BOOK REVIEW \ AKHSAYA KUMAR DUTTA — GOUTAM GANGOPADHAYA \ MUKTADHARA \ 22 NOVEMBER 2024

বই \ বাংলায় বিজ্ঞানের দর্শন প্রচারক অক্ষয়কুমার : গৌতম গঙ্গোপাধ্যায় \ মুক্তধারা \ ২২ নভেম্বর ২০২৪

সাহিত্যের পাতা

BOOK REVIEW   AKHSAYA KUMAR DUTTA  GOUTAM GANGOPADHAYA   MUKTADHARA  22 NOVEMBER 2024

বই

বাংলায় বিজ্ঞানের দর্শন প্রচারক অক্ষয়কুমার 
গৌতম গঙ্গোপাধ্যায়

মুক্তধারা


বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির ইতিহাসে যে নাম অবিস্মরণীয় হয়ে থাকা উচিত ছিল, দুঃখের কথা আমরা তাঁকে ভুলতে বসেছি।  
২০২০ সালে অক্ষয়কুমার দত্তের জন্মের দুশো বছর পূর্ণ হলো, হয়তো অতিমারী না থাকলে তাঁর অবদান নিয়ে এই  
উপলক্ষে আরও আলোচনা হতো। তাঁকে নিয়ে লেখা সাম্প্রতিক বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আশীষ লাহিড়ীর ‘অক্ষয়কুমার  
দত্ত আঁধার রাতের একলা পথিক’ এবং মুহম্মদ সাইফুল ইসলামের ‘অক্ষয়কুমার দত্ত ও উনিশ শতকের বাঙলা’। গত বছর  
কোরক সাহিত্য পত্রিকা অক্ষয়কুমারকে নিয়ে একটি সংখ্যা এবং জ্ঞান ও বিজ্ঞান পত্রিকা বিদ্যাসাগর ও অক্ষয়কুমারকে  
নিয়ে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছে  সেই তালিকাতে আর এক উল্লেখযোগ্য সংযোজন ডা. শঙ্করকুমার নাথের বই  
‘অক্ষয়কুমার দত্ত: বিজ্ঞান ভাবনার পথিকৃৎ’।
আলোচ্য বইটির নাম খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলা ভাষাতে বিজ্ঞান রচনাতে অক্ষয়কুমার নিঃসন্দেহে পথিকৃৎ, আগে দুএকটি  
বিজ্ঞান বিষয়ক বই প্রকাশিত হলেও ধারাবাহিকতা ও মানের দিক থেকে তাদের সঙ্গে অক্ষয়কুমারের লেখার তুলনাই চলে  
না। কিন্তু শুধুমাত্র সে কথা বললে উহ্য থেকে যায় তাঁর বিজ্ঞানমনস্কতা ও দর্শনচিন্তার কথা। বন্ধু ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের  
সঙ্গে তাঁর চিন্তাভাবনার আশ্চর্য মিল।
বিদ্যাসাগর এবিষয়ে তাঁর মত আলোচনাতে খুব একটা উৎসাহী ছিলেন না, তাঁর সেই সময়ও ছিল না। বাংলা ভাষাতে  
বিজ্ঞান বিষয়ক লেখা এবং বাংলাদেশে বিজ্ঞানের দর্শন প্রচারকে ব্রত হিসাবে নিয়েছিলেন অক্ষয়কুমার।
বইটির পিছনে পরিশ্রম ও গবেষণার ছাপ সুস্পষ্ট। সমকালের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে বিশ্লেষণ না করলে অক্ষয়কুমারের সম্যক  
মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়; আবার পরবর্তীকালকে তিনি কেমনভাবে প্রভাবিত করেছেন, তা জানাটাও জরুরি। স্বল্পায়ু  
বিদ্যাদর্শন পত্রিকার প্রকাশ থেকে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার সম্পাদনা হয়ে ‘ভারতবর্ষীয় উপাসক সম্প্রদায়’ রচনা পর্যন্ত  
অক্ষয়কুমারের বিজ্ঞান ভাবনা এক জায়গায় থেমে থাকেনি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিকশিত হয়েছে। অক্ষয়কুমারের মূল রচনা,  
সমসাময়িক পত্রপত্রিকাতে তাঁর সম্পর্কে আলোচনা, সমকালের জীবনীকার ও পরবর্তীকালের গবেষকদের রচনা থেকে দীর্ঘ  
উদ্ধৃতি দিয়ে তাঁর অবদানকে বিশ্লেষণ করেছেন লেখক। এসেছে বিদেশি বই আত্মস্থ করে দেশের মানুষের উপযোগী করে  
লেখার কথা, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বিরোধের প্রসঙ্গ এবং জীবনের শেষ ক’বছর প্রচণ্ড অসুস্থতার মধ্যেও বিজ্ঞানচর্চার  
কথা। পুরানো সংবাদপত্র ও বইয়ের পৃষ্ঠার ছবিগুলিও আগ্রহ জাগায়।
বর্তমানের অপবিজ্ঞান, কুসংস্কার ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অক্ষয়কুমারের জীবন আলোকবর্তিকা হতে পারে। সেই সম্পর্কে প্রথম  
পাঠের অত্যন্ত উপযোগী এই বই।
অক্ষয়কুমার দত্ত
বিজ্ঞান-ভাবনার পথিকৃৎ। ডা. শঙ্করকুমার নাথ। অজিতা প্রকাশনী। ১০ডি/১এ বদ্রীদাস টেম্পল স্ট্রিট। কলকাতা—৭০০  
০০৪। ১৮০ টাকা

 

Comments :0

Login to leave a comment