেপরোয়া যে পাচার চলত তাতে খানিকটা রাশ পড়েছে। তবে গোরুর কারবার যে বন্ধ হয় নি তা নিশ্চিত। এবং কারবারের পেছনে তোলাবাজিও জারি আছে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
লোক দেখাতে আটক চলছে মাঝে মাঝে। তবে আসল রাঘব বোয়ালদের উপর কতটা আঁচ পড়ছে তা জানা নেই কারো। বরং ছোট খাটো গোরুর পাইকেরদের দিতে হচ্ছে পুলিশের ‘সক্রিয়তা’ জাহিরে খেসারত বলেই অভিযোগ বিরোধীদের। যেমন সিপিআই(এম) নেতা সঞ্জীব বর্মণের বক্তব্য, ”ক্ষুদ্র গোরু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কয়েকটি গরু আটক করে পুলিশ পাচার চক্রকে আড়াল করতে চাইছে। আড়ালে লরিতে লরিতে হাজার হাজার গোরু পাচার হয়ে যাচ্ছে। চক্রের পান্ডারা বহাল তবিয়েত কাঁচা টাকা কামিয়ে যাচ্ছে নির্দিষ্ট মাসোয়ারার বিনিময়ে।’’
 

Comments :0

Login to leave a comment