Anubrata Mondal Lottery

লটারির টিকিট না কেটেই জিতে নেন প্রথম পুরস্কার!

জেলা

এতদিন তালিকায় ছিল চালকল, বিপুল জমি আর বিএড-ডিএলএড কলেজের কারবার। এবার সেই তালিকাতে জুড়ল ‘লটারি’ও! গোরু পাচারের ‘প্রোটেকশন মানি’ বাবদ প্রাপ্য কালো টাকা সাদা করার কারবারে অনুব্রত মণ্ডল কি শিখণ্ডী করেছিলেন ‘লটারি’কেও ? 
সিবিআই’র দিনভর তৎপরতা সেই আশঙ্কাকেই জোরালো করেছে। পাশাপাশি অনুব্রত মণ্ডলের একদা একান্ত ঘনিষ্ট আরও এক তৃণমূল নেতাকে প্রথমবারের জন্য জেরার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। 
গোরু পাচার মামলার তদন্তে ‘লটারি’ যোগ এই মুহূর্তে উল্লেখযোগ্য সংযোজন বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। চলতি বছরের গোড়ার দিকে ‘ডিয়ার’ নামে এক লটারি সংস্থার ওয়েবসাইটে অনুব্রতর ১ কোটি টাকার লটারি জেতার বিজ্ঞাপন ফলাও করে বেরিয়েছিল ছবি সহ। শোরগোল পড়ে গিয়েছিল তা নিয়ে। অনুব্রতকে নানা সময়ে লটারি প্রাপ্তি নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে অনুব্রত এড়িয়ে যেতেন। উলটে হেঁয়ালি করতেন। 
এগারো মাস আগের সেই পর্বই এবার চলে এসেছে গোরু পাচার মামলার চর্চায়। শুক্রবারই সিবিআই হানা দেয় বোলপুরের এক লটারি এজেন্সিতে। ডেকে পাঠানো হয় মালিককে। বোলপুর বাইপাসের ধারে থাকা লটারি এজেন্সির মালিক সেখ আইনুল হাজিরা দেন সিবিআই’র ডাকে। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে বলেন, ‘‘যে লটারির কথা বলা হচ্ছে তার সব নথি নিয়ে এসেছি। আমিই মূল এজেন্সি। আমি টিকিটটি বিক্রি করেছিলাম লাকি লটারি নামে এক সাব এজেন্টকে। সে কাকে বিক্রি করেছিল, কেই বা লটারির টাকা ভাঙিয়েছিল তা বলতে পারব না।’’ ডাক পড়ে সেই সাব এজেন্টেরও। তিনিও জানান, ‘‘অনুব্রত টিকিট কাটেননি। লটারি প্রাপ্তির টাকা আমার কাছে ভাঙাতেও আসেনি কেউ।’’ লাকি লটারি টিকিট বিক্রি করেছিল জনৈক মুন্না সেখকে। এই ব্যক্তিও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার জেরার মুখে পড়তে পারে বলে জানা গিয়েছে।
স্বাভাবিক প্রশ্ন, অনুব্রত লটারি কাটেননি দাবি করছেন দুই এজেন্টই। আবার লটারি সংস্থার ওয়েবসাইটে লটারি প্রাপ্তি বিজ্ঞপ্তি অনুব্রতর ছবি সহ প্রকাশিত হয়েছে। তাহলে নির্বাচিত হওয়া লটারির টিকিটটি নিজের হেপাজতে নেওয়ার ‘খেলা’ই কি হয়েছে কালো টাকা সাদা করার উদ্দেশ্যে? সেই রহস্যভেদেই তৎপর হয়েছে সিবিআই। তাই একদিন আগেই বোলপুর সব থেকে বড় ‘গাঙ্গুলি লটারি’র মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ বলছে, ‘কালো টাকা সাদা করাই যায়। কেউ হয়তো এক কোটি টাকা পেল লটারিতে। সরকারি কর বাদ দিয়ে সে হয়তো হাতে পাবে ৭৫-৭৮ লক্ষ টাকা। তাকে যদি আরও পাঁচ সাত লক্ষ টাকা বেশি দিয়ে টিকিটটা হাতিয়ে নেওয়া যায় তাহলে লটারির টিকিটের প্রাইজ বাবদ প্রাপ্য টাকাটাই সাদা হয়ে যাবে।’’ 
অপরদিকে এদিন ইলামবাজারের অনুব্রত ঘনিষ্ট অপর এক তৃণমূল নেতাকে প্রথমবারের জন্য ডেকে পাঠায় সিবিআই। তিনি জাফারুল ইসলাম। ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ছিলেন ইলামবাজারের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। বর্তমানে পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ। জাফারুল ইসলামকে জেরা করলে ২০১৩ থেকে ২০১৬ পর্বে গোরু পাচারের কারবারের অনেক না জানা তথ্য প্রকাশ হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। 
এদিন ফের কেরিম খানকে জেরা করা হয়। একদিন আগেই নিজাম প্যালেসে সিবিআই’র মুখোমুখি হয়ে এসেছিলেন কেরিম খান। কলকাতা থেকে ফিরে পরদিনই বোলপুরে ফের তাঁকে ডেকে আরও এক প্রস্থ সংক্ষিপ্ত জেরা করেছে সিবিআই।

Comments :0

Login to leave a comment