Farmers Dhupguri

ফড়েদের দৌরাত্ম্য, ধূপগুড়িতে কৃষক বিক্ষোভ

জেলা

ফসলের দাম না পেয়ে পথ অবরোধ লঙ্কা চাষিদের। জাতীয় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নামলেন কৃষকরা। সোমবার সাত সকালে রীতিমতো জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন লঙ্কা চাষিরা। উত্তেজনা ছড়াল ধূপগুড়িতে। দেখা মেলেনি মহকুমা প্রশাসনের কোনো আধিকারিকের, নেই কৃষি দপ্তরের কেউ।
এদিন সকালে কৃষি নিয়ন্ত্রিত বাজারে কৃষক তার উৎপাদিত লঙ্কা বিক্রি করতে এলে মাথায় হাত পড়ে যায়। গত শনি ও রবিবারের বাজার দরের তুলনায় দাম অনেকটাই কম বলছেন পাইকাররা। হঠাৎ এমন কি ঘটলো ধরতে পারেননি কেউ। ফড়েদের দৌরাত্ম্যে ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না কৃষকরা এমনটাই অভিযোগ তাঁদের। আর লঙ্কা চাষের পর্যাপ্ত দাম না পেয়ে ধূপগুড়ি থেকে ফালাকাটাগামী ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান কৃষকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে ধূপগুড়ি থানার আইসি সুজয় তুঙ্গা, ট্রাফিক ওসি পিবি লামা সহ পুলিশবাহিনী।
কৃষকদের অভিযোগ, উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে সুপার মার্কেটে(কৃষি নিয়ন্ত্রিত বাজার) নিয়ে আসছেন তাঁরা। যে লঙ্কা রবিবারও পাইকারিভাবে ২৫ থেকে ২৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, তা আজ ১৬-১৭ টাকা দাম বলছে ফড়েরা। গুটিকয়েক ফড়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অভিযোগ তাদের। সেই দিকে নজরদারি নেই প্রশাসনের। তাই কৃষকরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিক্ষুব্ধ কৃষক পুষ্পজিত রায়, দীপক রায়, সাইদুল ইসলাম বলেন, “পাইকাররা প্রথমে বলছেন ২৫ টাকা ৩০ টাকা। এখন ১৮-২০ টাকা বলছে। এই পাইকারদের জন্যই এত সমস্যা হচ্ছে। স্থানীয় কিছু ফড়ে এবং পাইকার ইচ্ছা করে দাম কমাচ্ছে। আমাদেরকে বিপদে ফেলতে। যাতে বাধ্য হয়ে আমরা কম দামে লঙ্কা বিক্রি করি। প্রশাসনের কোন আধিকারিকদের দেখা মেলে না যখন আমরা ন্যায্য দাম পাই না।”
বিক্ষোভকারী এক কৃষক মহম্মদ আলীমুদ্দিন বললেন, “রবিবারের থেকেও কম লঙ্কা বিক্রি হচ্ছে। কেউ মাল কিনছে না। একজন পাইকার কিনতে এসেছিলেন। তবে অন্য আর একজন এসে তাঁকে টেনে নিয়ে চলে গেল। ওরা আমাদের সঠিক দাম দিচ্ছে না।”
এরপর সোমবার সকালে লঙ্কা চাষিরা যখন ধূপগুড়ি সুপার মার্কেটে তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে আসেন তখন জানতে পারেন লঙ্কার দাম অনেক কম। এই নিয়ে ফোরে ও কৃষকদের মধ্যে বাদানুবাদ শুরু হয়। এরপর কৃষকেরা একত্রিত হয়ে জাতীয় সড়কে প্লাস্টিক  পেতে বসে অবরোধ করেন। ঘটনার জেরে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয় শহরে। খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছন ধূপগুড়ি থানার পুলিশ। কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করে অবরোধ তুলে দেয় পুলিশ। 
শহরের অনেক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমরা খুচরো কিনতে গেলে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিপ্রতি কিনতে বাধ্য হই। সেখানে উৎপাদক কৃষককে এত কম দাম দিয়ে তাদের সর্বনাশ  করা হচ্ছে। ফড়ে রাজ কাটমানি খাওয়ার রাজ বন্ধ করা দরকার। এখন শহরে মহকুমা প্রশাসন  আছে তাদের উচিত নিয়মিত ভাবে কৃষকদের স্বার্থ এবং সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষা করা। কৃষি দপ্তর নিস্ক্রিয় থাকলে কৃষকদের ক্ষতি হবে’’।

Comments :0

Login to leave a comment